খালেদা জিয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বঙ্গভবনে টেলিফোন করে ‘সাড়া না পাওয়ায়’ এবার রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
বুধবার বিকালে বঙ্গভবনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিটি পৌঁছে দেন দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ ও সহ প্রচার সম্পাদক আসদুল করীম শাহিন।খবর বিডিনিউজের।
তার আগে দুপুরে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতির সাক্ষাতের জন্য যোগাযেোগ করেও বঙ্গভবনের সাড়া না পাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই চিঠি পাঠাচ্ছেন তারা।
“দেশনেত্রীর প্রস্তাবাবলি পেশ করার জন্য তার একান্ত সচিব (এ বি এম আবদুস সাত্তার) রোববার মহামান্য রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত সামরিক সচিব এই বিষয়ে কিছু জানাননি।”
“আমরা আজকে লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে চেয়ে চিঠি দিচ্ছি। আমরা আশা করছি, রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি আমাদের প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতের একটা সময় দেবেন,” বলেন বিএনপি মহাসচিব।
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠনের রূপরেখা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং ‘সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কয়েকটি ধারার সংশোধনসহ ১৩টি প্রস্তাব তুলে ধরে গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিদায় নেবে। সংবিধান অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির।
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির ভাষায় বর্তমান নির্বাচন কমিশন ‘সরকারের আজ্ঞাবহ’। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে করতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে আহ্বান রেখেছে বিএনপি।
খালেদা বলেন, এই কমিশন হতে হবে ‘সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়েজাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে।
১৩ দফা প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠনের একটি রূপরেখা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং ‘সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনের কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে বলেছে, খালেদার ‘অন্তঃসারশূন্য’ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার কোনো অবকাশ নেই।
ফখরুলের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে আসা সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেওয়ার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
“আমরা মানি বা না মানি, ভালো বা মন্দ, বাস্তবতার নিরিখে আমাদেরকে স্বীকার করতে হবে যে আমাদের একজন রাষ্ট্রপতি আছেন। রাষ্ট্রপতি ইস এন ইন্সটিটিউশন। কে ওখানে আছে, কীভাবে আছে, সেটা বড় কথা নয়।”
“আমরা মনে করি, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। সেখানে তাকে যদি আমরা উৎসাহী করতে পারি, আমার মনে হয়, এই সমস্যা সমাধানে তিনি একটি ভূমিকা রাখতে পারেন।”
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।