লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
‘ফ্লু’ ও ‘ঠাণ্ডা লাগার’ মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা’ ভাইরাসের আক্রমণে যে জ্বর হয় তাকে বলে ‘ফ্লু’। আর ‘ঠাণ্ডা’ লাগলে সর্দি হয় তবে জ্বর থাকে কম।
চিকিৎসা-বিজ্ঞানের এই সাধারণ তথ্যানুসারে বেশিরভাগ মানুষ ঋতু পরিবর্তনের সময় ‘ঠাণ্ডা’ জ্বরে পড়েন। তবে এই জ্বর ঘন ঘন হলে সাবধাণ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ‘ঠাণ্ডা লাগা’ বা সর্দি জ্বরের পেছনে দায়ী প্রায় দুইশরও বেশি প্রজাতির ভাইরাস। তবে ‘রাইনোভাইরাস’য়ে মানুষ বেশি আক্রান্ত হয় ।
তারপরও এখন পর্যন্ত এর নিয়ামক ওষুধ নেই। আর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একই ঋতুতে দুবার ভোগার সম্ভাবনাও থাকে।
প্রতিটি সংক্রমণের একটি ‘ইনকিউবেশন’ সময় থাকে। মানে জীবাণুর সংস্পর্শে আসার পর থেকে রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়া পর্যন্ত।
কিছু ক্ষেত্রে মানুষ দীর্ঘদিন রোগে ভোগেন। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য কারণ হতে পারে ওই ব্যক্তি ক্রমাগত একটির পর আরেকটি সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন এবং একাধিক সংক্রমণ একত্রিত হয়ে দীর্ঘমেয়াদে অসুস্থ করে রাখছে।
সাধারণ সর্দি জ্বর বাতাস, স্পর্শ এবং আক্রান্ত ব্যক্তির বিভিন্ন ব্যবহার্য বস্তুর মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
শীত এবং বসন্তকালে এই সর্দি জ্বর বেশি দেখা দেয়। এর সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে আছে
– শীতকালে মানুষ বেশিরভাগ সময় ঘরে কাটায়, যে কারণে হাঁচি কাশির মাধ্যমে জীবাণু ছড়ায় বেশি।
– যেসব ভাইরাসের আক্রমণে এই সর্দি জ্বর হয় সেগুলো শীতকালের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় বেশি সময় টিকে থাকতে পারে। ফলে সংক্রমণের সময়সীমা যেমন দীর্ঘ হয় তেমনি বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়।
– শীতকালে ভাজাপোড়া খাওয়া হয় বেশি। ফলে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থেকে শরীর বঞ্চিত হয়।
– শীতের অলস সময়ে মানুষ শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকতে চায়, ফলে সমস্যা আরও জটিল হয়।
পার্থক্য
সর্দি জ্বর এবং ফ্লু’য়ের মধ্যে তফাৎ রয়েছে। ফ্লু হলে উপসর্গগুলোর মাত্রা তীব্র হয়, যা রোগীকে ঘায়েল করে দিতে পারে। সর্দি লাগলে নাক দিয়ে পানি পড়া, সাইনাসের উপর চাপ পড়া, বুকে কফ জমা ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা হয়। তবে রোগী একেবারে ঘায়েল হয়ে বিছানায় পড়ে যায় না।
করণীয়
সর্দি জ্বর এবং ফ্লু থেকে একেবারে মুক্তি পাওয়ার উপায় নেই। তবে প্রতিরোধের জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
– হাত পরিষ্কার রাখা জরুরি। কারণ, এই ভাইরাস শরীরের বাইরের অংশেই কয়েক ঘণ্টা জীবিত থাকতে পারে।
– হাঁচি, কাশি দেওয়ার সময় হাতের বদলে কনুই কিংবা বগল মুখের সামনে নিয়ে আসলে জীবাণু ছড়াবে কম।
– যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল তারা দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো জন্য বেশি করে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল খেতে হবে, সঙ্গে চাই শরীরচর্চা।
– ঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকা সব ঋতুতেই জরুরি। অসুস্থ অবস্থায় ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখলে সেই জীবাণু ঘরের মধ্যেই ঘোরাফেরা করবে। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে।
– সময় মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাও গুরুত্বপূর্ণ।
– ১০১.৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি তাপমাত্রার জ্বর ও সঙ্গে শরীর ব্যথা যদি ১০ থেকে ১২ পর্যন্ত থাকে তবে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
মনে রাখতে হবে
এই সাধারণ রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ঘরোয়া উপায় অবলম্বন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে আপনা থেকেই রোগ সেরে যাবে।
সূত্রঃ বিডিনিউজ