আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কিউবা বিপ্লবের মহান ফিদেল কাস্ত্রো। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক শক্ত হাতে কিউবাকে শাসন করেছেন তিনি। বিপ্লবী এ নেতা বিভিন্ন সময়ে ক্ষুরধার মন্তব্য করে বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়েছেন। কিউবার স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানী হাভানায় ৯০ বছর বয়সে মৃত্যু হয় মহান এই নেতার।রিপোর্ট রাইজিংবিডির।
এ মহানায়কের করা আলোচিত উক্তিগুলো তুলে এনেছে গার্ডিয়ান, ইন্ডিপেনডেন্ট ও ডেইলি মেইল। তার সেসব উক্তি নিয়ে এ প্রতিবেদন।
* বাতিস্তা সরকারকে উৎখাতের জন্য ১৯৫৩ সালে মনকাদা ব্যারাকে হামলা চালানোর পর গ্রেপ্তার হন কাস্ত্রো। বিচার চলাকালে তিনি বলেন- ‘আমাকে অপরাধী বানাতে পারো, এটা কোনো গুরুত্ব বহন করে না। ইতিহাস আমাকে মুক্তি দেবে।’
* কিউবা বিপ্লবের পর ১৯৫৯ সালে তিনি বলেন- বিপ্লব শুরু করেছিলাম ৮২ জন নিয়ে। আবার যদি একই কাজ করতে হয়, আমি হয়ত ১০ বা ১৫ জনকে নিয়ে এবং সম্পূর্ণ বিশ্বাস রেখেই শুরু করব। বিশ্বাস আর কর্মপরিকল্পনা থাকলে তুমি কতটা ছোট সেটা আর বিবেচ্য হবে না।’
* সে সময় আরেকটি উক্তি করেন তিনি- ‘বিপ্লব গোলাপের শয্যা নয়, বিপ্লব হচ্ছে মৃত্যু পর্যন্ত অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যকার সংগ্রাম।’
* কিউবা বিপ্লবের ৩০দিন পর সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাস্ত্রো বলেন- ‘আমি দাড়ি কাটার চিন্তা বাদ দিয়েছি, কারণ আমি এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি এবং এই দাড়ির অর্থ আমার দেশের জন্যও অনেক কিছু। আমি সেদিন আমার দাড়ি কেটে ফেলব যখন একটি ভালো সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারব।’
* ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলছিলেন- ‘অনেক আগেই আমি এই উপসংহারে পৌঁছেছি যে, কিউবার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমাকে শেষ ত্যাগ- ধূমপান ছেড়ে দিতে হবে। এটিকে আমি আসলে খুব একটা মিসও করছি না।’
* ওই বছরই তিনি বলেন- ‘আমি কখনোই আমার ভাবনা এবং অসাধারণ ওই প্রতীকের (যিশু খ্রিস্টের) ভাবনাচিন্তার মধ্যে দ্বন্দ্ব খুঁজে পাইনি।’
* ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর কাস্ত্রো বলেন- ‘তথ্যে বিদ্ধ হতে হবে এবং মেনে নিতে হবে যে সমাজতান্ত্রিক শিবিরের পতন হয়েছে।’
* সে সময় আরেকটি বক্তব্যে তিনি বলেন- ‘তারা সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতার কথা বলে, কিন্তু এশিয়া, আফ্রিকা আর দক্ষিণ আমেরিকায় পুঁজিবাদের সাফল্য কী?’
* ২০০৪ সালে পরিচালক অলিভার স্টোন নির্মিত তথ্যচিত্র ‘লুকিং ফর ফিদেল’-এ শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে বলেন- ‘আমি উপলব্ধি করেছি যে আমার সত্যিকারের নিয়তি হচ্ছে যুদ্ধ, যা আমি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করে যাচ্ছি।’
* ২০০৬ সালের ২১ জুলাই আর্জেন্টিনায় লাতিন আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের সম্মেলনে অংশ নিয়ে কাস্ত্রো বলেন- ‘৮০ তে এসে আমি আজ সত্যিই খুশি। কখনও ভাবিনি এটা হবে, যখন প্রতিবেশী হিসেবে আছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী একটি দেশ, যারা প্রতিদিনই আমাকে মারতে চায়।’
* সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন- হত্যার চেষ্টা এড়িয়ে যাওয়ার যদি কোনো অলিম্পিক ইভেন্ট থাকত, তাহলে নির্ঘাত তাতে আমি স্বর্ণপদক জিততাম।’
* ২০১৬-র এপ্রিলে কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে- ‘দ্রুতই আমি অন্যদের মতো বিদায় নেব। এটি আমাদের সবার জীবনেই আসবে।’