ক্রীড়া ডেস্কঃ
১১ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ার, তাতেই স্বাদ পেয়েছেন পাঁচটি অ্যাশেজ জয়ের। খেলেছেন ১১৮ টেস্ট, ২২ সেঞ্চুরিতে করেছেন ৭ হাজার ৭২৭ রান। দীর্ঘদিন ছিলেন ইংলিশ মিডল অর্ডারের ভরসা। ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে নিজেকে চেনাচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। একসময়ের ধ্রুপদি টেস্ট ব্যাটসম্যান হাত পাকাচ্ছেন টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ে। ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর বিপিএল খেলতে এসেছেন ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে, সামনে খেলবেন পিএসএলও। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ইয়ান বেল ছুঁয়ে গেলেন তার গৌরবময় আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের নানা অধ্যায়, কথা বললেন ক্যারিয়ারের এই পর্যায় ও বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়েও।
আপনার ঘরানার একজন ব্যাটসম্যানকে ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগে খেলতে দেখা, সেটিও এই উপমহাদেশে, যথেষ্টই বিস্ময়কর। আপনি নিজে কিভাবে দেখছেন ক্যারিয়ারের এই নতুন ধাপ?
ইয়ান বেল: বিস্ময়কর হয়তো। আমি উপভোগ করছি। ইংল্যান্ডের হয়ে আমার সময় যখন শেষ হয়ে গেল, তখনও নিজের ভেতর তাগিদ অনুভব করছিলাম। মনে হচ্ছিল, এখনও অনেক কিছু করার বাকি। আরও ক্রিকেট খেলতে চাই। ওয়ারউইকশায়ারের (তার কাউন্টি দল) সঙ্গে আলোচনায় ঠিক হলো খেলা চালিয়ে যাব এবং কাউন্টির তরুণ ক্রিকেটারদের সাহায্য করব।
নিজের জগত নতুন করে গোছানোর এই সময়ে আমার মনে হলো, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও নিজেকে পরখ করে দেখা উচিত। এক যুগ ধরে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলাম, ওয়ানডেও খেলেছি, ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ সেভাবে হয়নি।
এরপর বিগ ব্যাশে খেলেছি। এখন ঢাকা ডায়নামাইটসে এসেছি। এখনও ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। তবে দলের সঙ্গে থাকা, টি-টোয়েন্টির মহাতারকাদের কাছ থেকে দেখা, সত্যি বলছি, দারুণ উপভোগ করছি। আমি জানি যে আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। এই সময়ে এসে এমন অভিজ্ঞতা দারুণ লাগছে।
তাছাড়া, খেলা ছাড়ার পর কোচিং করানোর ইচ্ছে আছে আমার। সেদিক থেকেও অনেক কিছু জানার আছে। সাকিব, পোলার্ড, নারাইনদের দেখা, বিশ্বমানের সব কোচও কাজ করছে এখানে, সবকিছু মিলিয়ে অনেক সমৃদ্ধ হচ্ছি। ভবিষ্যতে যদি কোচিং করাই, হয়তো কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে ব্যাটিং কোচ হলাম, এই অভিজ্ঞতা আমাকে সাহায্য করবে।
ইংল্যান্ডের গত টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে ১৪ ম্যাচে ১৩৯ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৫৮০ রান। সেটি দেখেই হয়তো ঢাকা আপনাকে দলে টেনেছে। ধ্রুপদি একজন টেস্ট ব্যাটসম্যান কিভাবে টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংয়ে উন্নতি করল?
বেল: আগে যেটি বলছিলাম, টেস্ট এত বেশি খেলতাম যে টি-টোয়েন্টি খেলাই হয়নি খুব বেশি। এমনকি ইংল্যান্ডের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিও খুব বেশি খেলিনি। প্রথম ১০ বছরে যা খেলেছি, গত ২-৩ বছরেই মনে হয় তার চেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি খেলেছি। এই খেলতে খেলতেই টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের উন্নতি হয়েছে।
আমি যে ঘরানার ব্যাটসম্যান, আমি মনে করি টি-টোয়েন্টিতেও আমার অনেক কিছু করার আছে। আমি এক্ষেত্রে আদর্শ মানি মাহেলা জয়াবর্ধনেকে। আমরা একই ধরনের ব্যাটসম্যান। সে বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান ছিল না, কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে যথেষ্টই সফল। আমিও পায়ের কাজ দিয়ে, স্কিল দিয়ে, মাঠে গ্যাপ বের করে খেলতে পারি। উদ্ভাবনী শট খেলতে পারি। পেশিশক্তিই টি-টোয়েন্টির সবকিছু নয়। স্কিল দিয়ে, কন্ডিশন ও পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে নিজের শক্তির জায়গা কাজে লাগিয়ে সফল হতে পারি।
কাউন্টিতে এই মৌসুমে ৫৪.০৫ গড়ে করেছেন ১ হাজার ২৭ রান। হয়তো আর কখনোই টেস্ট খেলা হবে না, এরপরও এমন রান ক্ষুধা কিভাবে ধরে রাখলেন?
বেল: কাজটা খুব কঠিন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় এক যুগ কাটিয়ে ক্লান্তি পেয়ে বসেছিল। মানসিকভাবে ফুরিয়ে গিয়েছিলাম যেন। নিজেকে অনুপ্রাণিত করাও কঠিন ছিল। গত মৌসুমের আগে মনে হলো, এভাবে হার মানা যাবে না। মানসিকভাবে চাঙা হওয়া জরুরি ছিল। ১৬ বছর বয়সের পর বলতে গেলে প্রথমবার, গত শীত মৌসুমে আমি ক্রিকেট নিয়ে কোনো কাজ করিনি। তাতে মৌসুম শুরুর আগে অনুশীলেনে হয়তো একটু ঘাটতি ছিল, তবে মানসিকভাবে ফুরফুরে হয়ে উঠেছিলাম। আবারও রানের জন্য ক্ষুধার্ত মনে হলো নিজেকে। আবার উপভোগ করতে শুরু করলাম।
ওয়ারউইকশায়ারের আমার দায়িত্ব শুধু রান করাই নয়, তরুণদের সাহায্য করাও। তাদের সামনে উদাহরণ মেলে ধরার তাগিদও ছিল। নিজের অভিজ্ঞতা ওদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছি, পারফরম্যান্স দিয়ে দেখিয়ে দিতে চেয়েছি।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে আমি অনেক কিছু অর্জন করেছি। রান, সেঞ্চুরি, দলের সাফল্য। এখন তরুণদের দেখিয়ে দেওয়া, ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তোলা, তাদের পথ বাতলে দেওয়ার ব্যাপারটি আমি উপভোগ করব। হয়তো আর বছর দুয়েক খেলব। তার পরও ক্রিকেটে থাকতে চাই, ব্যাটিং কোচ বা কোচিংয়ের কোনো দায়িত্বে।
পেছন ফিরে তাকালে, নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে কিভাবে দেখেন?
বেল: গর্বভরেই দেখি। তখন ছোটো ছিলাম, আমার চাওয়া ছিল কেবল ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে খেলতে পারা। সময়ের সঙ্গে সেই স্বপ্ন বড় হয়ে ইংল্যান্ড দলের সীমানা ছুঁয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরুর সময়টায় স্বপ্ন দেখেছি ১০০ টেস্ট খেলার। বলতে গেলে সব স্বপ্নই পূরণ হয়েছে। এভাবে স্বপ্ন পূরণ সবার হয় না।
আমি নিজেকে দারুণ সৌভাগ্যবান মনে করি, কারণ আমার সময়টায় ইংল্যান্ড দলে অসাধারণ সব ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলতে পেরেছি। আমার ক্যারিয়ার জুড়েই ইংল্যান্ড ছিল দারুণ একটি টেস্ট দল, বিশেষ করে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সময়টায়। অস্ট্রেলিয়ায় জিতেছি আমরা, ভারতে জিতেছি, ক্রিকেটে যা সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর অন্যতম। সেই জয়গুলোতে আমার কিছু অবদান আছে, এটিই বড় পাওয়া। অনেক অনেক স্মরণীয় স্মৃতি আছে।
ক্যারিয়ারে ভালো সময় এসেছে, খারাপ সময়ও এসেছে। তবে পেছন ফিরে তাকালে আমি ভালো সময়ের আলোই বেশি দেখতে পাই। অনূর্ধ্ব-১৯, একাডেমি দল থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, দীর্ঘ পথচলায় অনেক বন্ধু পেয়েছি, নিজ দলে, অন্য দলে। এটাও বড় প্রাপ্তি।
প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি বাংলাদেশের বিপক্ষে (২০০৫ সালে)। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ যদিও ভালো ছিল না, এরপরও প্রথম সেঞ্চুরি নিশ্চয়ই ছিল স্পেশাল?
