অনলাইন ডেস্কঃ
২১ অগাস্ট হামলার ঘটনার রায়ে খুশি হতে পারেননি সেদিনের আহতরা। বিশেষ করে তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আহতদের কয়েকজন।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ১৪ বছর আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।
আর বুধবারের রায়ে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এছাড়া এ মামলার আসামি ১১ সরকারি কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সেদিনের হামলায় গ্রেনেডের শরীর এখনো শরীরে নিয়ে চলছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক উম্মে রাজিয়া কাজল।
বর্তমানে গোপালগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের এই সংসদ সদস্য আশা করেছিলেন হামলায় জড়িতরা পাবেন সর্বোচ্চ সাজা।
কিন্তু রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “এই রায়ে আমি খুশি না। তারেক-হারিছসহ যাদের যাবজ্জীবন হয়েছে, তাদের ফাঁসি না হলে কোনোভাবেই সন্তুষ্ট হতে পারব না।”
সেদিনের ঘটনায় আরেক আহত তৎকালীন ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবা পারভীনও একই প্রতিক্রিয়ংা জানিয়েছেন।
“এই মামলার রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া তারেক রহমানের ফাঁসি হওয়া উচিৎ ছিল,” বলেন তিনি।
মাহবুবা পারভীন বলেন, “ এ রায় আমাকে ব্যথিত করেছে। গ্রেনেড হামলার দায়ে তারেক, হারিছের ফাঁসি হল না। আমি এ রায়ে খুব খুশি হতে পারলাম না।”
গ্রেনেড হামলায় আহত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ-উত্তরের সভাপতি আজিজুর রহমান বাচ্চু বলেন, “ আমরা এ রায়ে কিছুটা সন্তুষ্ট। কিন্তু এ রায়ে তারেক রহমানসহ অন্য যাদের যাবজ্জীবন হয়েছে, তাদেরও ফাঁসি হওয়া উচিৎ ছিল।
“প্রয়োজনে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব তাদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য।”
রায়ে তারেক রহমানের সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় আহত স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সম্রাট আকবর সবুজ ও মাহমুদা মনোয়ারা বেগমও অসন্তুষ্ট।
আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সবুজ বলেন, “দীর্ঘদিন পর এ রায় হলেও এতে আমি খুশি না, কারণ জঘন্য এ হামলার মূল হোতা তারেক রহমান, কিন্তু তাকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। তার অপরাধ হল ফাঁসি দেওয়ার মত।”
উচ্চ আদালতের কাছে তারেকের ফাঁসি কামনা করে তিনি বলেন, “আমার সুন্দর জীবনটা শেষ করে দিয়েছে, এই জীবন কী আর ফিরে পাব? এর জন্য মূল অপরাধী তারেক দায়ী।”
ক্ষোভ জানিয়ে মনোয়ারা বেগম বলেন, “শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে যন্ত্রণার সাথে বেঁচে আছি। বহুদিন পর এ রায় হয়েছে, প্রত্যাশা ছিল হামলার মূল কারিগর তারেকের ফাঁসি হবে, কিন্তু আমরা দেখলাম তার যাবজ্জীবন হয়েছে।
“মামলায় খালেদা জিয়াকে আসামি করা দরকার ছিল। এ হামলার সাথে খালেদা জিয়াও জড়িত।”
হামলায় আরেক আহত বদর আজিজ উদ্দিন বলেন, “এ মামলায় আমি একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষী। আমি আহত। আমার অনেক কষ্ট হয়। মনে করেছিলাম মূল হোতা তারেক রহমানের ফাঁসি হবে, কিন্তু তা হল না।”
উচ্চ আদালতে তারেক রহমানের সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে আশা করেন বদর আজিজ।
সূত্রঃ বিডিনিউজ