শহিদুল ইসলাম, উখিয়া।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরনার্থী শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত পুলিশের সোর্স নুরুল ইসলাম খুনের ৩ দিন অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ট আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা এ পর্যন্ত হত্যাকান্ডে সরাসরি নেতৃত্বদানকারী প্রধান অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী খাইরুল আমিনসহ অপরাপর কোন খুনিকে আটক করেনি পুলিশ।
এ ঘটনার পর থেকে কুতুপালং শরনার্থী শিবির অভ্যন্তরে সাধারণ শরনার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহত নুরুল ইসলামের পরিবারে শোকের আহাজারিতে শরনার্থী ক্যাম্পের আকাশ ভারী হয়ে উঠছে।
তাছাড়া নিহত নুরুল ইসলামের পরিবার সন্ত্রাসীদের হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে বলে তাঁর স্ত্রী লায়লা বেগম কান্না ভরা কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান।
এদিকে থানা পুলিশ নুরুল ইসলাম হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার দাবি করলেও খুনিরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় নিহতের পরিবারের মাঝে নানা সংশয় ও শংকা বিরাজ করছে।
নিহতের স্ত্রী লায়লা বেগম বলেন, ‘ডাকাত ও মানব পাচারকারী অস্ত্র মামলার আসামী খাইরুল আমিন ইতিপূর্বে আমার স্বামীকে আরেকবার খুন করার পরিকল্পনা করে ওই সময় আল্লাহর অসীম দয়ায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও বেঁচে যায়। ওইসময় ডিমান্ড মাঠের নিম গাছ তলায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রথম দফায় ৪/৫ রাউন্ড গুলি ছুড়লে আমার স্বামী গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত জখম হয়। র্দীঘদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে খুব অসহায়ভাবে জীবন-যাপন করতেন। খুনিদের ভয়ে কোনদিন বাড়ি থেকেও বের হওয়ার চেষ্টা করতো না। গত রোববার ডাকাত খাইরুল আমিনের নেতৃত্বে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে পানের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে থাকে লক্ষ্য করে ৪ রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয় আমার স্বামী। সন্ত্রাসীদের হুমকির ভয়ে এখনো থানায় মামলা দায়ের করতে যেতে পারছি না। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় থানায় মামলা করলে উল্টো আমার ২ শিশু সন্তানকেও পিতার পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে’।
ক্যাম্প চেয়ারম্যান ইমরান বলেন, রোহিঙ্গা শিবির থেকে অস্ত্রধারী ডাকাত, সন্ত্রাসী, অপরাধী, খুনি, অপহরণকারী, ছিনতাইকারী, মানবপাচার, ইয়াবা চোরাচালানী ও নারীশিশু পাচারকারী গডফাদার গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় পুরো রোহিঙ্গা শিবিরের আইন শৃংখলা ভেঙ্গে পড়ার পাশাপাশি চরম অবনতি ঘটছে। ফলে একের পর এক খুনসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে।
নিহত পুলিশের সোর্স নুরুল ইসলাম হত্যাকান্ডের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রহিম এখনো খুনিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু হওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
উখিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনা তদন্তের পর নিহতের পরিবার মামলা না করলে পুলিশের পক্ষ থেকে বাদী হয়ে এ হত্যা মামলা রুজু করা হবে।