বেল: খুবই স্পেশাল। ডারহামে ছিল ম্যাচ, আমার তৃতীয় টেস্ট ছিল সেটি। ইনিংসটি বেশ বড়ও ছিল (অপরাজিত ১৬২)। ক্যারিয়ারের শুরুতেই সেঞ্চুরি পাওয়া ছিল স্বস্তির। বাংলাদেশ সিরিজের পারফরম্যান্স আমাকে অ্যাশেজ দলেও জায়গা করে দিয়েছিল। ২০০৫ অ্যাশেজ, ইতিহাসের সেরা টেস্ট সিরিজগুলোর একটি। আমি যদিও খুব ভালো করতে পারিনি। তবে এরপরই পাকিস্তান সফরে গিয়ে কঠিন কন্ডিশনে সেঞ্চুরি করেছিলাম। পরের বছর পাকিস্তান যখন ফিরতি সফরে এলো ইংল্যান্ডে, তিনটি সেঞ্চুরি করেছিলাম সেই সিরিজে।
টেস্ট ক্রিকেটে আমার শুরুটা খুব ভালো ছিল। খুব দ্রুত শিখছিলামও। অ্যাশেজে ভালো না খেলতে পারলেও ওয়ার্ন-ম্যাকগ্রাদের খেলে অনেক শিখেছিলাম। পন্টিং, হেইডেন, ইনজামামদের ব্যাটিং দেখে শিখেছি। জানতাম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে হলে ভালো শুরু নিয়ে বসে থাকলে চলবে না, প্রতিনিয়ত উন্নতি করতে হবে। পরে খারাপ সময়ও এসেছে, তবে আমি চেষ্টা করেছি উন্নতি করতে। এ কারণেই হয়তো এতগুলো টেস্ট খেলতে পেরেছি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে আপনার পারফরম্যান্স তো অতি মানবীয়, ৬ টেস্টে গড় ১৫৮.২৫! বাংলাদেশের বোলিং খেলা কি খুব সহজ ছিল?
বেল: খুব সহজ অবশ্যই নয়। রান কষ্ট করেই করতে হয়েছে। তবে কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভালো করতে পারলে আত্মবিশ্বাস বেশি থাকে, সেটা থেকেই পারফরম্যান্স আরও ভালো হয়।
২০১০ সালে আমি যখন বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলাম, উইকেট একদমই নিষ্প্রাণ ছিল। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের সময় আমি স্কাই স্পোর্টসে কাজ করেছি, খেলাগুলো দেখেছি। আমার খুব ভালো লেগেছে যে বাংলাদেশ এখন টার্নিং উইকেটে খেলছে এবং প্রতিপক্ষের কাজ কঠিন করে তুলেছে।
এটি আসলে ইতিবাচক মানসিকতার প্রতিফলন। আগে যখন খেলেছি, বোঝাই যেত ড্র করার জন্য উইকেট বানিয়েছে। এখন টার্নিং উইকেট এই বার্তা দেয় যে তারা জয়ের জন্য মাঠে নামছে। বাংলাদেশের টেস্ট দলে এখন অন্তত দুই জন বিশ্বমানের স্পিনার আছে, সাকিব ও মিরাজ। আরেক বাঁহাতি স্পিনারও খুব ভালো (তাইজুল)। ব্যাটিং ইউনিট দেশের মাটিতে যথেষ্ট ভালো। ঘরের মাঠে ওরা যে কোনো দলকে হারাতে পারে। ট্যাকটিকালিও ওরা এখন অনেক ভালো। বিশ্বাস করে নিজেদের ওপর। বাংলাদেশের এই মানসিকতার পরিবর্তন আমার ভালো লেগেছে।
আমাদের শেষ সিরিজটির কথাই বলি, ইংল্যান্ডের ভাগ্য ভালো ছিল বলে সিরিজ ১-১ ড্র করতে পেরেছিল। চট্টগামে বেন স্টোকস দারুণ রিভার্স সুইঙ্গিং একটি স্পেল করেছিল বলে ইংল্যান্ড জিততে পেরেছিল। নইলে বাংলাদেশ ২-০তে জিতত।
বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে হারানোর পর ইংলিশ ক্রিকেট মহলে আলোচনা কেমন ছিল?
