অসদুপায় অবলম্বন, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অপরাধে ৬৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে বরখাস্তসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার বিকেলে ইসির ওয়েবসাইটে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
শাস্তি পাওয়া ৬৯ জনের মধ্যে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা রয়েছেন ২৫ জন। এদের মধ্যে একজন উপ-সচিব ও একজন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এছাড়া দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা রয়েছেন তিনজন। আর তৃতীয় শ্রেণির ২৫ জন ও চতুর্থ শ্রেণির ১৬ জন রয়েছেন। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছিল ।
জানা গেছে, এদের মধ্যে কয়েকজনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। কয়েকজনকে নিচের পদে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত। আবার কেউ কেউ ‘তিরস্কার’ বা ’সতর্ক’ হওয়ার মতো শাস্তি পেয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান পলাতক থাকায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। উপজেলা কর্মকর্তা এসএম নাসির উদ্দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ও আর্থিক অনিয়ম করায় বেতন বৃদ্ধি এক বছরের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।
জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় শাস্তি হিসেবে ‘তিরস্কার’ পেয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বিনানুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় বরখাস্ত হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এমকে আহমেদ অবৈধ আর্থিক লেনদেনের কারণে বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
এনআইডি জালিয়াতি ও অনিয়মের কারণে উপ-সচিব মো. নওয়াবুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ছামিউল আলম ও অমিত কুমার দাশ বেতন গ্রেডের নিম্নতম ধাপে অবনমিত হয়েছেন। আর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এনআইডি সংক্রান্ত অনিয়মের কারণের তিরস্কৃত হয়েছেন।
লাইব্রেরিয়ান মো. নাসিমুল হক অবৈধ অর্থ লেনদেনের কারণে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হয়েছেন। অন্য কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকজনের বেতন বৃদ্ধি বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত করা হয়েছে।
দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের মধ্যে আলিমুল রাজী নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানার সঙ্গে ‘মারাত্মক অসদাচরণ’ করার দায়ে এক বছরের বেতন বৃদ্ধি স্থগিতের শাস্তি পেয়েছেন। চাকরি দেওয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাৎ করায় ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো, কামরুল ইসলামের বেতন নিম্নতর গ্রেডে অবনমিত করাসহ সাত বছরের জন্য পদোন্নতি স্থগিতের শাস্তি পেয়েছেন।
এছাড়া প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মজিবুর রহমান অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় বেতন নিম্নতর গ্রেডে অবনমিতকরণের শাস্তি পেয়েছেন।
এদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যেও অনেকে বরখাস্ত হয়েছেন। অনেকের বেতন বৃদ্ধি বিভিন্ন মেয়াদে আটকে দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিত হয়েছেন।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট