প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু:
আজ (৩০ মার্চ) বৃহস্পতিবার সারাদেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হল অন্যরকম এক নির্বাচন। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন’। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা সময়ের মধ্যে উক্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে সারাদেশের সাথে কক্সবাজারের রামু উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতেও ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৮টি দাখিল মাদ্রাসায় উক্ত নির্বাচন কোন ধরণের বিশৃংখলা ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ১০ টায় রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে কেবিনেট নির্বাচন পরিদর্শনে যান রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম এবং রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহজাহান আলি প্রমূখ।
তবে এই রিপোর্ট লেখা (রাত ৮টা) পর্যন্ত রামু উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্বাচনী ফলাফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা পড়েনি। কারণ প্রতিষ্ঠান প্রধানরা স্ব স্ব বিদ্যালয়ের নির্বাচনী ফলাফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে কিনা এই বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছুই জানেননা।
এই বিষয়ে রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মফিজুল ইসলাম আমাদের রামু ডটকমকে বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়ার বিষয়ে আমরা জানিনা। তাই জমা দিইনি। তবে আমরা বিদ্যালয়ের ফেসবুক আইডিতে ফলাফল প্রকাশ করেছি’।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাজাহান আলি আমাদের রামু ডটকমকে জানান, ‘নানান ব্যস্ততার কারণে আসলে আমিও এই বিষয়ে খোঁজখবর নিতে পারিনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। আপনি উপজেলা একাডেমি সুপারভাইজারের সাথে একবার কথা বলে দেখলে ভাল হয় ’।
রামু উপজেলা একাডেমি সুপারভাইজার মোঃ তৈয়ব আমাদের রামু ডটকমকে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত দু’একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের কাছে তাদের ফলাফল জমা দেননি’।
এদিকে ভোট চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রগুলোতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীরা বিপুল আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোটদানে অংশ নিচ্ছে। কেউ ভোট দিচ্ছে, কেউ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে বলে। অনেকে নির্বাচনের মানে বুঝেনা কিন্তু ভোট দিতে মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছে লাইনে দাঁড়িয়ে।
এ নির্বাচনের বিধি হল নির্বাচন কমিশনার, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং শৃঙ্খলার দায়িত্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিজেরাই পালন করবে। কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল গলায় পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে সবাই যার যার দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত।
প্রতিটি স্কুলে ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে ৮ জন প্রতিনিধির সমন্বয়ে ১ বছরের জন্য ছাত্র সংসদ (স্টুডেন্টস কেবিনেট) গঠিত হবে।
কিশোর বয়স থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চায় দেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে। ছোটদের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী মিলে গঠিত হবে ২২ হাজার ‘ছোটদের মন্ত্রিসভা’।
গঠিত স্টুডেন্ট ক্যাবিনেটের কাজ হবে পরিবেশ সংরক্ষণ, পুস্তক ও শিক্ষা সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, পানিসম্পদ, বৃক্ষরোপণ ও বাগান তৈরি দিবস পালন ও অনুষ্ঠান সম্পাদন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং আইসিটি।
এই বিষয়ে রামুর শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মোশতাক আহমদ চৌধুরী আমাদের রামু ডটকমকে বলেন, ‘স্কুল জীবন হল লেখাপড়ার জীবন। মাধ্যমিক স্তর থেকে যেসকল শিক্ষার্থী রাজনীতির সাথে জড়াবে ভবিষ্যতে তাদের লেখাপড়ার জন্য এটা মারাত্মক ক্ষতিকর হবে। কারণ এই নির্বাচন ব্যবস্থায় তাদের কোমল মন-মানসিকতা রাজনীতির দিকে বেশি ধাবিত হবার সম্ভাবনা আছে। এটা একেবারে অবাঞ্চিত একটা সিদ্ধান্ত বলে মনে করি’।