অনলাইন ডেস্কঃ
নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে জাতিসংঘের সুদৃষ্টি পাওয়ার প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে দেশে ফেরার এক দিন পর সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “জাতিসংঘের কাছে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বলেছি। তারা এ ব্যাপারে কিছু জানতে চেয়েছে, সেগুলো আমরা জানিয়েছি।”
আওয়ামী লীগের শাসনে দেশে ‘গণতন্ত্র নেই’ বলে দাবি বিএনপির। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে সরকার ‘অন্যায়ভাবে’ কারারুদ্ধ করে রেখেছে বলেও দাবি তাদের।
জাতিসংঘের মনোভাব কেমন দেখেছেন- প্রশ্ন করা হলে ফখরুল বলেন, “আলোচনা করেছি, সমস্ত বলেছি। ওনারা বিষয়গুলো দেখবেন বলেছেন।”
লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, “আলোচনা হয়েছে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে।”
দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালকে নিয়ে গত বুধবার নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল। সেখানে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন লন্ডন থেকে আসা সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক হুমায়ূন কবীর।
তারা বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংস্থার সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকার সঙ্গে বৈঠক করেন। পরদিন বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়া ডেস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
ফখরুলের এই সফর জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে ছিল বলে বিএনপি নেতারা দাবি করলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পেরেছে, বিএনপি নেতাদের উদ্যোগেই এই বৈঠক হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে এই সফর হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, “এটা পরিষ্কার যে জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণে আমি জাতিসংঘে গিয়েছিলাম। যেহেতু কফি আনান (সাবেক মহাসচিব) সাহেবের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান ছিল, উনি (বর্তমান মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস) চলে গিয়েছিলেন। আমরা জাতিসংঘের যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন, অ্যাসিটেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল, তার সঙ্গে কথা বলেছি।”
জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণের কথা বলে বিএনপি ‘প্রতারণা’ করেছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “জাতিসংঘের মহাসচিব বিএনপির মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে তারা প্রচার করেছে; জাতিসংঘের সদর দপ্তর নিয়ে এ ধরনের ভাঁওতা ও প্রতারণা যারা জাতির সঙ্গে করে, তাদের নিয়ে কী বলব!?
বিএনপি এই সফরের মধ্য দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে বলে ক্ষমতাসীনদের বক্তব্যের পাল্টায় ফখরুল বলেন, “জাতিসংঘের যে চার্টার আছে, সেই চার্টারের মধ্যে পরিষ্কার বলা আছে, সদস্য দেশের সরকার, বিরোধী দল, রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও সংগঠনের যে কেউ তাদের যে কোনো বিষয় উত্থাপন করতে পারে।”
এই বৈঠকগুলো আয়োজনে বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের একটি লবিং ফার্ম ভাড়া করেছিল বলেও প্রকাশ পেয়েছে। লবিস্ট ভাড়া করার অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃ বিডিনিউজ