মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি হচ্ছে এমন একটি পাসপোর্ট যাতে আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য জলছাপের মাধ্যমে ছবির নিচেই লুকানো থাকে এবং একই সঙ্গে এতে থাকে একটি ‘মেশিন রিডেবল জোন’ যা পাসপোর্ট বহনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ও বিবরণী ধারণ করে। মেশিন রিডেবল লাইনে লুকায়িত তথ্য শুধুমাত্র নির্দিষ্ট মেশিনের মাধ্যমেই পড়া যায়। ফলে ভ্রমণ ডকুমেন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায় এবং লাইন দ্রুততম সময়ে পড়া যায়। এতে ইমিগ্রেশনে প্রক্রিয়াকরণ সময় কম লাগে।
কীভাবে করবেন এমআরপি?
প্রথমে এমআরপি ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে অথবা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (http://www.dip.gov.bd) থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। এর পাশাপাশি (www.passport.gov.bd) ওয়েবসাইটে অনলাইনেও আবেদন করা যায়। আবেদন ফর্ম পূরণ করার আগে আবেদনপত্রে উল্লিখিত নির্দেশাবলী ভালো ভাবে পড়া জরুরি। নির্দেশাবলী অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
ব্যাংকে পাসপোর্টের নির্ধারিত ফি জরুরি ৬৯০০ টাকা (ভ্যাটসহ) এবং সাধারণ ৩৪৫০টাকা (ভ্যাটসহ) প্রদান করে ব্যাংক ভাউচার আবেদন ফরমের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। অথবা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করলে নির্দিষ্ট অংশে টাকা জমা দেওয়ার বিবরণ লিখুন। পূরণকৃত ফরম সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে জমা দিতে হবে।
অনলাইনে ফর্ম পূরণের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে ফর্মের প্রিন্ট কপি, সত্যায়িত ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং শিক্ষার্থী হলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি সত্যায়িত করে নিয়ে যেতে হবে পাসপোর্ট অফিসে। পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার সময় অবশ্যই রঙিন কাপড় পড়ে যেতে হবে। কারন সাদা কাপড়ের ছবি গ্রহণযোগ্য না।
পাসপোর্ট অফিসে ঢুকে সরাসরি ফর্মটি ভেরিফাই করিয়ে নিন। তারা আপনার ফর্মের উপর সই করে একটি সিরিয়াল নম্বর লিখে দেবে। সিরিয়াল আসার জন্য অপেক্ষা করুন। সিরিয়াল অনুযায়ী ডাক পড়লে ছবি তোলার জন্য নির্দিষ্ট কক্ষে চলে যান এবং তারপর আঙ্গুলের ছাপ দিন।
ছবি, স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ প্রদানের আগে একটি প্রাক-ডেলিভারী রশিদ প্রদান করা হয় যাতে পাসপোর্টে প্রদর্শিত সকল তথ্য দেওয়া থাকে। উক্ত রশিদে আপনার তথ্য সঠিক আছে কিনা যাচাই করে নিন এবং কোন তথ্য ভুল থাকলে সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে জানিয়ে তাৎক্ষণিক সংশোধন করে নিন। উল্লেখ্য, পাসপোর্ট আবেদনকারীর ছবি, স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ প্রদানের পর মূল ডেলিভারি রশিদ প্রদান করা হয় এবং এরপর সংশোধনের আর কোনও সুযোগ থাকে না। অতএব, কাউন্টার ত্যাগের পূর্বে আপনার তথ্য যাচাই করে ডেলিভারী রশিদ বুঝে নিন। পুলিশ ভেরিফিকেশন সাপেক্ষে ১৫ দিন থেকে সর্বোচ্চ এক মাস লাগতে পারে পাসপোর্ট তৈরি হতে।
পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনার মোবাইলে এসএমএস চলে আসবে। এছাড়া (www.passport.gov.bd) এই ঠিকানায় প্রবেশ করে Application Status অপশন থেকে ডেলিভারি রশিদে প্রদত্ত আপনার Enrolment ID এবং Date of Birth প্রদান করে আবেদনের বর্তমান অবস্থাও জেনে নিতে পারবেন।
সূত্র: বাংলট্রিবিউন।