শিক্ষা ডেস্কঃ
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা দিতে এক হাজার পাঁচশ ‘আনন্দ স্কুল’ স্থাপন করা হবে। এসব স্কুলে রাখাইন ও ইংরেজি ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হবে। বিশ্বব্যাংকের সাড়ে সাতশ কোটি টাকা অনুদানে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। অর্ধেক অর্থ রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও বিদ্যালয় যাতায়াতের সড়ক সংস্কার করা হবে। পুরো কার্যক্রমটি তদারকি করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিশুদের অবস্থানের কারণে আমাদের ১৩১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তাঘাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশ্বব্যাংককে বলা হয়েছে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা দিতে হলে অনুদান হিসেবে বরাদ্দ দিতে হবে। অনুদানের অর্ধেক টাকা রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষায় খরচ করা হবে। বাকি টাকা আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট নির্মাণে ব্যয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে বিশ্বব্যাংক ২৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে।
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সের ৬০ হাজার শিশু রয়েছে। এই শিশুদের বার্মিজ ও ইংরেজি ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হবে। লার্নিং সেন্টারের শিশুদের আনন্দ দিতে টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামগ্রী থাকবে। শিশুদের আনন্দের সঙ্গে শিক্ষার মধ্যে নিয়ে আসতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে শিশুশ্রমে তারা জড়িত না হতে পারে। শিক্ষক নিয়োগ দেবে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনিসেফ। তবে কোনোভাবেই রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে না। রস্ক প্রকল্পের মাধ্যমে দেশীয় এনজিওর মাধ্যমে স্কুলগুলো পরিচালনা করা হবে। গত ২৯ আগস্ট প্রকল্পের প্রি একনেক হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
এনজিও মনোনায়নের বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তালিকা যাচাই-বাছাই করে এনজিও মনোনায়ন দেওয়া হবে। যাতে করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার আড়ালে অন্য কিছু না করে। এ ব্যাপারে আমরা কঠোর নজরদারি করব।’
এদিকে পাঁচ বছর মেয়াদি রস্ক প্রকল্পের মেয়াদ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির পরেও প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ শতভাগ খরচ করতে পারেনি। প্রকল্পের কর্মকর্তাদের অদক্ষতাই এর জন্য দায়ী বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন। এরপরেও প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।