সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিক না নিতে চিকিৎসকের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে আসা রোগীদের অধিকাংশই নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত।
শনিবার (১৩ আগস্ট) মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে শিশুদের স্পেশাল কেয়ার ইউনিট স্ক্যানু উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, ডাক্তারদের প্রতি আমার অনুরোধ, কোনো রোগীকে আপনারা ক্লিনিকে পাঠাবেন না। আপনারাই ক্লিনিক চালান, সাধারণ লোক ক্লিনিক চালাতে পারে না।
আনোয়ার হোসেন বলেন, যাদের পয়সা আছে, তারা এমনিতেই বেসরকারি হাসপাতালে চলে যায়। আর যাদের সামর্থ্য নেই তারাই সরকারি হাসপাতালে আসে, দয়া করে তাদের ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেবেন না।
স্বাস্থ্যসচিব আরও বলেন, জনগণের প্রতি আমাদের দায় আছে। আমাদের সেই দায়বদ্ধতা নিয়েই কাজ করতে হবে। আমরা আন্তরিকভাবে সেবা দিলে আমাদের স্বাস্থ্য সেবা অনেকদূর এগিয়ে যাবে। তবে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, শিশু ও মাতৃমৃত্যু নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারিতে এখনও অনেক পিছিয়ে আছি। অসংখ্য বাচ্চা প্রসব হচ্ছে মায়ের বাড়িতে। এ অবস্থায় তারা অনেক ঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে থাকে। অবশেষে হাসপাতালে এমন অবস্থায় আসে, তখন আর কিছু করার থাকে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বর্তমান সময়ে মায়েরা নরমাল ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করতে চায় না। কিন্তু সবার আগে আমাদেরকে নরমার ডেলিভারির জন্যই অপেক্ষা করা উচিত। কিন্তু আমরা দেখি যে একটু কষ্ট যেন না হয়, তাড়াতাড়ি করে সিজার করে ফেলি, এটা ঠিক নয়। এদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। মায়েদের ও অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। যারা এটি নিয়ে কাজ করেন, তাদেরকেও আরেকটু গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, করোনার সময়ে বাড়িতে ডেলিভারি বেশি বেড়েছে, এসময়ে করোনার ভয়ে হাসপাতালে আসেনি। যে কারণে তখন আমাদের মাতৃমৃত্যুর হারটাও বেড়ে গিয়েছিল। আগামীতে ক্লিনিকে-হাসপাতালে যেন ডেলিভারিটা বেশি হয়।
মায়ের যত্ন নেওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, একজন মা যদি হেলদি না হয়, শিশুরও ঝুঁকি থাকে। কারণ সে পুরোপুরি পুষ্টি পায় না। আমাদেরকে অবশ্যই প্রসবকালীন মায়ের পরিচর্যায় গুরুত্ব দিতে হবে। মা যদি সুস্থ ও শক্তিশালী না হয়, সন্তানও সুস্থ হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে বাল্যবিবাহ একটি বড় সমস্যা। বিয়ে হলে বাল্য এই শিশুটাই আরেকটা শিশুর জন্ম দিচ্ছে। এটা রোধ করতে হবে। আমাদের ইনস্টিটিউশনাল গর্ভধারণ অনেক কম। সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট