তুষার তুহিন :
কেন্দ্র থেকে আ’লীগের ১৯ ইউপির নৌকার মাঝির নাম ঘোষণার মধ্যে শেষ হয় বড় দুদলের টিকেটের লড়াই। এবার শুরু হবে মূল যুদ্ধ অর্থাৎ ভোটে বিজয়ী হওয়ার যুদ্ধ।
সূত্র জানায়, ১১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণায় কক্সবাজারের ১৯ টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২২ মার্চ।
দলীয় প্রতীকের নির্বাচন তখন থেকেই জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় তোলে। সেদিন থেকেই নির্ঘুম রাত কেটেছে বড় দু’দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের । প্রার্থীদের চাপে দলীয় নেতারাও হিমশিম খায়। তারপরও সমস্ত চাপকে একপাশে রেখে কয়েক কয়েক দফায় প্রথমে জেলা বিএনপি ১৯ টি ইউপিতেই একক প্রার্থী ঘোষণা করে ।
আর গতকাল বিকাল ৪ টার দিকে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ঘোষণা করেন তিন উপজেলার দলীয় টিকেট প্রার্থীদের নাম। এরই মধ্যে দিয়ে শেষ হলো প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়নের লড়াই। এবার প্রার্থীদের মাঠ গোছানোর পালা। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে সু সম্পর্ক তৈরির সময়। এর জন্য প্রার্থীদের হাতে সময় রয়েছে প্রায় ১০ দিন।
২ মার্চ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এর আগেই বড় দু’দলের জন্য চ্যালেঞ্জ দলীয় প্রার্থী ব্যতিত অন্যদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা নেওয়ার। এরপর একযোগে ভোট যুদ্ধ শুরু হবে।
এবারের নির্বাচনে যে দলে বিদ্রোহী থাকবে না সে দল ভোট যুদ্ধে এগিয়ে থাকবে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ সূত্র জানায়, দীর্ঘ এক সপ্তাহ যাচাই বাছাই করে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪ টায় কেন্দ্র থেকে মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও টেকনাফের ১৯ টি ইউপিতে আ’লীগের একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।
চূড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন, মহেশখালীর কালারমারছড়ায় সেলিম চৌধুরী, হোয়ানকে মোস্তাফা কামাল, ধলঘাটায় কামরুল হাসান, মাতারবাড়িতে এনামুল হক রুহুল, বড় মহেশখালিতে শরীফ বাদশা, ছোট মহেশখালীতে জিহাদ বিন আলী এবং কুতুবজুমে মোশাররফ হোসেন খোকন ।
কুতুবদিয়ার বড়ঘোপে এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর ধুরুংয়ে ইয়াহিয়া কুতুবী, দক্ষিণ ধুরুংয়ে আরিফ মোশারফ, আলী আকবর ডেইলে মো. নুরুচ্ছফা বিকম, কৈয়ারবিলে আজমগীর মাতাব্বর ও লেমশীখালিতে সৈয়দ আহমদ কুতুবী ।
এছাড়া টেকনাফ সদরে নুরুল আলম, সাবরাংয়ে সোনা আলী, বাহারছড়ায় মৌলভী আজিজ উদ্দিন, হোয়াইক্যংয়ে ফরিদুল ইসলাম, হ্নীলায় এসকে আনোয়ার ও সেন্টমার্টিনে মুজিবুর রহমান।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, কেন্দ্র থেকে প্রতীক বরাদ্দের জন্য কাগজপত্র জেলা আওয়ামীলীগের কাছে পাঠানো হয়েছে। ১৯ টি ইউপিতেই এখন একক প্রার্থী। এবার আ’লীগের অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও একজোট হয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন।
আ’লীগের একদিন আগেই জেলা বিএনপি তাদের প্রার্থী তালিকা চুড়ান্ত করেছে। ওই দলের কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর কথা শোনা না গেলেও আ’লীগের অনেক জায়গায় বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। এরমধ্যে মহেশখালীতে একজন ও টেকনাফে একজন রয়েছে। তারা উভয়েই দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন।
মহেশখালীর কালারমারছড়ায় দলীয় প্রার্থী মো. সেলিমের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে তারেক বিন ওসমান। এর পাশাপাশি টেকনাফের হ্নীলায় দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে রাস্তায় অবরোধ অন্য একজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর লোকজন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা জানান, দলীয় স্নায়ুযুদ্ধ শেষ। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি একজোট হয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করবে এবার। যদি এর ব্যাতয় ঘটে অর্থাৎ আওয়ামী – লীগের কোন নেতা যদি দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেন তবে তার বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।