বেল: আমি যতটা দেখেছি, সবাই খুব ইতিবাচক ভাবেই নিয়েছিল। যেটি বললাম যে মানসিকতার পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। সবাই দেখতে চায় ইন্টারেস্টিং ক্রিকেট। ওই সিরিজ দারুণ ইন্টারেস্টিং ছিল।
টার্নিং উইকেটে স্পিন দিয়ে বোলিং শুরু করেছে বাংলাদেশ। মাঠে নেমে ইংল্যান্ডের এটি ভালো লাগার কারণ নেই। বাংলাদেশ তো এটাই চাইবে যে সফরকারী দল যেন এখানে এসে স্বস্তিতে খেলতে না পারে। বাংলাদেশও নিশ্চয়ই আশা করে না যে ওল্ড ট্রাফোর্ডে গেলে ইংল্যান্ড স্পিন দিয়ে বোলিং শুরু করবে!
বাংলাদেশ এই বার্তা দিতে পেরেছে যে আমাদের দেশে এসে আমাদের হারাতে হলে দারুণ কিছু করতে হবে। এখানে খেলা সহজ নয়।
পাঁচটি অ্যাশেজ জিতেছেন মাত্র ১১ বছরের ক্যারিয়ারেই। ইংল্যান্ডের কত কত কিংবদিন্ত ক্রিকেটারও এমন কিছুর স্বাদ পাননি। এই অর্জনের মূল্য আপনার কাছে কি?
বেল: এটি অমূল্য! ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় একজন কিশোর ক্রিকেটার বেড়ে ওঠে অ্যাশেজ খেলা, অ্যাশেজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে। অ্যাশেজের চেয়ে বড় কিছু আর নেই। আমি সাতটি অ্যাশেজ খেলেছি, পাঁচটি জিতেছি। এটি পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। দারুণ গর্বের ব্যাপার।
যে দুটি সিরিজ জিতিনি, অস্ট্রেলিয়া আমদের হোয়াইটওয়াশ করেছে। এতে আমি আরও বুঝেছি, অ্যাশেজ জয় কত কঠিন, এটির স্বাদ কত মধুর।
পাঁচটি অ্যাশেজের মধ্যেও আলাদা করে বললে, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ জয় (২০১০-১১) সম্ভবত আমার ক্যারিয়ারের স্মরণীয়তম অধ্যায়। অ্যালেস্টার কুক, জিমি অ্যান্ডারসন, আমি, আমরা প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ৫-০তে হেরেছিলাম (২০০৬-০৭)। সেখান থেকে পরেরবার গিয়ে সিরিজ জিতলাম, সিরিজ জয় নিশ্চিত করা শেষ টেস্টে সেঞ্চুরি করলাম, অবিশ্বাস্য সব অনুভূতি।
আপনার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স তো সেরা ছিল ২০১৩ অ্যাশেজে, দলের তিনটি জয়ে তিন সেঞ্চুরি, ম্যান অব দা সিরিজ…
বেল: ওই অ্যাশেজ জয়ও স্পেশাল। আমরা বেড়ে উঠেছি ইয়ান বোথামের অ্যাশেজ বীরত্ব দেখে, কাহিনী শুনে। যে কোনো ইংলিশ ক্রিকেটারের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন অ্যাশেজ জয়ের নায়ক হওয়া, সিরিজে পার্থক্য গড়ে দেওয়া। ২০১৩ ছিল আমার সিরিজ। ২০১০-১১ অ্যাশেজ জয়ে অ্যালেস্টার কুকের যেরকম ভূমিকা ছিল, পরের অ্যাশেজে আমিও তেমন কিছু করতে পেরেছিলাম, এখন পেছন ফিরে তাকালে এসবই বড় তৃপ্তির।
সবচেয়ে কঠিন অ্যাশেজ কোনটি ছিল আপনার জন্য? ২০০৫ অ্যাশেজ ইংল্যান্ড জিতলেও আপনার ভালো যায়নি…
