আমাদের রামু রিপোর্ট:
ব্রিটিশ আমলে রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত গর্জনিয়া বাজার সিরাজীয়া জামে মসজিদের ভবনটি অতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোন সময় ওই ভবন ধ্বসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অথচ এই মসজিদের নামে রয়েছে শত কোটি টাকার সম্পদ। এত সম্পদ উপজেলার অন্য কোন মসজিদে নেই।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়-মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করছেন অনেক কষ্টে। জায়গার অভাবে শতাধিক লোক পুকুরের সিঁড়িতে আবার কেউ কেউ নামাজ আদায় করতে ফিরে যাচ্ছেন দূরের অন্য মসজিদগুলোতে। বৈদ্যুতিক পাখা সংকটের কারণে নিচতলা এবং দুতলার মুসল্লিদের শরীর থেকে অঝোরে ঘাম ঝরছে।

গর্জনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন-উপজেলার সবচেয়ে প্রাচীন এই মসজিদের সুনাম ক্রমাগত ক্ষুন্ন হচ্ছে। ব্যাপক সম্পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে মসজিদের উন্নয়ন হচ্ছে না। প্রতি জুমাবার দুতলার মুসল্লিরা সেজদায় গেলেই ভবনটা কেঁপে উঠে। আর এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন তারা।
কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন সিকদার ও স্থানীয় সূত্র জানায়-ঐতিহ্যবাহী সিরাজীয়া জামে মসজিদে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। এক শ্রেণির মানুষ তা নিয়ে বাণিজ্য করছে। কিন্তু মসজিদের উন্নয়নে কারও মাথাব্যথা নেই। পরিচালনা পর্ষদইবা কি করছে? তা এখন প্রশ্ন বোধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এখানে অচিরেই রানা প্লাজার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাজধানীর উপকন্ঠে সাভারে আট তলা ভবন (রানা প্লাজা) ধসে পড়ে এক হাজার ১৩৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় এবং আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ। যদি জুমাবারে গর্জনিয়া বাজার সিরাজীয়া জামে মসজিদের ভবন ধ্বসে পড়ে, তাহলে শত শত প্রাণহানি অপক্ষো করছে!

মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মোজাফ্ফর আহমদ আমাদের রামু কে বলেন,মসজিদের নামে মহা-মূল্যবান স্থানে ৬০টির অধিক দোকান ঘর, ১২কানি কৃষি জমিসহ নানা সম্পদ রয়েছে। যার মূল্য প্রায় শতকোটি টাকা।
জানতে চাইলে মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নিকারুজ্জামান আমাদের রামু কে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দু:খজনক। আমি রামুতে নতুন এসেছি। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ীর তৎকালিন ইনচার্জ আবদুল মান্নানের উদ্যোগে এবং এই অঞ্চলের বিশিষ্ট দানবীর সিরাজ উদ্দিন মিয়াজির জমি দানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠালাভ করে গর্জনিয়া বাজার সিরাজীয়া জামে মসজিদ। এর পর থেকে গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া ও পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির হাজার হাজার মুসল্লি এই মসজিদে নামাজ আদায় শুরু করেন।