অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপির বারবার আহ্বানেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যখন গা নেই, তখন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংলাপে বসে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে সরকারকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে কামাল হোসেন ও একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড়ের মধ্যে শনিবার ঢাকায় ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র উদ্যোগে এক নাগরিক সমাবেশে এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি আদায়ে গণসংযোগের পর ১ অক্টোবর থেকে সারাদেশে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও আসে সমাবেশ থেকে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা এই সমাবেশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে দাবি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান ওঠা এই সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগকে হটাতে যে কোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য তৈরি করে নির্দেশনা কারাগার থেকে দিয়েছেন তার নেত্রী।
অন্যদিকে বিএনপির দাবির সঙ্গে সমরূপতা দেখিয়ে জাতীয় ঐক্যের অন্যতম সংগঠক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এই মিল দুই পক্ষের ঐক্যেরই নামান্তর।
সিপিবি-বাসদ নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক জোটের অংশীদার গণসংহতি আন্দোলনের শীর্ষনেতা জোনায়েদ সাকিও এই সমাবেশে বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে ঘোষণাপত্রও উপস্থাপন করেন বাম সমর্থিত তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
সমাবেশে বিএনপি সমর্থক পেশাজীবী নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেন, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সুলতান মো. মনসুর আহমেদও ছিলেন।
বিএনপিকে বাদ রেখে দশম সংসদ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে দেশ শাসনের পর যখন খালেদা জিয়ার দলের সব দাবি নাকচ করে ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকার গঠনসহ ৫ দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়ার ঘোষণা দিয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঐক্যবদ্ধ হয়ে নামেন আওয়ামী লীগের এক সময়ের নেতা কামাল হোসেন ও বিএনপির এক সময়ের নেতা বি চৌধুরী।
নির্দলীয় সরকার গঠন কিংবা সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে মেনে না নিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনমনীয় মনোভাব প্রকাশের পর এই নাগরিক সমাবেশ করলেন তারা।
গুলিস্তানের কাজী বশির মিলনায়তনে (মহানগর নাট্যমঞ্চ) বিকাল ৩টায় এই সমাবেশ শুরুর আগেই গোটা মিলনায়তন পূর্ণ হয়ে যায়। মিলনায়তনে বাইরের মানুষ যাতে নেতাদের বক্তব্য শুনতে পারে, সেজন্য পুরো প্রাঙ্গণে লাগানো হয় অনেকগুলো মাইক।
শিল্পী সুরাইয়া পারভিন ও মায়শা সুলতানার কণ্ঠে ‘আমাদের ন্যায্য অধিকার যত, আমাদের ফিরিয়ে দাও’ গানে শুরু হয় ‘কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন’ শিরোনামের এই সমাবেশ।
সমাবেশস্থলে নেতা-কর্মীদের স্লোগান ছিল- ‘এক দাবি এক লক্ষ্য দেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য’, ‘নবীন-প্রবীণ আয়রে ভাই, দেশ বাঁচাতে ঐক্য চাই’, ‘একাত্তরের চেতনা, জাতীয় ঐক্য আরেক বার’, ‘নব্বইয়ের আকাঙ্ক্ষা জাতীয় ঐক্য আরেকবার’।
মিলনায়তনের আশপাশে ব্যাপক পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতির মধ্যে ভেতরে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নেতারা।
সমাবেশের শেষ পর্যায়ে প্রকৌশলী শেখ শহীদুল্লাহ উপস্থাপিত ঘোষণাপত্রে বলা হয়, “আমরা এই নাগরিক সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, সরকার আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। একই সঙ্গে তফসিল ঘোষণার পূর্বে বর্তমান সংসদ ভেঙে দেবেন।”
প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, শ্রেণি-পেশা ও নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র কমিটি গঠন করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধভাবে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূটি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয় ঘোষণাপত্রে।
ঘোষণাপত্রে কারারুদ্ধ বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রসঙ্গটি আসে এভাবে- “ন্যায়বিচারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে অগ্রাহ্য, ব্যাহত ও অকার্যর করে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আইনগত ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
