স্পোর্টস ডেস্ক:
উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর মতোই ঘটনা ঘটালেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগালের পক্ষে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড ছোঁয়ার ম্যাচে তিনি গোল করতে পারেননি। উল্টো প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে আসা আইসল্যান্ডকে রীতিমতো কটাক্ষ করলেন রিয়াল তারকা।
ম্যাচের পর রোনালদো বলেন, ‘আইসল্যান্ড তো ফুটবল খেলেনি। শুধু ডিফেন্ড করেছে, ওদের মানসিকতা ছোট।’ প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক কোনও টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে প্রথম ম্যাচে পর্তুগালকে রুখে দিয়ে স্বাভাবিকভাবে বেশ উল্লাস করেছেন আইসল্যান্ডের খেলোয়াড়রা। বিষয়টি বোধহয় সহ্য হলো না রোনালদোর। তিনি বলেন, ‘তারা যেভাবে উল্লাস করেছে, দেখে মনে হলো যেন ইউরো জিতে গেছে। এটা নিচু মন-মানসিকতার বহিপ্রকাশ!’
রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড সমালোচনা করেছেন আইসল্যান্ডের কৌশলেরও। তিনি বলেন, ‘গোলপোস্টের সামনে আইসল্যান্ড বাস পার্ক করে রেখেছিল। জেতার কোনও চেষ্টাই করেনি ওরা। এমন নিচু মানসিকতা নিয়ে তারা বেশি দূর যেতেও পারবে না।’ কয়েকদিন আগে নিজেকে গত ২০ বছরের সেরা খেলোয়াড় দাবি করা রোনালদোর এহেন উক্তিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ফুটবল অঙ্গনে। রোনালদোর মতে খেলোয়াড়ের মুখ দিয়ে এমন মন্তব্য আশা করেননি কেউই।
অবশ্য রোনালদোর এমন ক্ষিপ্ত হওয়ার বিশেষ কারণ রয়েছে। গতকাল রাতে পুরো ম্যাচেই তাকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে আইসল্যান্ড রক্ষণ। সুযোগ যাও দু–একটা পেয়েছিলেন, সেগুলোতে রোনালদোসুলভ ‘ফিনিশিং’ দিতে পারলেন না।
ম্যচের ৯০ মিনিট পুরোটাই মাঠে ছিলেন ফিফার সাবেক বর্ষসেরা খেলোয়াড়। মোট দশবার তিনি গোল করার প্রচেষ্টা নিয়েছেন কিন্তু লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। ২৩ মিনিটে ভিয়েরিনহার ক্রস থেকে করা হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৪৭ মিনিটে বক্সের ডান প্রান্ত থেকে জোরালো শট একজন ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। রিবাউন্ড তিনি মারেন বাইরে। ৫৬ মিনিটে বক্সের মাঝে থেকে তিনি ফ্লিক করেন বল চলে যায় বাইরে। ৭২ মিনিটে ২২ গজ দূর থেকে নেওয়া ফ্রি-কিক পোস্টের ওপরে চলে যায়। ৮২ মিনিটে আবারও ফ্রি-কিকে ব্যর্থ হন তিনি। ফ্রি কিকটি কর্নারে পরিণত হয়। ৯৪ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া আরেকটি ফ্রি-কিক বারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
তারওপর ম্যাচটি ছিল পর্তুগালের পক্ষে তার ১২৭তম ম্যাচ। এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে পর্তুগালের হয়ে লুইস ফিগোর সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড স্পর্শ করেছেন তিনি। সামনের ম্যাচ খেললেই তিনি হবেন পর্তুগালের পক্ষে সর্বাধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ডের অধিকারী। এছাড়া আর একটি গোল করলেই তিনিই হতেন ইউরোর চারটি আসরে গোল করা একমাত্র খেলোয়াড়। রোনাল্ডো ২০০৪ সালে দুটি, ২০০৮ সালে একটি ও ২০১২ সালে তিনটি গোল করেছেন। এদিন অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল আইসল্যান্ড তার এই রেকর্ডটি গড়ার অপেক্ষা আরও বাড়িয়েছে। সিআর সেভেন নিশ্চয়ই তেঁতে আছেন। আর রোনালদো তেঁতে থাকলে তার ফলাফল কী হয় এর আগে অনেক প্রতিপক্ষ তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে!
[বাংলা ট্রিবিউন]