খালেদ হোসেন টাপু, রামুঃ
কক্সবাজারের রামু উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন ও পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন। বুধবার (১৭ অক্টোবর) পূজার অষ্টমী দিনে তাঁরা রামুতে পৌঁছে প্রথমে রামু কেন্দ্রীয় সার্বজনীন কালী মন্দিরে যান। সেখানে ধর্মীয় নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর তেমুহনী শতবর্ষী বটমূল ও হাজারীকুল শ্রীশ্রী কৃষ্ণ মন্দিরসহ বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনা খুবই সুদৃঢ়। জাতির পিতার স্বপ্নপূরণে এই পূজাও একটি উপলক্ষ্য। আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাক, এই প্রত্যাশা করছি।
জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, কক্সবাজার জেলার প্রতিটি ধর্মের মানুষের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন ভাল অবস্থানে আছে। যা গর্ব করার মত। সম্প্রীতির এই বাধন অক্ষুন্ন থাকুক, এটাই আমাদের কাম্য। তিনি আরো বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল রাখতে সকলের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশে^র বুকে একটি সম্প্রীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রামু একটি সম্প্রীতির উপজেলা। এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোন চিহ্ন নেই। আমরা সবাই মানুষ। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। তাই আমরা সবাই মিলেমিশে উৎসব করব। এদেশে প্রতিটি ধর্মের মানুষ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে যার যার ধর্ম পালন করে যাচ্ছেন। তাই আগামী নির্বাচনেও নৌকার বিজয় নিশ্চিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।
রামু থানার ওসি মুহাম্মদ আবুল মনসুর বলেন, ৫দিন ব্যাপী শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষ্যে রামুর বিভিন্ন পূজামন্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্টেশন, সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট নিরসনেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উৎসব যেন রামুর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্ভয়ে উদযাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লুৎফুর রহমান বলেন, রামুর সকল পূজা মন্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে সনাতন ধর্মের লোকজন উৎসব পালন করতে পারেন সে লক্ষ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা করে প্রতিটি পূজা মন্ডপেই সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে রামুতে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দূর্গোৎসব পালিত হচ্ছে।
রামু উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক তপন মল্লিক বলেন, রামু হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার উর্বর ভূমি। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান মিলিত প্রয়াসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চাই।
এদিকে রামুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা উপহার পেয়ে হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে আনন্দ উচ্ছাস বিরাজ করছে।
বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শনকালে উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান আলী হোসেন কোম্পানী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ লুৎফুর রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) চাই থোয়াইহলা চৌধুরী, রামু থানার ওসি মুহাম্মদ আবুল মনসুর,পরিদর্শক তদন্ত এসএম মিজানুর রহমান, ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, রামু কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরের পুরোহিত সজল ব্রাহ্মণ চৌধুরী, পুরোহিত সুবীর ব্রাহ্মণ চৌধুরী বাদল, রামু উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক তপন মল্লিক, যুগ্ম আহবায়ক প্রকাশ সিকদার, সজীব শর্মা, জনি দেওয়ানজী, কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি রতন মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক চন্দন দাশ গুপ্ত, হিন্দু ধর্মীয় নেতা রতন দেওয়ানজী, সহকারী প্রকৌশলী এলজিইডি আলা উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কালী মন্দির দূর্গা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রূপন ধর, সাধারণ সম্পাদক দিলীপ দেওয়ানজী, কোষাধ্যক্ষ শিমুল চক্রবর্তী, রাজীব দে, তেমুহনী শতবর্ষী বটমূল পূজা মন্ডপ পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুমন চক্রবর্তী পাইলট, নাথপাড়া কৃষ্ণমন্দির দূর্গা পূজা কমিটির সভাপতি সন্তোষ দে, সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ও পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন এর শুভেচ্ছা কার্ডসহ উপহারস্বরূপ মিষ্টি ও ফলমূল পেয়ে রামুর বিভিন্ন পূজা মন্ডপের নেতৃবৃন্দ অত্যন্ত খুশি হয়েছেন।