লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
পথে পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা, অথচ নামটা একবারও মনে পড়লো না!
এরকম অস্বস্তিকর পরিস্থির অভিজ্ঞতা প্রায় সবারই কম বেশি আছে। বয়স যা-ই হোক, দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ভুলে যাওয়া যে মস্তিষ্ক দুর্বল হওয়ার লক্ষণ হতে পারে এমনটা কি কখনও ভেবে দেখেছেন?
নতুন পরিচিত হওয়া মানুষটার নাম কয়েক ঘণ্টা পর আর মনে করতে পারছেন না কিংবা কাউকে ঠিকানা বলতে গিয়ে আবিষ্কার করলেন রাস্তার নামটা মনে পড়ছে না অথবা অফিসে গিয়ে দেখলেন ল্যাপটপ বাসায় ফেলে এসেছেন।
ঘটনাগুলো পরিচিত মনে হলে প্রশ্ন আসতে পারে, তবে কি ভুলোমনা হয়ে যাচ্ছি?
তরুণ বয়সে হয়ত বিষয়টা গুরুতর নাও হতে পারে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে ব্যাপারটা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।
মস্তিষ্ক দুর্বল হওয়া, মানসিক সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এরকম ভুলোমনের সহনীয় মাত্রার মাপকাঠি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হল।
বয়সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মস্তিষ্কের কিছু পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক। তবে তার সঠিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কোন বয়সে পরিবর্তন আসছে সেটা বিবেচনায় রাখা জরুরি।
মস্তিষ্কজনীত সকল জটিলতাই ‘ডিমেনশিয়া’ বা স্মৃতিভ্রংশ রোগ নয় একথা মাথায় রাখতে হবে।
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে মস্তিষ্কের কিছু কার্যক্ষমতা অক্ষুণ্ন থাকে, যেগুলো মানসিক শক্তির চিহ্ন। যেমন- সেসব কাজ সবসময় করছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন, কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে রপ্ত করা জ্ঞান কিংবা কৌশল, সাধারণ জ্ঞান ও যুক্তিখণ্ডনের ক্ষমতা।
ভারতের গঙ্গারাম হাসপাতালের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং দিল্লি’র সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ডা. রাজেশ গোয়েল বলেন, “যারা মনে করেন তারা ভুলোমনা হয়ে যাচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই ‘সুডো-ডিমেনশিয়া’য় ভুগছেন। যারা একইসময়ে একাধিক কাজ করেন, মানসিক চাপ ও অস্বস্তিতে থাকেন তাদের এই জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। ঘুমের অভাব, হরমোন জটিলতা ইত্যাদির কারণেও ‘সুডো-ডিমেনশিয়া’ হতে পারে।”
ভুলে যাওয়া কখন আশঙ্কাজনক?
হুট করে কোনো কিছু ভুলে যাওয়া চিন্তিত হওয়ার বিষয়। বিশেষ করে এই ভুলে যাওয়ার কারণে যদি দৈনন্দিন কাজ বাধা পায় এবং সেটার মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকে। এরকম হলে সচেতন হতে হবে।
স্বাভাবিক হচ্ছে
– দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হয়না এমন কিছু ভুলে যাওয়া।
– কখন কিছু ভুলে গেছেন সেটা বলতে পারা।
– পরিচিত রাস্তায় দিক নির্দেশনা মনে করতে সময় লাগে তবে হারিয়ে যান না।
– স্বাভাবিক আলাপচারিতা চালাতে পারেন, তবে সঠিক শব্দ খুঁজে পেতে সমস্যা হওয়া।
– সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয় না।
অস্বাভাবিক হল
– দৈনন্দিন কাজ যেমন- জামাকাপড় পরা, বিল পরিশোধ করা, পরিষ্কার করা ইত্যাদি করতে অসুবিধা হওয়া।
– কিছু ভুলে যাওয়ার কখন বা কবে ঘটেছিল সেটাও ভুলে যাওয়া।
– স্বাভাবিক আলাপচারিতায় অসুবিধা, শব্দচয়নে দেরি কিংবা বেঠিক ব্যবহার।
– একই কথা বার বার বলা।
– সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা।
সূত্রঃ বিডিনিউজ