হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
শিক্ষকতাকে বলা হয় মহান পেশা। শিক্ষকরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। তাই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নটাই লালন করছিল রামুর গর্জনিয়ার মাঝিরকাটার ডিককুল পাড়ার ছোট্ট শিশু মর্জিনা আক্তার। এই তথ্য জানিয়েছেন মর্জিনার খালাতো বোন সালমা আক্তার। কিন্তু শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নটি পরিণত হলো দুস্বপ্নে। ঠিকমতো ফোটার আগেই ঝরে গেলো মর্জিনা!
সোমবার (১৩মার্চ) স্থানীয় একটি পুকুরের পানিতে পড়ে প্রাণ হারাতে হলো তাকে। এই শোকের সান্তনা দেওয়ার ক্ষমতা দুনিয়ায় কারো নেই। মর্জিনা ছয় বছরের একটি কলি। ঝরে গেল! অকালে! একদম অকালে!
সোমবার বিকেলে সরেজমিন মর্জিনার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের কান্নায় চলছে শোকের মাতম। কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না তার মা জহুরা খাতুনের আহাজারি। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছেন বাবা মোহাম্মদ জাকারিয়া। কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘আমি তো কোনো দিন কারো ক্ষতি করিনি। আল্লাহ আমাকে এমন কঠিন পরীক্ষায় ফেললেন কেন?’
স্থানীয় সূত্র জানায়, মর্জিনা স্থানীয় মাঝিরকাটা কিন্ডার গার্টেন দাখিল মাদ্রাসার নার্সারি শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী। প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে মাদ্রাসায় যান। আবার বাড়িও ফিরেন। বইখাতা রেখে কিছুক্ষণের মধ্যে হঠাৎ বাড়ি থেকে বের হলে আর ফেরা হয়নি। তার সন্ধান না পেয়ে পাগলের মতো পরিবারের সদস্যরা নানা প্রান্তে খোঁজাখুঁজি আরম্ভ করেন। কোথাও না পেয়ে সন্দেহ হলে স্থানীয় ডিককুলপাড়াস্থ জামে মসজিদের পুকুরে জাল ফেলে সন্ধানের চেষ্টা চালানো হয়। অবশেষে কয়েকবার চেষ্টার পর বিকাল ৫টায় মাছের বদলে জালে আটকা পড়লো মর্জিনার মরদেহ। তাৎক্ষণিক মরদেহটি উদ্ধার করে বাড়িতে নেওয়া হয়। এরপরই পুরো এলাকায় মানুষের ঢল নামে আর কান্নার রোল পড়ে যায়।