বেল: শুরুটা কঠিন ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে উন্নতি করেছি। দেখবেন, প্রতিটি অ্যাশেজেই আগের চেয়ে ভালো হয়েছে পারফরম্যান্স। সত্যি বলতে, ২০০৫ অ্যাশেজে অমন কোয়ালিটির ক্রিকেটের জন্য আমি তখনও তৈরি ছিলাম না। বয়সও ছিল কম, শিখছিলাম।
আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি, এখনও তরুণদের বলি, ব্যর্থতা আসতেই পারে। কিন্তু সেটির জবাব কিভাবে দেবে, কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবে, সেটিই নির্ধারণ করে দেবে তোমার চরিত্র। ২০০৫ অ্যাশেজের প্রতিটি ধাপ থেকে আমি শিখেছি। ২০০৬-০৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপ থেকে শেখার চেষ্টা করেছি।
অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ের কথাও বিবেচনায় রাখতে হবে। ওয়ার্ন ও ম্যাকগ্রা যখন দুই প্রান্ত থেকে একসঙ্গে বল করত, সেটি ছিল অকল্পনীয় চাপ। ওরা ছিল আমার বেড়ে ওঠার সময়ের নায়ক। সেই নার্ভাসনেসও কাজ করত। তরুণ, অনভিজ্ঞ একজনের জন্য সবকিছু জয় করা কঠিন। সেসব সামলে নেওয়া শিখে উঠতে সময় লেগেছে।
আমি সবসময় চেষ্টা করেছি ভুল থেকে শিক্ষা নিতে। নিজের সেরা সময়ে ওয়ার্ন-ম্যাকগ্রাকে পেলে কেমন করতাম জানি না। তবে যাদের পেয়েছি, তাদের বিপক্ষে খুব খারাপ করিনি মনে হয়!
২০০৫ অ্যাশেজে শেন ওয়ার্নের বোলিং তো স্মরণীয় হয়ে আছে। আমরা দেখেছি তিনি কতটা অসাধারণ বল করেছেন, ২২ গজে তাকে খেলার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল সেই সিরিজে?
বেল: (দীর্ঘশ্বাস ফেলে) বলে বোঝানো কঠিন, তাকে খেলা ছিল কতটা কঠিন। স্রেফ টার্নই এত বড় যে চমকে যেতে হয় প্রায়ই। তার পর আরও স্কিল তো ছিলই। সে এক কথায় জিনিয়াস। ওই সিরিজে ব্যাট হাতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। হেরে যাওয়া দলে থেকে সিরিজে ৪০ উইকেট মানে অসাধারণ কিছু।
তবে ওর প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ বেড়ে গিয়েছিল মাঠের বাইরে দেখে। মাঠে ন্যূনতম ছাড় দিত না। মাঠের বাইরে আবার ভিন্ন মানুষ। দারুণ বন্ধু বৎসল, আমুদে। মাঠের লড়াই মাঠেই ফেলে আসত। মাঠের ভেতরে-বাইরের ব্যালান্স খুব ভালোভাবে করতে পারত।
অস্ট্রেলিয়ানদের ব্যাপার হলো, মাঠে ওরা আপনাকে পিষে ফেলতে চাইবে। তবে ভেঙে না পড়ে কেউ যদি পাল্টা জবাব দিতে পারে, তাকে তারা প্রচণ্ড সম্মান করবে। ওদের চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়ে সেই শ্রদ্ধা অর্জন করে নিতে হবে। ওয়ার্নের মধ্যে এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাপারটি ছিল আরও প্রবলভাবে। সাহসিকতা ও দাপুটে পারফরম্যান্স দিয়ে তার শ্রদ্ধা আদায় করে নিতে হতো।
ক্যারিয়ারের শুরুতে সেরা ফর্মের ওয়ার্নকে খেলা আমার জন্যও ছিল দারুণ শিক্ষা। অনেক কিছু শিখেছিলাম ওই সিরিজ থেকে।
স্পিন তো আপনি বরাবরই ভালো খেলতেন, ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যেটি বিরল। কিভাবে এটা সম্ভব হয়েছিল?
