বার্তা পরিবেশক:
কক্সবাজার বেতারের শিল্পী সম্মানীর বাজেট থেকে পুকুর চুরির ঘটনার মূল নায়ক কক্সবাজার বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক মো. হাবিবুর রহমানের অনিয়ম -দূর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুই সদস্যর তদন্ত দল কক্সবাজার পৌছেই তদন্ত কাজ শুরু করে।
এ দলে রয়েছেন বাংলাদেশ বেতার সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ ও আঞ্চলিক প্রকৌশলী মনজুরুল করিম।
বেতারের সংগীত প্রযোজক ও কক্সবাজার বেতার শিল্পী ঐক্য পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক রায়হান উদ্দিন,নাট্য প্রযোজক জসীম উদ্দিন বকুল ও স্বপন ভট্টাচার্য্য জানান,কক্সবাজারে পৌঁছেই তদন্ত দলের সদস্যরা কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে শিল্পীদের সাথে বেঠক করেন। এ সময় যেসব শিল্পীদের স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া বিল করা হয়েছে এ রকম বেতারের বিভিন্ন বিভাগের তালিকাভুক্ত প্রায় ৩০ জন শিল্পীর লিখিত জবানবন্দী গ্রহন করেন। প্রায় সাড়ে তিনঘন্টা সময় ধরে চলা এ তদন্ত কার্যক্রমে শিল্পীরা চারটি বহিরাঙ্গন অনুষ্ঠান ও মে-জুন মাসের শিল্পী সম্মানী নিয়ে অনিয়মসহ বেতারের আঞ্চলিক পরিচালকের নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন। এবং বেতারের শিল্পী খাত থেকে পুকুর চুরির ঘটনার প্রমান সরূপ বেশ কিছু ডকুমেন্ট তদন্ত দলের কাছে পেশ করেন। এ দলের প্রধান বাংলাদেশ বেতার সদর দপ্তরের
অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ জানান, আমরা দুই সদস্যর তদন্ত দল কক্সবাজার এসেই শিল্পীদের সঙ্গে বসেছি। তাদের অভিযোগ আমরা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। শিল্পীরা আমাদের একটা লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। তদন্তকাজ শেষ করে যতদ্রুত সম্ভব ডিজির মহোদয়ের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, স্থানীয়ভাবে শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চ্চাকে আরো বেগবান করা এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরার লক্ষে রামু,কক্সবাজার,মহেশখালী ও চকরিয়ায় ‘আলোকিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক চারটি বহিরাঙ্গন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কক্সবাজার বেতার। সরকারের এ রকম মহৎ উদ্যেগ বাস্তবায়নেই পুকুর চুরির মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন কক্সবাজার বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান। গুটিকয়েক শিল্পীর অংশগ্রহনে দায়সারাভাবে অনুষ্ঠান শেষ করা হলেও শিল্পীদের নামে বেনামে ভুয়া কন্ট্রাক্ট বানিয়ে প্রায় সাড়ে ১৮ লাখ টাকার ভুয়া বিল বানান তিনি। বাস্তবে এসব অনুষ্ঠানে ৩ লাখ টাকাও খরচ করা হয়নি। এছাড়াও চলতি বছরের মে ও জুন মাসে ২০ থেকে ত্রিশ জন শিল্পীর রেকডিং হলেও প্রায় চারশ জনের নামে বেনামে ভুয়া কন্ট্রাক্ট বানিয়ে সাড়ে ১৯ লাখ টাকার বিল করা হয়। যে তালিকা থেকে বাদ যায়নি মৃত ব্যক্তি,প্রবাসী,কারাগারে অন্তরীন ব্যক্তিও।
এসব অনিয়মের প্রতিবাদে এবং দুর্নীতিবাজ আরডি হাবিবুর রহমানের অপসারন ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে গত রোববার (২ জুলাই) কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে শিল্পীরা।