অনলাইন ডেস্কঃ
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২৯ অক্টোবর তারিখ ঠিক করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান এই তারিখ ঠিক করেন।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন গত ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতের কাছে আবেদন করেন, খালেদা জিয়াসহ মামলার অপর আসামিদের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন না। খালেদা জিয়া আদালতে আসতে চান না। তাই মামলার রায় ঘোষণার তারিখ চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করে আদালত বলেন, আড়াই বছর ধরে আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক শুনানি না করে নানা কারণ দেখিয়ে কালক্ষেপণ করছে। আইনে যুক্তিতর্কের বিধান না থাকলেও আসামিপক্ষকে তা করার জন্য বলা হয়। আজও আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক না করে সময় চাচ্ছে। রায় ঘোষণার তারিখ চেয়ে দুদকের আবেদন মঞ্জুর করা হলো।
রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করার আদেশকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেছেন খালেদা জিয়ার দুই আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও সানাউল্লাহ মিয়া।
মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তিতর্কের শুনানির সুযোগ না দিয়ে রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করার এমন আদেশ আগে কখনো হয়নি। তাঁরা এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
আজ শুনানির শুরুতেই খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেন। তিনি আদালতকে বলেন, খালেদার অনুপস্থিতিতে বিচার চলার আদেশের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন। উচ্চ আদালত তাঁদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে তাঁরা আপিল করবেন। এ জন্য আদালতের কাছে এক সপ্তাহ সময় চান সানাউল্লাহ মিয়া।
খালেদার অপর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, উচ্চ আদালতের (হাইকোর্ট) আদেশই চূড়ান্ত নয়। আপিল বিভাগে তাঁরা আবেদন করবেন। আপিল বিভাগের আদেশই চূড়ান্ত আদেশ। এ জন্য তাঁরা আদালতের কাছে সময় চান।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন আদালতকে বলেন, উচ্চ আদালত খালেদা জিয়ার আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। এই আদালতকে বিচার চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন। উচ্চ আদালতের আদেশ পাওয়ার পর সময় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল চেয়ে করা দুদকের আবেদন খারিজ করে দেন। আদালত বলেন, খালেদা জিয়া ২৯ অক্টোবর (রায়ের দিন) পর্যন্ত জামিনে থাকবেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হন খালেদা জিয়া। এরপর তাঁকে নাজিম উদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সম্প্রতি তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুদক। মামলার অপর আসামিরা হলেন হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান। হারিছ পলাতক।