হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, নিজস্ব প্রতিবেদক
আমাদের রামু ডটকম :
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ইউনিয়নের খাদ্যগুদামটি দীর্ঘ আড়াই যুগ ধরে বন্ধ থাকলেও চালুর উদ্যোগ নিচ্ছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে করে জনপ্রতিনিধিরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
আর এদিকে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ খাদ্যগুদামটি আড়াই যুগ ধরে পরিত্যক্ত থাকায় জনগণের কোনো কাজেই আসছেনা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন উপজেলা সদর, বাইশারী, দৌছড়ি, সোনাইছড়ি, ঘুমধুম ও রামু উপজেলার গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়ার দুর্গম অঞ্চলের পাহাড়ি জনপদের লোকজন ভিজিডি, ভিজিএফ, ও এমএসের বরাদ্দ চাল ও গম প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে লামা উপজেলার আজিজনগর, রামু এবং উখিয়া উপজেলার খাদ্যগুদাম থেকে সংগ্রহ করে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নাইক্ষ্যংছড়ি সফরে গেলে তার কাছে খাদ্যগুদাম প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন সেখানকার মানুষ।
উপজেলা সদরে জমি বরাদ্দ না পাওয়ায় পরে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম নুরুল হক বাইশারী সদরে প্রায় এক একর জমি বন্দোবস্তি করে কোটি টাকা ব্যয়ে ওই খাদ্যগুদামটি নির্মাণ করেন।
কয়েক বছর এ খাদ্যগুদামটি চালু থাকলেও অদৃশ্য কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় খাদ্যগুদাম থাকা সত্ত্বেও দূরের উপজেলা থেকে চাল সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্র দাবি করছে, দূর থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে পারলে জনপ্রতিনিধিরা তা অন্যত্র বিক্রি করে দিতে পারে বিধায় তাদের অসহযোগিতার কারণে এটি বন্ধ হয়ে যায়।
বিগত কয়েক বছর আগে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দিয়ে ওই খাদ্যগুদামটি দু’বার সংস্কারও করা হয়েছিল।
বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুল হক বলেন, নিজ এলাকার খাদ্যগুদামটি পরিত্যক্ত থাকায় দ্বিগুণ গাড়ি ভাড়া দিয়ে অন্য উপজেলা থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী গর্জনিয়া, ঈদগড়সহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাজার হাজার একর জমিতে ধান চাষ হচ্ছে। কিন্তু এসব ধান বিক্রির জন্য অনেক দূরে নিয়ে যেতে কৃষক অনীহা প্রকাশ করেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-আহবায়ক তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, উপজেলায় কার্যকর নিরবিচ্ছিন্ন খাদ্য শস্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই দীর্ঘ আড়াই যুগ ধরে বন্ধ থাকা বাইশারীর খাদ্যগুদামটি চালু করা একান্ত দরকার। কারণ সরকার ন্যায্য মূল্যে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে ধান কিনে এ পরিত্যক্ত গুদামে মজুত রাখলে কৃষকসহ সংশ্লিষ্ট সবই উপকৃত হবেন।
বাইশারী শাহনূর উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন খরা, দুর্ভিক্ষ এবং খাদ্য সঙ্কট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সফল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খাদ্যশস্যের স্থান নির্ধারণে খাদ্যগুদামটি ফের চালু করা এখন সময়ের দাবি।
এদিকে এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।