শহিদুল ইসলাম, উখিয়া:
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে শত শত একর বোরো চাষাবাদ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অনেকেই আক্রান্ত বোরো চারা নিয়ে কৃষি অফিসে ধর্ণা দিয়ে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল, জমির খাজনা, কৃষি শ্রমিক ও উপকরণের মূল্য বৃদ্ধিতে নাকাল হত দরিদ্র কৃষকেরা এবার লক্ষ্যমাত্রার বোরো উৎপাদন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ৬৩৪০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ শাহজাহান জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ২৪৪৭৯ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, বোরো চাষের রোগ বালাই নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত ব্লক সুপারভাইজারগণ সক্রিয় রয়েছে।
সরেজমিন পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা ও মোছারখোলা ঘুরে উপজাতি কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইদানিং বোরো চাষাবাদে ধান গাছের গোড়ালি পঁচে গিয়ে পাতাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। তেলখোলা গ্রামের উপজাতি কৃষক কেতাং চাকমার ছেলে চিনতুয়াই চাকমা (৪৫) জানান, তার দুই কানি জমির ধান গাছ পাতা মরা রোগে আক্রান্ত হয়ে চাষাবাদ মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সে জানায়, আক্রান্ত ধান গাছ নিয়ে উখিয়া কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ করেও কোন কাজ হয়নি।
সংশ্লিষ্ট ইউ,পি, সদস্য মানিক চাকমা বোরো চাষাবাদে রোগ বালাই আক্রান্ত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তেলখোলা গ্রামের কৃষক হাবিব উল্লাহর ৫ কানি, লামং চাকমার ৮ কানি, বাতাইন চিন চাকমার ৫ কানি, মংতোয়াই চাকমার ৬ কানি সহ তেলখোলা ও মোছারখোলা গ্রামের প্রায় ৫শত একর বোরো চাষাবাদ পাতা মরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন শীল জানান, তিনি ৬ মাসের একটি প্রশিক্ষণে কর্মস্থলের বাইরে আছেন। পালংখালী এলাকার দায়িত্বরত উপ-সহকারি কৃষি অফিসার মোঃ জাহের উদ্দিন জানান, তিনি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক চিনতোয়াই চাকমাকে বোরো চাষাবাদের রোগ নিরাময়ে সঠিক পরামর্শ দিয়েছেন এবং এও বলেছেন, আক্রান্ত চাষাবাদে রোগ বালাই দুর হতে ৩/৪ দিন সময় লাগবে।
হতদরিদ্র উপজাতি অধ্যুষিত জনপদ তেলখোলা, মোছারখোলা গ্রামের কৃষকেরা দাবী করছেন, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্তরিক না হলে এবার বোরো উৎপাদন ব্যাহত হয়ে তাদের অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।