ইমাম খাইর, কক্সবাজার:
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সার্টিফিকেট আদালতের মামলার কোন গতি নেই। একটি মামলা ৩ যুগেরও বেশী সময় ধরে চলছে-এমন মামলাও রয়েছে। নিস্পত্তি তো হচ্ছেনা, অধিকন্তু দিন দিন জট বাঁধছে সার্টিফিকেট মামলার। এসব মামলার আসামী ধরতে অনীহা রয়েছে পুলিশের।
তবে, পুলিশের ভাষ্য- সঠিক তথ্য প্রমাণ ও ওয়ারেন্ট কপি পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন আসামীকে ছাড় দেয়া হবেনা।
অভিযোগ রয়েছে, সার্টিফিকেট মামলায় ওয়ারেন্ট জারি হলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করেনা। অধিকাংশ আসামী কাগজে-কলমে ‘পলাতক’ কিন্ত ঘুরছে সবাই প্রকাশ্যে। নেয়া হয়না কোন এ্যাকশান। ফলে এসব মামলায় সরকারের যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে, ঠিক তেমনি অর্থ অপচয়ও হচ্ছে। আদায় হচ্ছেনা খেলাপী ব্যক্তিদের কর।
সংশ্লিষ্ট শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৪ সাল থেকে চলছে এমন সার্টিফিকেট মামলাও রয়েছে। মিছিলের পর মিছিল গেলেও আসামীরা রয়ে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ওয়ারেন্ট জারী করলেও কার্যকারীতা নেই। উল্টো পুলিশের সঙ্গে আঁতাত করে চলেন আসামীরা- এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
এদিকে ১৯১৩ সালের পিডিআর আইনের ২৯ ধারামতে সার্টিফিকেট খাতক হিসেবে সম্প্রতি ১৫ টি সার্টিফিকেট মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে জেনারেল সার্টিফিকেট আদালত। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এসব আসামীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানাতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট আদালত।
সার্টিফিকেট মামলা নং- ২৮/১৯৯৭-৯৮ (আয়কর মামলা):
আসামী
১। আনোয়ারা বেগম, পিতা-মৃত হাজী ছদর আহমদ সিকদার, স্বামী-নুরুল ইসলাম, গ্রাম-মাতারবাড়ীপাড়া, বদরখালী, চকরিয়া, কক্সবাজার।
২। ছেনুয়ারা বেগম, পিতা-মৃত হাজী ছদর আহমদ সিকদার, স্বামী-মোস্তাক আহমদ, গ্রাম-গোয়াখালী মাতবর পাড়া, পেকুয়া।
৩। মোহাম্মদ আলী, পিতা-মৃত ছদর আহমদ সিকদার, সাং-মাতারবাড়ী পাড়া, বদরখালী, চকরিয়া।
৪। ছালেহ আহমদ সিকদার, পিতা-মৃত ছদর আহমদ সিকদার, সাং-বদরখালী কলেজপাড়া, বদরখালী, চকরিয়া, বর্তমান ঠিকানা-বিলকিস শফিং কমপ্লেক্স, লাল দিঘির পাড়, কক্সবাজার পৌরসভা।
৫। দিলুয়ারা বেগম, পিতা-মৃত হাজী ছদর আহমদ সিকদার, স্বামী-সেকান্দর বাদশা, এস.এম পাড়া, কক্সবাজার সদর, কক্সবাজার।
৬। শাকেরা বেগম, স্বামী-মাস্টার ছলিম উল্লাহ, কুতুবদিয়াপাড়া, কক্সবাজার পৌরসভা।
৭। শামীমা আক্তার, স্বামী-রেজাউল করিম কুতুবী, পিতা-মৃত হাজী ছদর আহমদ সিকদার, বদরখালী কলেজপাড়া, বদরখালী, চকরিয়া, কক্সবাজার।
৮। রওশন আক্তার বুলু, পিতা-মৃত হাজী ছদর আহমদ সিকদার, বদরখালী কলেজপাড়া, বদরখালী, চকরিয়া, কক্সবাজার।
৯। পারুল আক্তার, পিতা-মৃত হাজী ছদর আহমদ সিকদার, স্বামী-ছাবের আহমদ, সাহারবিল, নয়াপাড়া, চকরিয়া, কক্সবাজার।
১০। ইয়াছমিন আক্তার, পিতা-ছদর আহমদ সিকদার, স্বামী-ছাবের আহমদ, সাং-সাহারবিল, চকরিয়া, কক্সবাজার।
তাদের নিকট হতে উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ১,২২,৯৪,৭৩৮/- (এক কোটি বাইশ লক্ষ চুরানব্বই হাজার সাতশত আটত্রিশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান আছে।
সার্টিফিকেট মামলা নং- ০৪/১৯৯৮-৯৯ (আয়কর মামলা):
আসামী
ছালেহ আহমদ সিকদার, পিতা-মৃত ছদর আহমদ সিকদার, স্থায়ী ঠিকানা-বদরখালী কলেজপাড়া, বদরখালী, চকরিয়া। বর্তমান ঠিকানা-বিলকিস শফিং কমপ্লেক্স, লাল দিঘির পাড়, কক্সবাজার পৌরসভা, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ২৫,৭৩,১৪১/- (পঁচিশ লক্ষ তিয়াত্তর হাজার একশত একচল্লিশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-০৪/১৯৯৯ (আয়কর মামলা):
আসামী
মোজাফ্ফর আহমদ, পিতা-মৃত আবদুল জলিল, সাং-খোদাইবাড়ী, ঈদগাঁও, সদর, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ১২,৩৬,২১৩/- (বার লক্ষ ছত্রিশ হাজার দুইশত তের) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-১৬/১৯৯৮-৯৯ (আয়কর মামলা):
আসামী
মিসেস শাহ নেওয়াজ বেগম, স্বামী-শেখ জসিম উদ্দিন, প্রোপাইটর-মেসার্স রূপসা ট্রেডার্স, বাহারছড়া, কক্সবাজার পৌরসভা, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ১২,৭৪,৩৪২/- (বার লক্ষ চুয়াত্তর হাজার তিনশত বিয়াল্লিশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-০৮/৯৯ (আয়কর মামলা):
আসামী
নুর মোহাম্মদ, পিতা-হাজী ছালেহ আহমদ, মালিক-মেসার্স বেঙ্গল সল্ট রিফাইনারী সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, ধলঘাটা, মাতারবাড়ী, মহেশখালী, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ১০,৭৬,৫৯১/- (দশ লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার পাঁচশত একানব্বই) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-৮৪/১৯৯৩-৯৪ (আয়কর মামলা):
আসামী
হাজী আমির হামজা, পিতা-হাজী মোখলেছুর রহমান, লামারবাজার, বড় হাজী মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ৬,৪৬,৩৪৮/- (ছয় লক্ষ ছেচল্লিশ হাজার তিনশত আটচল্লিশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-৮৪/১৯৯৩-৯৪ (আয়কর মামলা):
আসামী
হাজী আমির হামজা, পিতা-হাজী মোখলেছুর রহমান, লামারবাজার, বড় হাজী মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ৬,৪৬,৩৪৮/- (ছয় লক্ষ ছেচল্লিশ হাজার তিনশত আটচল্লিশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-৮৪/১৯৯৩-৯৪ (আয়কর মামলা) :
আসামী
হাজী আমির হামজা, পিতা-হাজী মোখলেছুর রহমান, লামারবাজার, বড় হাজী মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ৬,৪৬,৩৪৮/- (ছয় লক্ষ ছেচল্লিশ হাজার তিনশত আটচল্লিশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-২/১৯৯৯ (আয়কর মামলা):
আসামী
জাফর আলম, পিতা-নুরুল হক সওদাগর, প্রোঃ হক সল্ট ক্রসিং ইন্ড্রাসট্রিজ, ইসলামপুর, সদর, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ৪,৫০,৮৪২/- (চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার আটশত বিয়াল্লিশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং- ২৩৭/১৯৯১-৯২ (আয়কর মামলা):
আসামী
মকবুল আহমদ, পিতা-এয়াকুব আলী, সাং-ফালংখালী, পোঃ বালুখালী, উখিয়া, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ৩,৮৭,৩৯৮/- (তিন লক্ষ সাতাশি হাজার তিনশত আটানব্বই) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং- ২৩৫/১৯৯১-৯২ (আয়কর মামলা):
আসামী
রশিদ আহমদ, পিতা-জাবের মুল্লুক, সাং-জালিয়াপালং, উখিয়া, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ৪,৬৩,০৭০/- ( চার লক্ষ তেষট্টি হাজার সত্তর) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-০১/১৯৯৮-৯৯ (আয়কর মামলা):
আসামী
