শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করবেন আজকে। এটি মূলত ‘আশ্বিনী পূর্ণিমা’। আশ্বিনী পূর্ণিমার অপর নাম প্রবারণা পূর্ণিমা।
এ পুণ্যময় পূর্ণিমা তিথিতে তথাগত গৌতম বুদ্ধ তাবতিংস স্বর্গে মাতৃ দেবীকে তিন মাস ধরে অভিধর্ম দেশনার পর ভারতের সাংকাশ্য নগরে অবতরণ করেন। এদিনে মানবজাতির সুখ, শান্তি ও কল্যাণের লক্ষ্যে দিকে দিকে স্বধর্ম প্রচারের জন্য বুদ্ধ ভিক্ষুসংঘকে নির্দেশ দেন।
পূজনীয় ভিক্ষু সংঘের টানা ত্রৈমাসিক বর্ষাব্রতের পরিসমাপ্তি ঘটে প্রবারণা উদযাপনের মাধ্যমে। প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে এক মাস ধরে দেশের বৌদ্ধ বিহার গুলোতে চলবে শুভ কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান।
প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে আজকে (৯ অক্টোবর) সারাদেশে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান রয়েছে। সারাদেশের সঙ্গে কক্সবাজার জেলাতেও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদযাপিত হবে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা- ২০২২।
দিনটি উপলক্ষে জেলার ঐতিহ্যবাহী রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে-জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, প্রভাতফেরি সহকারে বুদ্ধপূজা দান, অষ্টাঙ্গ উপোসথশীল গ্রহণ, সংঘদান, ভিক্ষুসংঘকে পিণ্ডদান, সদ্ধর্মালোচনা সভা, হাজার প্রদীপপূজা, দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সম্মিলিত বুদ্ধোপাসনা, আলোকসজ্জা প্রভৃতি। এছাড়াও, সন্ধ্যার আকাশে উড়ানো হবে বৈচিত্রময় ফানুস।
উল্লেখ্য, বুদ্ধের সময় শত শত এমনকি হাজার হাজার ভিক্ষুসংঘ একই স্থানে একসঙ্গে অবস্থান করে ধর্ম ও বিনয় শিক্ষা করতেন। একত্রে অবস্থানকালীন ভুল-ত্রুটি হতে পারে এই চেতনা থেকে প্রবারণা উদযাপন করেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। বলা যায়, প্রবারণা মানে ভুল-ত্রুটির নির্দেশ। আশার তৃপ্তি, অভিলাষ পূরণ ও ধ্যানশিক্ষা সমাপ্তি। সকল প্রকার ভেদাভেদ, গ্লানি ভুলে গিয়ে কলুষমুক্ত হওয়ার জন্য ভিক্ষু সংঘ পবিত্র সীমা ঘরে সম্মিলিত হয়ে একে অপরের নিকট ভুল স্বীকার করেন। ভুল দৃঢ়তার সঙ্গে স্বীকার করে সংশোধনের প্রচেষ্টায় সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই প্রবারণার শিক্ষা।
ধর্মীয় অর্থে প্রবারণার অর্থ হল, বরণ আর বারণ করা। অর্থাৎ সকল প্রকার পাপকর্ম বর্জন বা বারণ করে পূণ্যকর্ম সম্পাদন বা বরণ করার শিক্ষা প্রবারণা দিয়ে থাকে।