নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা আজ রোববার (১৫ মে)। ‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’ এ অহিংস বাণীর প্রচারক গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব, বোধিপ্রাপ্তি আর মহাপরিনির্বাণের স্মৃতি বিজড়িত দিনটিকে বুদ্ধপূর্ণিমা হিসেবে পালন করেন বুদ্ধভক্তরা।
বৌদ্ধ ধর্ম মতে, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে এ দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্তি বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) অপর নাম ‘বুদ্ধপূর্ণিমা’।
গত দুই বছর করোনাভাইরাসের কারণে এ দিনটি উৎসবের মধ্যদিয়ে উদযাপন করতে পারেননি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। তবে এবার করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসায় দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা সাড়ম্বরে উদযাপন করবে।
দিবসটি উপলক্ষে দেশজুড়ে বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বুদ্ধপূজা, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, শীলগ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কারদান, ধর্মালোচনা সভা, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, আলোকসজ্জা, দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনাসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে দিনটি পালন করা হবে।
এদিকে, দিবসটি উলপক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। মহামতি বুদ্ধ ছিলেন জীবের মঙ্গল কামনায় সত্যসন্ধ। পৃথিবীকে সুখী ও শান্তিপূর্ণ করে গড়ে তোলার জন্য তিনি নিরন্তর প্রয়াস চালান। বুদ্ধের চেতনায় ছিল দুঃখ জয়ের মাধ্যমে জীবের মুক্তি কামনা।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধ আজীবন মানুষের কল্যাণে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অহিংসা, সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করেছেন। শান্তি ও সম্প্রীতির মাধ্যমে আদর্শ সমাজ গঠনই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য। বুদ্ধ সত্য ও সুন্দরের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবজগতকে আলোকিত করতে কাজ করে গেছেন। মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার জীবনাদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
বৈশাখ মাসের এ পূর্ণিমায় মহামানব বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে খ্যাত। খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। আবার ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্বলাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধ ধর্ম প্রবর্তিত হয়।