জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙে পানির নিচ থেকে শিশুসহ ২০-২২ জন যাত্রীকে উদ্ধারকারী মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার সন্তান ও কুমিল্লায় কর্মরত হাইওয়ে পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ মিয়া আগামী পুলিশ সপ্তাহে পিপিএম পদক পেতে যাচ্ছেন।
হাইওয়ে পুুলিশের পক্ষ থেকে এমনই সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ।
এদিকে শুক্রবার দাউদকান্দিতে এ ঘটনার পর থেকে গত দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই পারভেজের প্রশংসা করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
শনিবার হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুল ইসলাম পারভেজকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন বলে জানা গেছে। এর আগে শুক্রবার বেলা ১১টার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডের পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে যায় ঢাকা থেকে মতলবগামী অর্ধশতাধিক যাত্রীবাহী মতলব এক্সপ্রেস বাসটি।
দুর্ঘটনাটি উপস্থিত লোকজন যখন দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করছিলেন, তখন গৌরীপুরে দায়িত্বরত দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার কনস্টেবল পারভেজ মিয়া মহানায়কের মতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পচা ও গন্ধযুক্ত ময়লা ডোবার পানিতে লাফিয়ে পড়েন। তিনি প্রথমে দ্রুত গাড়ির জানালার গ্লাসগুলো ভেঙে দিলে সহজে গাড়ির ভেতরে থাকা যাত্রীরা বেরিয়ে আসতে পারেন। গ্লাস ভেঙে দ্রুত পানির নিচে গাড়ির ভেতর গিয়ে বের করে আনেন ৭ মাসের এক শিশুকে। গাড়ির ভেতর আটকা পড়া ৫ নারীসহ ২০-২২ যাত্রীকে উদ্ধার করেন তিনি নিজেই। পরবর্তীতে স্থানীয় মানুষ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়।
পেন্নাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার বলেন, গাড়িটি ডোবায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পারভেজ মিয়া লাফিয়ে পড়েন পানিতে।
স্থানীয়রা জানায়, পারভেজ যখন গাড়ির গ্লাস ভেঙে নর্দমার পানিতে নামেন, তখন তার জীবনহানির আশঙ্কায় তার কোমরে গামছা বেঁধে রেখে বলেছিলেন আমি অজ্ঞান হয়ে গেলে টেনে উঠাবে। এদিকে কনস্টেবল পারভেজ মিয়ার এ কর্মতৎপরতায় গর্বিত হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়ন। তার সাহসিকতায় কুমিল্লা রিজিয়ন হাইওয়ে পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ ১০ হাজার টাকা, স্থানীয় পেন্নাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শুক্রবার ঘোষিত ৫ হাজার টাকা শনিবার প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা রিজিয়ন হাইওয়ে পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ জাগো নিউজকে জানান, যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে আমাদের পারভেজ ঝুঁকি নিয়ে যা করেছে তা হাইওয়ে পুলিশ বিভাগের জন্য সত্যই প্রশংসনীয়, তাই তার কাজের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে আগামী পুলিশ সপ্তাহে তাকে পিপিএম পদক দিতে সুপারিশ করা হবে।