বেল: ওয়ারউইকশায়ারের একোডেমিতে আমরা যখন বেড়ে উঠছিলাম, আমাদের একজন কোচ ছিলেন, যিনি স্পিন খেলা শেখানোয় খুব জোর দিয়েছিলেন। মনে আছে, শচিন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়দের ভিডিও নিয়মিত দেখিয়ে তিনি আমাদের স্পিন খেলার নানা দিক বোঝাতেন। ওদের পায়ের কাজ মনে গেঁথে নিতে বলতেন।
সেই সময় শীতকালে যখন ক্রিকেট মৌসুম ছিল না, আমরা ম্যাটে খেলতাম। এমনিতে ম্যাটে বল স্কিড করত। কিন্তু আমাদের সেই কোচ কিছু ম্যাট রেখেছিলেন, যেখানে বল দারুণ ঘুরত। এখানে অনুশীলনও সাহায্য করেছে। বেড়ে ওঠার দিনগুলোতেই আমি উপলব্ধি করেছিলাম, সত্যিকারের পেশাদার ক্রিকেটার হতে হলে শুধু সিম বা সুইং সামলানোই নয়, স্পিন সামলানোও শিখতে হবে ভালোভাবে।
আর কিছু ব্যাপার আমার ভেতরে ছেলেবেলা থেকেই ছিল। সহজাতভাবেই স্পিন ভালো খেলতাম।
ক্যারিয়ারে খেলা কঠিনতম বোলার?
বেল: কঠিন বোলারের তো অভাব ছিল না। ওয়ার্ন-ম্যাকগ্রার কথা তো বললাম। তবে সবচেয়ে কঠিন বললে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাঈদ আজমল ছিলেন আমার জন্য রীতিমত দুঃস্বপ্ন (২০১২ সালে)।
শুধু আমি নই, ওই সিরিজে আমাদের সবাইকে বেশ ভুগিয়েছিল আজমল। কিছুদিন আগেই আমরা ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করেছিলাম। দল ছিল তাই দারুণ ফুরফুরে। ব্যাটিং লাইনআপও ছিল বেশ আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু আজমল আমাদের নাকাল করে ছেড়েছিল। দুই দিকেই বল ঘোরাত, সেটিও প্রচণ্ড গতিতে।
শ্রীলঙ্কায় আমি মুত্তিয়া মুরালিধরনকে খেলেছি। এরপরও আজমেলর কথাই বলব, বিশেষ করে ইনিংসের শুরুতে। নতুন ব্যাটসম্যানের জন্য আজমলকে সামলানো ছিল ভয়ঙ্কর কঠিন। মুরালির ক্ষেত্রে একটি ব্যাপার ছিল, একটু থিতু হলে তাকে হাত দেখে পড়া শুরু করতে পারতাম আমরা। কিন্তু আজমলের আর্ম স্পিড ও বলের গতি এত বেশি ছিল যে, উইকেটে কিছু সময় কাটালেও হাত থেকে পড়া কঠিন ছিল। আর তখনও সে বোলিং অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ হয়নি।
(ওই সিরিজের ৩ টেস্টে আজমলের বলে চারবার আউট হয়েছিল বেল। সিরিজে ৬ ইনিংসে বেলের রান ছিল মোট ৫১। ৩ টেস্টে আজমল নিয়েছিলেন ২৪ উইকেট)।
যাদের সঙ্গে বা বিপক্ষে খেলেছেন, তাদের মধ্যে আপনার মতে সেরা ব্যাটসম্যান?