জহির মিয়া (কাজল), ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান মেম্বার, ২। দিদারুল আলম (বাদল), ৩। আলতাজ বেগম, ৪। ফরিদা ইয়াছমিন, ৫। বেদার মিয়া, ৬। রোকেয়া বেগম, ৭। জোসনা আক্তার, ৮। রোজিনা আক্তার, ৯। রশিদ মিয়া, ১০। রফিক মিয়া রোবেল, ১১। মুছা মিয়া, সর্বপিতা-মৃত নবাব মিয়া, সাং- হাজীপাড়া, ঝিলংজা, সদর, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ৩,০১,৩৭৯/- ( তিন লক্ষ এক হাজার তিনশত উনাশি) টাকা পাওনার মামলা চলমান।
সার্টিফিকেট মামলা নং-২৩/২০০০ (আয়কর মামলা):
আসামী
মং থান সিন, পিতা-থা অং, সাং-বড় মগ বাজার, মহেশখালী, কক্সবাজার। উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৪, চট্টগ্রাম ২, ৪৮, ৭৪৯/- (দুই লক্ষ আটচল্লিশ হাজার সাতশত উনপঞ্চাশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান আছে।
সার্টিফিকেট মামলা নং-১৭৫/১৯৯১-৯২ (কৃষি ব্যাংক, কক্সবাজার শাখা):
আসামী
১। গোলজার বেগম, স্বামী-মৃত আমানুল হক, ২। রোকসানা আকতার, ৩। আবছার কামাল, ৪। সরওয়ার কামাল, ৫। খোরশেদ আলম, ৬। হারুনর রশিদ, ৭। জাহাঙ্গীর আলম, ৮। রুজিনা আক্তার, ৯। মামনুর রশিদ, ১০। জেনিফা আক্তার, ১১। বেবী আক্তার, সর্বপিতা-আমানুল হক, সর্বসাং-রাস্তারপাড়া, খুরুশকুল, সদর, কক্সবাজার। তারা কৃষি ব্যাংক, কক্সবাজার বাজার শাখা ১,৩৩,৮৬৬/- (এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার আটশত ছেষট্টি) টাকা পাওনার মামলার আসামী।
সার্টিফিকেট মামলা নং-০১/২০১৫-১৬ (কৃষি ব্যাংক, বাংলাবাজার শাখা):
আসামী
জাফর আলম, পিতা-মৃত সোলতান আহমদ, সাং-দক্ষিণ ডিকপাড়া, পিএমখালী, সদর, কক্সবাজার। কৃষি ব্যাংক, বাংলাবাজার শাখা ১, ৫২, ৩৩৫/- (এক লক্ষ বায়ান্ন হাজার তিনশত পঁয়ত্রিশ) টাকা পাওনার মামলা চলমান আছে।
জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম আমাদের রামু ডটকমকে জানান, সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের যথাযথ সহায়তা পেলে আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব। আদায় হবে সরকারী রাজস্ব। এ জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
থানায় ওয়ারেন্ট কপি পৌঁছানোর পরও আসামীদের গ্রেফতারে গাফিলতির অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন আমাদের রামু ডটকমকে জানান, ওয়ারেন্ট কপি আমাদের কাছে পৌঁছানো হলে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামীদের ব্যাপারে কোন আপষ নেই।
জেনারেল সার্টিফিকেট আদালতের কার্যক্রমঃ
দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে সরকারি পাওনা আদায়ে দীর্ঘসূত্রীতা, অর্থ অপচয় রোধ এবং সহজে ও অল্পসময়ে সরকারি পাওনা আদায়ের নিমিত্ত সর্বোপরি সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে এ শাখার কার্যক্রম সরকারি দাবি আদায় আইন ১৯১৩ (১৯১৩ সনের ব্যাঙ্গল এ্যাক্ট নং-৩) দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে।
নাগরিক সেবাঃ
১.তফসীল ব্যাংক কর্তৃক অনাদায়ী ঋণ আদায়ের জন্য সার্টিফিকেট অনুরোধের ভিত্তিত্বে মামলা রম্নজু করণ।
২.আধা-সরকারি অফিস স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা কর্তৃক অনাদায়ী ঋণ আদায়ের জন্য দায়েরকৃত সার্টিফিকেট মামলার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
৩.অনাদায়ী ঋণ আদায়ের লক্ষ্য সংশ্লিষ্ট দায়িকের প্রতি পদ্ধতিগতভাবে নোটিশ/গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে ঋণ আদায়ের পদ্ধতি গ্রহণ করা।
৪.অনাদায়ী ঋণ আদায় হলে তা সংশিস্নষ্ট সংস্থাকে অবহিত করা।
৫.কোন সরকারি পাওনা আদায় না হলে পদ্ধতিগতভাবে সার্টিফিকেট মামলা রম্নজু করে আদায়ের ব্যবস্থা করা।