আমাদের রামু রিপোর্ট:
বেতন স্কেলের নিম্নধাপে নামিয়ে দিয়ে তিন বছরের লঘুদন্ড দেয়া হয়েছে কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক ও বর্তমানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপ-সচিব মো. রুহুল আমিনকে। প্রশাসনিক তদন্ত ও ব্যক্তিগত শুনানীতে অদক্ষতা ও আসদাচরনের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় শাস্তিস্বরূপ তাকে তিন বছরের জন্য বেতন স্কেলের নিম্নধাপে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। গত ১লা মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর স্বাক্ষরিত রুহুল আমিনকে দেয়া শাস্তি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আদেশে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, রুহুল আমিন কক্সবাজারের ডিসি পদে দায়িত্ব পালনকালে যাচাই-বাছাই ছাড়া প্রাক্কলন প্রস্তুত, ফিল্ডবুকের আদলে প্রস্তুতকৃত কাগজপত্রের দাগসূচি ও ৩ ধারার নোটিশের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ও দাগ খতিয়ান ছাড়া প্রস্তুতকৃত রোয়েদাদের মাধ্যমে বিধি-বহিভূর্তভাবে ক্ষতিপূরণ দেন। এ কারণে ক্ষতিপুরনের ১৯ কোটি ৮২ লাখ আট হাজার ৩১৪ টাকা পরিশোধের ক্ষেত্রে কড়া নজরদারির অভাবে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫-এর বিধি ৩ (এ) (৪) ও বিধি ৩ (বি) অনুযায়ী অদক্ষতা ও অসদাচরণের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। ২০১৫ সালের ২৮শে মে বিভাগীয় মামলায় তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। এর বিপরীতে ১লা জুলাই রুহুল আমিন লিখিত জবাব জমা দিয়ে ব্যক্তিগত শুনানির প্রার্থনা করেন। এরপর ১৫ই সেপ্টেম্বর তার ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভাগীয় মামলা ন্যায় বিচারের স্বার্থে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আইন কোষের যুগ্ম-সচিব আ.ন.ম. কুদরুত-ই-খুদাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা তার রিপোর্টে অভিযুক্ত মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ‘অদক্ষতা’ ও অসদাচরণ এর অভিযোগ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মতামত দেন। এ কারণে অভিযোগের গুরুত্ব এবং সার্বিক বিষয় পর্যালোচনায় সরকারি কর্মচারী বিধিমালার ৪(২)(ই) বিধি অনুযায়ী তাকে তিন বছরের জন্য বেতন স্কেলের নিম্ন ধাপে নামিয়ে দেয়া সংক্রান্ত লঘুদণ্ড দেয়া হয়। অর্থাৎ তার বর্তমান বেতন স্কেল ৫০,০০০-৭১২০০ এর সর্বনিম্ন ধাপ ৫০,০০০-তে তিন বছরের জন্য নামিয়ে দেয়ার দণ্ড দেয়া হয়েছে।
শাস্তি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের শেষ লাইনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে তিনি এর কোনো বকেয়া সুবিধা পাবেন না। উল্লেখ্য, দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে নির্মানাধীন কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহনের ক্ষতিপুরন প্রদানে দুর্নীতির অভিযোগ কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক মোঃ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। এর প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে তাঁকে বদলি করা হয়।