বেল: উপমহাদেশের ব্যাটসম্যানদের প্রতি আমার ভালো লাগা বরাবরের। সাঙ্গাকারা, জয়াবর্ধনে, শচিন, ইনজামাম, ইউনুস দারুণ ছিল। আমাদের ভন, ট্রেসকোথিক, পিটারসেন…। আমাদের বিপক্ষে হেইডেন, গ্রায়েম স্মিথরা অসাধারণ সব ইনিংস খেলেছে। কিন্তু একজনকে বেছে নিতে বললে অবশ্যই রিকি পন্টিং।
২০০৬-০৭ অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে ব্রিজবেনে ইনিংসটির (১৯৬ রান) পথে যেভাবে খেলেছিল, আমার জীবনে অতটা ভালো ব্যাটিং করতে আর কাউকে দেখিনি। হার্মিসন-ফ্লিন্টফরা বল করছিল প্রচণ্ড গতিতে। কিন্তু চোখের পলকে পজিশনে গিয়ে পুল করে বুলেটের গতিতে বল পাঠাচ্ছিল সীমানায়।
আগের অ্যাশেজে হেরেছে বলে এই সিরিজে জয়ের প্রচণ্ড চাপ ছিল। প্রথম ইনিংসেই সে বড় একটি সেঞ্চুরি করে বার্তাটা ছড়িয়ে দিল। ওদের গোটা দলই চাঙা হয়ে গিয়েছিল ওই ইনিংসে, আর ওদের পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সিরিজে। ২০০৫ অ্যাশেজে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে তার ম্যাচ বাঁচানো দেড়শ রানের ইনিংসটিও অসাধারণ ছিল।
শচিন টেন্ডুলকারকে এখানে আনতেই হবে। ক্রিকেটকে ভালোবাসলে তাকে ভালো না বেসে উপায় নেই। এখন বিরাট কোহলি যেভাবে খেলছে, ভিন্ন এক উচ্চতায় তুলে নিয়েছে নিজেকে। কিন্তু পন্টিং এরপরও আমার কাছে এগিয়ে।
আমার প্রিয় ব্যাটসম্যানের কথা বললে, অবশ্যই শচিন। কিন্তু আমার মতে সেরা বললে, পন্টিংই। ক্যাপ্টেন্সি আর ব্যাটিংয়ের চাপ সামলে যেভাবে খেলেছে, তার চেয়ে ভালো কাউকে চিন্তা করতে পারি না।
২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া ইংল্যান্ড দলে আপনি ছিলেন, ওই ম্যাচে ফিফটি করেছিলেন। বাংলাদেশ ২৭৫ করার পর ড্রেসিং রুমের আবহ কেমন ছিল? ম্যাচের পর?
বেল: নার্ভাসনেস ছিল অবশ্যই। আমরা তিনশ রান তাড়া করছিলাম না, তবে এটাও জানতাম, জিততে হলে খুব ভালো ব্যাট করতে হবে। বড় জুটি লাগবে। আমাদের সম্ভাবনাময় কয়েকটি জুটি শেষ পর্যন্ত খুব বড় হয়নি। ওই দলের আত্মবিশ্বাসও খুব ছিল না। হয়তো আমরা বিশ্বাস করিনি যে আমরা জিততে পারি।
এখন পেছন ফিরে তাকিয়ে বলতে পারি, ওই বিশ্বকাপে আমরা খুব ভালো অবস্থায় ছিলাম না। তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছি আমি, কিন্তু খুব আদর্শ অবস্থায় ছিলাম না সেবার। বিশ্বকাপের আগে আগে অধিনায়ক বদলানো হলো। ওয়েন মর্গ্যানকে অধিনায়ক করা হলো, যেটি ছিল ঠিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু সময়টি ছিল ভুল। অন্তত দুই বছর আগে অধিনায়ক করা উচিত ছিল। সব মিলিয়ে দলটা গোছানো ছিল না।
সত্যি বলতে আমার খেলা তিন বিশ্বকাপে একবারও বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দীর্ঘসময় ধরে পরিকল্পনা করা বা দল গোছানোর ব্যাপারগুলো দেখিনি। প্রতিবারই শেষ সময়ে পরিবর্তন হয়েছে অনেক। জোড়াতালির একটি ব্যাপার ছিল।
এবার তারা অবশেষে পরিকল্পনা করে এগোতে পেরেছে। আমি বলছি না যে ইংল্যান্ড আগামী বিশ্বকাপ জিতবেই। তবে এবার বিশ্বকাপ জয়ের মতো গোছানো দল আছে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অনেক, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কী করতে হয়, তারা জানে।
ওই বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর থেকেই তো ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দল বদলে গেল…
বেল: দল বদলে গেল, কারণ দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেল। বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার বাদ পড়ল, বেশ পরিবর্তন এলো দলে।
