গিয়াস উদ্দিন ভুলু:
টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ৩৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। রমজানের শুরুতেই পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত প্রায় ১০টি গ্রাম। দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর ধরে এই দু:খ লেগে আছে তাদের কপালে। কারণ নেই কোন টেকসই বেড়িবাঁধ, নেই কোন যোগাযোগের সু-ব্যবস্থা। সাড়ে ৪ বছর ধরে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে বিলীন হয়ে গেছে ৮কিলোমিটার যোগাযোগের সড়ক। নৌকা দিয়ে পারপার করছে ৩৫ হাজার জনসাধারণ।
প্রতিনিয়ত জোয়ার ভাটায় বসবাস করছে শত শত হতদরিদ্র পরিবার। দিনের পর দিন জোয়ারের পানির ধাক্কায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে রাস্তা ঘাট, ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ গাছ পালা। যতই দিন যাচ্ছে ততই টেকনাফের মানচিত্র থেকে শাহপরীর দ্বীপ ছোট হয়ে আসছে।
৭ জুন সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পূর্ণিমার জোয়ারের পানি তীব্র আকার ধারণ করায় জোয়ারে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এই জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় ১০টি গ্রাম। এসব গ্রামের শত শত মানুষ এখন পানিবন্দী। লবণাক্ত জোয়ারের পানিতে জালিয়াপাড়া, ক্যাম্পপাড়া, মাঝরডেইল, মগপুরা, উত্তরপাড়া, ডাংগরপাড়া, পশ্চিমপাড়া, মাঝরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, ঘোলাপাড়া।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার ফসলি জমির তরিতরকারি। জোয়ারের পানিতে এই গ্রাম গুলোর বেশির ভাগ গ্রামীণ সড়ক ও বাড়িঘর এখন জোয়ারের পানিতে ভাসছে। হারিয়াখালী এলাকার ছাত্রলীগ নেতা আবদুল মোতালেব দু:খ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ ৪ বছর আগে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়ার এলাকা বঙ্গোপাসাগরে পানির তোড়ে বেঁড়িবাধঁ ভেঙে বিলীন হয়ে যায় শত শত ঘরবাড়ি, বিলীন হয়ে যায় যোগাযোগের প্রধান সড়কটি, বিলীন হয়ে পানির নিচে চলে যায় এক হাজার একর লবনের মাঠ।
এর পর থেকে প্রতিদিন জোয়ার ভাটার তালে তালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শত শত বাড়ি ঘর, বিলীন হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ জনপদ সড়ক গুলো। এইভাবে চলছে আমাদের জন জীবন। পহেলা রমজানের শুরুতেই পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে আমরা প্লাবিত হয়েছি। আর সামনে আসছে বর্ষাকাল। লাগাতার বৃষ্টি হলে বাড়ি ঘর ছেড়ে দিয়ে এলাকা ছাড়তে হবে। তাই আমাদের দাবি মাননীয় এমপি মহোদয় ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা বর্ষা না আসার আগে দ্রত গতিতে নবনির্মিত বেড়িঁবাঁধের কাছ সম্পন্ন করলে হয়তো আমরা এই বিপদ থেকে রক্ষা পাব।
শাহপরীর দ্বীপ আওয়ামীলীগের সভাপতি সোনা আলী বলেন, শাহপরীর দ্বীপের ঘাটি জন নেত্রী শেখ হাসিনা ঘাটি যতবার নির্বাচন আসে এই এলাকার মানুষ নৌকার প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করায়। অথচ দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর ধরে এই এলাকার ৩৫ হাজার মানুষ জোয়ার ভাটায় বসবাস করছে। বিলীন হয়ে গেছে শত শত বাড়ি ঘর, বিলীন হয়ে গেছে কোটি কোটি টাকার আয়ের লবনের মাঠ। সাগরে বিলীন হয়ে গেছে ৮ কিলোমিটার যোগাযোগের সড়কটি। এই এলাকার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ব্যবস্থা হচ্ছে নৌকা। এই বিপদ থেকে বাচঁতে আমরা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সু-দিষ্টি কামনা করছি। তিনি চাইলে অল্প কিছু দিনের মধ্যে আমরা এই বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।