আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
মিয়ানমারের গোলযোগপূর্ণ রাখাইনে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর এক ক্যাপ্টেন ও তার দলের সব সদস্যের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার উত্তর রাখাইনের বুথিয়াডং শহরের দুর্গম একটি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয় বলে বেশ কয়েকটি সামরিক সূত্র ও নিহতদের আত্মীয়-পরিজনদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে থাইল্যান্ডভিত্তিক ওয়েবসাইট ইরাবদী।
বিদ্রোহীদের সঙ্গে শুক্রবারের সংঘর্ষে ক্যাপ্টেন চিত কো কোর পাশাপাশি আরও সেনাসদস্য নিহত হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন মিয়ানমার সেনাপ্রধানের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন তুন।
সংঘর্ষে নিহত মোট সেনাসদস্যের সংখ্যা বলতে রাজি হননি তিনি।
নিহত ক্যাপ্টেনের দীর্ঘদিনের বন্ধু স লুইন স শুক্রবার ফেইসবুকে দেওয়া এক পোস্টেও চিত কো কোর নিহত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেন।
সংঘর্ষে সব মিলিয়ে নিহত সেনাসদস্যের সংখ্যা ২০ জনের বেশি হবে না বলেও ধারণা তার।
স লুইন জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে বুথিয়াডংয়ের ওয়ার নেট ইয়োন এলাকায় ক্রিয়াশীল আরাকান আর্মি সদস্যদের শায়েস্তা করতে চিত কো কোর নেতৃত্বে ওই দলটিকে পাঠায়।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিদ্রোহীরা চারদিক থেকে ওই স্কোয়াডটিকে ঘিরে ফেলে হামলা চালায়। চিত কো একটি রকেট-চালিত গ্রেনেডে আহত হয়েছিলেন, সরকারের অন্য বাহিনীর সদস্যরা পরে তার দেহ খুঁজে পায়নি, বলেছেন লুইন।
তার বন্ধু সাগাইং এলাকার মনিওয়াতে কর্মরত ছিলেন; তাকে রাখাইনের আন শহরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের ঘাঁটির শক্তি বাড়াতে নিয়ে আসা হয়।
চিত কো কো এবং তার দলকে বিদ্রোহীরা ঘিরে ফেলার পর সেখানে অতিরিক্ত সেনা পাঠানোয় ব্যর্থতার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কড়া সমালোচনা করেছেন।
শনিবার নিজেদের ওয়েবসাইটে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বিষয়ক তথ্যের নতুন সংস্করণেও ওয়ার নেট ইয়োন এলাকার লড়াইয়ের খবর জানিয়েছে আরাকান আর্মি।
শুক্রবার তাদের সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রায় দেড়শ সদস্যের একটি পদাতিক ব্যাটেলিয়নের সংঘর্ষে ১২ সেনা নিহত হয়েছে বলেও দাবি তাদের।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বুথিয়াডংয়ের পাশাপাশি কেয়াউকতাও ও ম্রাউক-উ শহরেও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
বিদ্রোহীরা চিন প্রদেশের পালেতোয়া এলাকার সীমান্তবর্তী মার্চে বুথিয়াডংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ঘাঁটি সাময়িকভাবে দখলে নিয়েছিল বলে জানিয়েছে ইরাবদী।
আরাকার আর্মির সঙ্গে তিন মাসের সংঘর্ষে অন্তত ১২ বেসামরিকও নিহত হয়েছেন বলে গত মাসে নেপিততে সাংবাদিকদের বলেছিলেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মুখপাত্র উ জ হাতয়।
সূত্রঃ বিডিনিউজ