২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমরা ফাইনাল খেলেছিলাম। নিশ্চয়ই ভালো ক্রিকেটই খেলেছি! কিন্তু ২০১৫ বিশ্বকাপে সামনে রেখে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল না। পরের সময়টায় আমাদের কোচ বদলে যায়, অধিনায়কত্বে বদল আসে। বিশ্বকাপের আগে দল ছিল এলোমেলো।
আমার খেলা তিনটি বিশ্বকাপেই আসলে আমরা হয়তো বিশ্বাস করিনি যে দল বিশ্বকাপ জিততে পারে। সত্যি বলতে, ওয়ানডে ক্রিকেটকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটি নিয়েও সংশয়ের অবকাশ ছিল। সবসময় টেস্ট ক্রিকেটকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, অ্যাশেজকে ঘিরে পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিশ্বকাপের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ছিল না কখনোই।
এখন আমি মনে করি দুটির খুব ভালো ব্যালান্স আছে। এবার দলটা গোছানো হয়েছে বিশ্বকাপের দিকে চোখ রেখেই। বোর্ড হয়তো ভেবেছে, “আমরা পাঁচটি অ্যাশেজ জিতেছি। টেস্ট ক্রিকেট ভালো অবস্থায় আছে, এখন বিশ্বকাপ জিততে হবে।”
আমি বলছি না যে আমরা বা আগের দলগুলি কিংবা বোর্ড বিশ্বকাপ জয়ের চেষ্টা করেনি। তবে মরিয়া ভাবটা ছিল না। আমার ক্যারিয়ারে অনেকবার হয়েছে, টেস্ট সিরিজ জয়ের পর ওয়ানডেতে মূল ক্রিকেটারদের অনেককে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। খুব বেশি ওয়ানডে তাই আমার বা ওই সময়ের আরও অনেক ক্রিকেটারের খেলা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু বিশ্বকাপ জিততে হলে প্রতিটি সিরিজকে গুরুত্ব দিয়ে আস্তে আস্তে গুছিয়ে উঠতে হবে। এবার যেটি হয়েছে।
সাক্ষাৎকারের শুরুতে যেভাবে বলেছেন, ইংল্যান্ড ক্যারিয়ার তাহলে শেষ বলেই মেনে নিয়েছেন?
বেল: সেরকমই তো মনে হয়। আসছে এপ্রিলে বয়স ৩৭ পূর্ণ হবে। হ্যাঁ, শেষের আগে শেষ কখনোই বলতে নেই। হুট করে একটি ফোনকলের আশা এখনও যে মাঝেমধ্যে মনে জাগে না, তা নয়। তবে এটাও জানি, সেটি অসম্ভবের কাছাকাছি।
১১৮টি টেস্ট খেলেছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না থাকলেও দেশে-বাইরে খেলে চলেছি, অনেক পেয়েছি জীবনে। যা অর্জন করেছি, আমি তৃপ্ত। কাউন্টি খেলছি, বিপিএলে এলাম, সামনে পিএসএল আছে। আমি নিজের জীবন নিয়ে খুশি।
শেষ প্রশ্ন, এত বছরের পথচলায় বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের প্রতি ভালোলাগা আছে?
বেল: সাকিব অবশ্যই দারুণ ক্রিকেটার। সব সংস্করণেই ধারাবাহিক। সম্ভবত বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার। বছরের পর বছর দলকে টানার দায়িত্ব পালন করে আসছে। তার বোলিং খেলাও ছিল দারুণ চ্যালেঞ্জের, যেটি আমি উপভোগ করেছি।
তবে বাংলাদেশে আমার প্রিয় ক্রিকেটার তামিম। ২০১০ সালে আমরা যখন এখানে এসেছিলাম, দারুণ আগ্রাসী ব্যাট করেছিল। আমাদের বোলাররাই বলছিল, ‘দিস বয় ক্যান ব্যাট।’
পরে ইংল্যান্ডে গিয়ে লর্ডস ও ম্যানচেস্টারে সেঞ্চুরি করল। গ্রীষ্মের শুরুতে ইংল্যান্ডে গিয়ে রান করা, সেটিও সে যেভাবে আগ্রাসী খেলে করেছিল, সহজ কাজ নয়। লর্ডসে আকাশ মেঘলা থাকলে কিংবা ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনেক সময়, বল অনেক সিম ও সুইং করে। ইংলিশ ব্যাটসম্যানরাও অনেক সময় খেলতে হিমশিম খায়। আমি দারুণ উপভোগ করেছি ওর ব্যাটিং।
২০১৬ সালের সিরিজে স্কাই স্পোর্টসে কাজ করার সময় দেখেছি অমন টার্নিং উইকেটে কী দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছে। এটাই প্রমাণ করে, সে এখন অলরাউন্ড ব্যাটসম্যান।
সূত্রঃ বিডিনিউজ