ক্রীড়া ডেস্ক:
শ্রীলঙ্কাকে আমলেই নেননি ক্রিকেট বিশ্লেষকরা! ‘আন্ডারডগ’ তকমা সেঁটে দিয়েছিল তাদের গায়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে। আর ফেভারিট ভারতের বিপক্ষে ‘বিবর্ণ’ লঙ্কানদের হারটাই যেন ছিল তাদের ভবিষ্যদ্বাণীতে। তবে ‘চরম অনিশ্চয়তার’ ২২ গজে লঙ্কানরা দেখিয়ে দিলো হিসাব উল্টে দিতেই এসেছে তারা ইংল্যান্ডে। নিজেদের বাঁচা-মরার ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ৭ উইকেটে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপের লড়াইটা দিয়েছে তারা জমিয়ে।
তাও যেনতেন জয় নয়, ভারতের গড়া পাহাড় সমান রান টপকেই নিজেদের জয়ের পতাকা উড়িয়েছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজরা। শিখর ধাওয়ানের সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ভারত করেছিল ৩২১ রান। সেই লক্ষ্যটা ৮ বল হাতে রেখে ৩ উইকেট হারিয়ে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা। তাতে আবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটাও নিজেদের করে নিয়েছে তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগের ম্যাচে বোলিং ভালো করলেও লঙ্কানরা ব্যাটিংয়ে ছিল পুরোপুরি ব্যর্থ। ২০৩ রানে অলআউট হওয়া সেই দলটাই এবার পেরিয়ে গেল ৩২১ রানের কঠিন বাধা। ম্যাথুজ দলে ফিরতেই কি এই বদলে যাওয়া- প্রশ্নটা আসতেই পারে। কারণ চোট কাটিয়ে দলে ফিরতেই শ্রীলঙ্কা দলের অঙ্গভঙ্গিতে ব্যাপক পরিবর্তন। কঠিন লক্ষ্যের জবাবে খেলতে নেমে একবারও মনে হয়নি আত্মবিশ্বাসের কোনও ঘাটতি আছে তাদের ব্যাটিংয়ে। তা শুরুতে মাত্র ৭ রান করে নিরোশান ডিকবিলা আউট হওয়ার পরও না।
ভুবনেশ্বর কুমারের ওই আঘাতে পর ঠিকই লঙ্কান ট্রেনকে লাইনে ফেরান দানুস্কা গুনাথিলাকা ও কুশল মেন্ডিস। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাদের ১৫৯ রানের জুটিটাই গড়ে দেয় জয়ের ভিত। তবে আফসোসে পুড়ছেন তারা নিশ্চিত। দুজনই যে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন রান আউটে! ৭২ বলে ৭৬ রান করে গুনাথিলাকার রান আউটের পর কুশল মেন্ডিসও একইভাবে ফেরেন ৮৯ রান করে। সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরে থাকতে ভুবনেশ্বর কুমারের চমৎকার থ্রোতে রান আউট হয়ে যান তিনি। ৯৩ বলের ইনিংসটি কুশল সাজিয়েছিলেন ১১ চার ও ১ ছক্কায়।
তাদের উইকেট দুটি হারানোর প্রভাব মোটেও পড়তে দেয়নি শ্রীলঙ্কা। কুশল পেরেরাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান অধিনায়ক ম্যাথুজ। চতুর্থ উইকেটে গড়েন ৭৫ রানের অবিছিন্ন জুটি। হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ে কুশল পেরেরা রিটার্ড হার্ট (৪৭*) হয়ে মাঠ না ছাড়লে জুটিটা লম্বা হতো আরও। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সেট ব্যাটসম্যানের এভাবে মাঠ ছাড়ার সুযোগটা নিতে পারেনি ভারত। বলা ভালো নিতে দেননি অসেলা গুনারত্নে। এই ব্যাটসম্যান ২৭ বলে হার না মানা ৩৪ রানের ইনিংস খেলে নিশ্চিত করেন দলের জয়। অন্য প্রান্তে তো ছিলেনই অধিনায়ক ম্যাথুজ। গত বছরের আগষ্টের পর মাঠে নেমেই করেছেন হাফসেঞ্চুরি। ৪৫ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলে প্রত্যাবর্তনটা রাঙিয়ে নিয়েছেন জয় দিয়ে।
ম্যাথুজদের এই জয়ে জমে গেল ‘বি’ গ্রুপে লড়াই। এখন গ্রুপের চার দলেরই সম্ভাবনা আছে সেমিফাইনালে যাওয়ার। প্রত্যেকেই এক ম্যাচ করে জিতেছে বলে সবার পয়েন্ট ২ করে। ক্রিকইনফো
রিপোর্ট বাংলা ট্রিবিউনের।