সোয়েব সাঈদ, রামু।
রামুতে কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে চলছে এলজিএসপি-২ এর সড়ক নির্মাণ কাজ। ঘটনাটি ঘটেছে, রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বনবিহার এলাকায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্যার যোগসাজশে বড় ধরনের এ অনিয়মের ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আমিন উদ্দিন মনু আমাদের রামু ডটকম কে জানান, সম্প্রতি এলজিএসপি-২ এর আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে উত্তর মিঠাছড়ি এলাকায় অমিয় বড়ুয়ার বাড়ি হতে কমল বড়ুয়ার বাড়ি পর্যন্ত ব্রিক সলিন সড়ক নির্মাণ কাজের প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান এমএম নুরুচছাফা এলজিএসপি-২ এর আওতাধীন এ ব্রীকসলিন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি করেন, অভিযুক্ত মহিলা ইউপি সদস্য ফাতেমা বেগমকে।
তিনি আরো জানান, গত ৯ ও ১০ এপ্রিল একই এলাকার মহিলা ইউপি সদস্য ফাতেমা বেগম তার কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকদের দিয়ে এলজিএসপি-২ এর সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করেন। অথচ ওই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতিও তিনি।
রবিবার ১০ এপ্রিল দুপুরে ওই এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রজ্ঞামিত্র বন বিহারের পাশে অমিয় বড়ুয়ার বাড়ি হতে কমল বড়ুয়ার বাড়ি পর্যন্ত ব্রিক সলিন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে পুরোদমে কাজ করছিলো কর্মসৃজন প্রকল্পের ১৮ জন শ্রমিক। দুদিন ধরে মাটি কেটে এসব শ্রমিকরা সড়কটি ইট বিছানোর উপযোগি করে গড়ে তোলেন।
সড়ক নির্মাণে জড়িত কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকরা হলো, আলী আহমদ, রিতা বড়ুয়া, নিরু বালা বড়ুয়া, মল্লিকা বড়ুয়া, অনিমা বড়ুয়া, জহুরা বেগম, নিরুদা বড়ুয়া, ছেনুয়ারা বেগম, জানু বেগম, রাজিয়া বেগম, নজির আলী, মনিরুল ইসলাম, দিল মোহাম্মদ চৌকিদার, নজির আহমদ, রমজান আলী, লোকমান হাকিম, আবদুর রশিদ ও সুপারভাইজার বাবুল।
শ্রমিকরা জানিয়েছেন, মহিলা মেম্বার ফাতেমা বেগমের নির্দেশে তারা ইট বিছানোর জন্য এ সড়কের মাটি কাটছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ফাতেমা বেগম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জোবায়ের হাসান এবং জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান এমএম নুরুচছাফার সাথে যোগসাজশ করে গত ৯ এপ্রিল শুরু হওয়া কর্মসৃজন প্রকল্পের ১৮ জন শ্রমিক দিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে এলজিএসপি-২ এর আওতাধীন ব্রীকসলিন সড়ক নির্মাণ কাজে নিয়োজিত করে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে জনমনে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
এলজিএসপি-২ এর ব্রীকসলিন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি মহিলা ইউপি সদস্য ফাতেমা বেগম জানিয়েছেন, সড়ক করার জন্য মাটি কেটেছি, এটা তেমন কিছু না। তিনি মূল বিষয়টি এড়িয়ে যান।
স্থানীয় বাসিন্দা গাড়ি চালক সুজন বড়ুয়া ও কৃষক শুকন বড়ুয়া জানান, দুদিন ধরে প্রজ্ঞামিত্র বন বিহারের সামনের সড়কে ইট বিছানোর জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকরা কাজ করতে দেখেছেন। অথচ ওই সড়ক নির্মাণের জন্য আলাদা প্রকল্প রয়েছে বলে তারা জেনেছেন। এমন অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবিও জানান তারা।
এদিকে বিষয়টি জানার পর রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জোবায়ের হাসান। তিনি আমাদের রামু ডটকম কে জানান, সড়কে যে পরিমাণ মাটি কাটা হয়েছে, সে পরিমাণ মজুরির অর্থ এলজিএসপি’র বরাদ্ধ থেকে বাদ দেয়া হবে।
তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আসার পূর্বে ওইসব শ্রমিকদের এলজিএসপি’র সড়ক থেকে কৌশলে সরিয়ে নেয়া হয়।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিনা কাজী আমাদের রামু ডটকম কে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।