তাদের এই সমাবেশের প্রতিক্রিয়ায় ফেনীতে এক সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের সবচেয়ে বড় দল আওয়ামী লীগকে বাদ রেখে জাতীয় ঐক্য হতে পারে না।
সমাবেশে বিএনপি নেতাদের অংশগ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করে একে ‘সাম্প্রদায়িক ঐক্য’ নামেও অভিহিত করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
সরকারের পতন চাই: বি চৌধুরী
সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোটের সময়ে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছেন যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা সভাপতি বি চৌধুরী।
তিনি সমাবেশে বলেন, “আমি বলতে চাই, আমরা মুক্ত গণতন্ত্র চাই। এই সরকারের পতন চাই। আমি সকল রাজবন্দির মুক্তি চাই।”
রাজনৈতিক বিভেদের সুযোগে ২০০৭ সালের মতো অনির্বাচিত কেউ যেন ক্ষমতায় না আসে, সেজন্য ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, “একটি স্বেচ্ছাচারী, গণতন্ত্রবিরোধী আরও একটি অনুরূপ সরকার আসবে ভবিষ্যতে, তা বন্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের কোনো সরকার না আসে, সেজন্য রক্ষাকবজ তৈরি করতে হবে। সেজন্য ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেছি।
“পিছু হটা যাবে না। আমরা চাই জাতীয় ঐক্য, আমরা চাই অপশাসন দূর হয়ে যাক। আমরা চাই গণতন্ত্র ফিরে আসুক।”
জামায়াতের সঙ্গে জোটে থাকা দল বিএনপিকে স্বাগত জানানো নিয়ে সমালোচনার জবাবে বি চৌধুরী বলেন, “আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, যুক্তফ্রন্ট স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির ঐক্য চায়। যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করবে না, মানচিত্রে বিশ্বাস করবে না, তাদেরকে কেমন করে বিশ্বাস করব? যারা আমাদের পতাকাকে শ্রদ্ধা করতে জানত না অন্তর থেকে, তারা কখনও স্বীকার করবে না আমাদের এই বাংলাদেশকে, তাদের সাথে কেমন করে আমি কথা বলব।”
দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার সময়: কামাল
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ওঠায় এখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলেছেন গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, “আমরা জনগণের ভোটাধিকারসহ মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। জনগণ এতে ব্যাপক সাড়া দিয়েছে।
“এখন সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার সময় এসেছে। আমি বিশ্বাস করি আমাদের প্রচেষ্টা সফল হবে।”
এই বার্তা নিয়ে সারাদেশে জনগণকে সংগঠিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই, অতীতে জনগণের বিজয়কে কেউ ঠেকাতে পারে নাই, ভবিষ্যতেও পারবে না ইনশাল্লাহ।”
যে কোনো মূল্যে ঐক্য: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আওয়ামী লীগকে হটাতে সবদলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়তে তার নেত্রী কারাবন্দি খালেদার বার্তা পাওয়ার কথা সমাবেশে জানান।
তিনি বলেন, “জেলখানা থেকে আমাদের কাছে আমাদের নেত্রী খবর পাঠিয়েছেন, যে কোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য তৈরি করে এই দুঃশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘আমার কী হবে না হবে, সেটা ভাবার দরকার নেই।”
এ সময় মিলনায়তন থেকে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’ স্লোগান ওঠে।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আদালতের দণ্ড নিয়ে কারাবন্দি খালেদা। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে তার মুক্তির শর্তও দিয়েছে বিএনপি। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তা নাকচ করেছে।
বিএনপি মহাসচিব সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “দেশে এখন যে দুঃশাসন চলছে, এই দুঃশাসন আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের স্বপ্নকে ভেঙে খান খান করে দিয়েছে। আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে ধুলিসাৎ করে দিয়েছে।”
ঐক্য তো হয়েই গেছে: মান্না
নিজেদের ঘোষিত ৫ দফা দাবি ও ৯ দফা লক্ষ্য তুলে ধরে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও যুক্তফ্রন্টের সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান মান্না বিএনপিকে সঙ্গে নিয়েই আন্দোলনের কথা বলেন।
তিনি বলেন, “এখানে বিএনপির নেতারা আছে। আমি দেখেছি শেষ পর্যন্ত তারা ১৫ দফা দাবির কথা বলেছেন, যেটা আমাদের দাবির সাথে প্রায় মিলে যায়। তাই এই ঐক্য তো হয়েই গেছে। লাখো-কোটি জনতা এই ঐক্য চায়। কারও ক্ষমতা নাই এই ঐক্য, এই ঐক্যের শক্তি, এই বিজয়কে রুখতে পারে।”
আওয়ামী লীগ আমলে বেশ কয়েক মাস কারাগারে থাকা মান্না ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বলেন, “ধান্ধাবাজি ছাড়েন। এক সাথে দুইটা সংসদ চলবে না, এটা বাতিল করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের সময়ে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।”
নির্বাচনকালীন সরকারে শুধু সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল দলকে মেনে নেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা পরিষ্কার ঘোষণা করতে চাই, এই সংসদ দিয়ে কোনো সরকার গঠিত হবে না। যারা সরকারে আসবেন, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।”
আওয়ামী লীগ নত না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে সেই দাবি আদায়ের প্রস্তুতি নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা মান্না।
“আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। উনাদের (বিএনপি) কর্মসূচি আমরা দেখিছি। আমরা যৌথভাবে সারাদেশের মানুষের সামনে আসব। দেশের মানুষের কাছে আমাদের একটাই বক্তব্য ভোটের অধিকার, মৌলিক অধিকার, নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আমরা এক হয়েছি।“
“২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মানুষ ঘরে ছিল। আমরা যাই কিছু চেষ্টা করেছি, মানুষ রাস্তায় নামেনি। আর এবার যখন নির্বাচন হবে, তখন ঘরের মানুষ রাস্তায় আসবে,” সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন তিনি।
সমাবেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, “দেশটা গুম, খুন ও বেওয়ারিশ লাশের বাগানে পরিণত হয়েছে। এটা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে।
“এজন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। এ থেকে উত্তরণে এখন জাতীয় ঐক্য দরকার, নির্দলীয় সরকার দরকার। সরকারকে বলছি কোনো রাজবন্দিকে কারাগারে রাখতে পারবেন না। সবাইকে মুক্তি দিতে হবে। অবশ্যই আপনাদের পদত্যাগ করতে হবে।”
যারা ছিলেন সমাবেশে
কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বি চৌধুরী। সভা পরিচালনা করেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন।
সমাবেশের শুরুতে কামাল হোসেনের সঙ্গে মঞ্চে বসেন ফখরুলসহ বিএনপি নেতা। সমাবে শুরুর কিছু পরে এসে যোগ দেন বি চৌধুরী।
মঞ্চের কেন্দ্রে সভাপতি কামালের পাশেই বসেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল। কামালের অন্য পাশে ছিলেন বি চৌধুরী। বি চৌধুরীর পাশে ছিলেন যথাক্রমে মইনুল হোসেন ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ও আবদুল মঈন খান।
ফখরুলের পাশে ছিলেন আ স ম রব, তার পাশে বসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তার পরেই ছিলেন চারদলীয় জোট শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা নুর হোসেইন কাসেমী ও বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ।
মইনুলের সঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মো. মনসুর, অধ্যাপক মোমেনা খাতুন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, খেলাফত মজলিশের মজিবুর রহমান, আহমেদ আবদুল কাদের, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, জমিয়তের উলামায়ে ইসলামের আবদুর রব ইউসুফী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রহমান, বিকল্পধারার মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুকও সমাবেশে ছিলেন।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট
সমাবেশ শুরুর আগে মিলনায়তন যখন ভর্তি, তখন ২টা ৩৮ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে গেলে সবাইকে অন্ধকারে বসে থাকতে হয়। ২টা ৫৮ মিনিটে বিদ্যুৎ এলে সমাবেশের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।
উদীচীর কেউ ছিল না
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার এই সমাবেশে সঙ্গীত পরিবেশনকারী সুরাইয়া পারভিন ও মায়শা সুলতানাকে উদীচীর শিল্পী বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলেও তার প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের অন্যতম প্রাচীন এই সাংস্কৃতিক সংগঠনটি।
গণমাধ্যমে খবর দেখে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি সফিউদ্দিন আহমদ এবং সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ওই জোটের সমাবেশে উদীচীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং উদীচীও তাদের কোনো শিল্পীকে সেখানে পাঠায়নি।’
“ফলে রাজনৈতিক জোটটির সমাবেশে উদীচী গান পরিশেন করেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারিত হয়েছে তা সঠিক নয়।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