হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
ভালোবাসা, কেমন আছো; কোথায় আছো? সবাই বলে, তুমি নাকি মিশে আছো দেশ-সমাজ ও পরিবারে।
ভালোবাসা! তোমাকে দেখেছি উপন্যাসের পাতায়। দেবদাস ভালোবেসেছে পারুকে। পার্বতীর জন্য নিজেকে শেষ করেছে। ভালোবাসার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে। ভালোবাসা দেখেছি আমি তাজমহলের পাথরে। পাথর শক্ত, তবে শাহজাহানের ভালোবাসায় তাজমহলের প্রতিটি পাথর এখনও ভেজা। সেখানে জমে আছে শাহজাহানের বিরহের অশ্রু।
ভালোবাসা দেখেছি নজরুলের ভেতর, যে প্রেমিকা তাকে প্রত্যাখ্যানের বিনিময়ে আশীর্বাদ দিয়েছে জীবনভর। আমরা ভালোবাসি, স্বার্থ ফুরোলে বলি, এবার আসি। কিন্তু সত্যি যারা ভালোবাসে, তারা কখনও চলে যায় না। ভালোবাসে সবসময়। সুসময়ে যেমন, দুঃসময়েও একই রকম।
আমি ভালোবাসা দেখেছি জুলেখার চোখে। আল্লাহর নবী তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন, তবুও তিনি তাকে পাগলের মতো ভালোবেসেছেন।
ভালোবাসা মানেই তো পাগলামো। ভালোবাসা কি বুঝে-শুনে হিসাব করে হয় কখনও? না, হিসাব করে ভালোবাসা হয় না। ভালোবাসা হয় হঠাৎ করে। যখন তখন। কর্পোরেট দুনিয়ায় আমরা ভালোবাসাকেও হিসাবের ছকে ফেলতে চেয়েছি। বিনিময়ে স্বার্থের ঠুলি পরা কতগুলো মানুষ পেয়েছি। তাই তো খুব আফসোস করেই রুদ্র গোস্বামী লিখেছেন- কেমন আছো, কাকে বলবো?/সবাই দিব্যি ভালো থাকার ভান করে আছে।/কথা রেখো, কাকে বলবো?/সবার কাঁধে একটা করে না রাখা কথার পাহাড়।/কাকে বলবো, মনে রেখো?/সবার হৃদপিণ্ডে/টাঙান কয়েক প্রকার রঙিন মুখোশ।
ভালোবাসা, তুমি আমাদের মাঝে আছো কী নেই- এটা তর্কের ব্যাপার। তবে তুমি তো সত্য। তোমার অস্তিত্ব সত্য। কোথাও না কোথাও তুমি আছো। তোমার মতো করেই তুমি থাকো। কারও না কারও হৃদমাজারেই তোমার বাস। কিন্তু আমি জানি না, কোথায় তুমি থাকো। যেখানেই থাকো, ভালো থেকো। আমাদের দোয়া করো, যেন আমরা ভালোবাসতে পারি। ভালো রাখতে পারি। ভালো থেকো ভালোবাসা। আমাদেরকেও ভালো রেখো।
গণমাধ্যমকর্মী