অনলাইন ডেস্কঃ
প্রতি বছরই আসে ১৬ ডিসেম্বর, আসে বিজয়ের দিন। আবারও ‘বিজয় কেতন উড়ল’ দেশজুড়ে। বিজয়ের রঙে রাঙিয়ে দেশব্যাপী উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো ৪৮তম মহান বিজয় দিবস। ৩০ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাঋদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার নতুন করে বজ্রকঠিন শপথ নিয়েছে বীর বাঙালি। শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবার কণ্ঠে-গানে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়েছে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’। আর বিজয়ের এ উদযাপনের রঙের সঙ্গে ছুঁয়ে গিয়েছিল একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী আমেজ। আগামী নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধীদের মদদদাতাদের কোনো প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রদ্ধা জানাতে আসা সাধারণ মানুষ। তারা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
বিজয় দিবসকে ঘিরে গতকাল রোববার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ সারাদেশে ছিল আনন্দঘন নানা কর্মসূচি। রাজধানীর তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দর এলাকায় সূর্যোদয়ের সময় ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ভবনের শীর্ষে উত্তোলিত হয় ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। শোভা পেয়েছে সব রকমের যানবাহনেও।
সূর্যোদয়ের পর থেকেই বিজয়ের উৎসবে মেতে উঠতে শুরু করে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ। সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলোও জাতীয় পতাকার পাশাপাশি রঙবেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, বেলুন দিয়ে বর্ণাঢ্য সাজে সাজিয়ে তোলা হয়। বিভিন্ন দল ও সংগঠনসহ ব্যক্তি উদ্যোগে পাড়ায় পাড়ায় এবং অলিগলিতে মাইকে বেজেছে দেশাত্মবোধক গান এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিস্মরণীয় ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ‘… এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম…’।
বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অন্যান্য বছরের মতো ফুল, ফলমূল এবং মিষ্টান্ন রাজধানীর মোহাম্মদপুরস্থ গজনবী রোডে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১) পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার এস এম খুরশীদ-উল-আলমের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা এগুলো পৌঁছে দেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে লাখো মানুষের ঢল :ভোর সাড়ে ৬টায় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করেন তারা। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়। বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে তখন।
এর পর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে আবারও স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাও জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ড. কামাল হোসেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. কামাল বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে। কিন্তু যে লক্ষ্যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, তা আজও পূরণ হয়নি। সারা বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের বিজয় এনেছিল। একাত্তরের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের মানুষ আবারও মুক্তি আনবে।
বিএনপির পক্ষে শ্রদ্ধা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ দলীয় নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা জানানো শেষ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিজয়ের মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে। এই নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার জন্য বিরোধীদের ওপর সরকার নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে, হামলা করা হচ্ছে, গুলি চালানো হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে।
এদিকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগ করার পর সর্বস্তরের জনতার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ওই সময় থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা জানান। একপর্যায়ে লাখো মানুষের ঢল নামে সেখানে।
শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে আসা একাত্তরের সম্মুখসমরের যোদ্ধা খন্দকার মো. হামিদ রনজু বললেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। সেই আদর্শের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মূল আদর্শ এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।
আরেক মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বললেন, একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা এখন মূল লক্ষ্য। সেখানে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো অপশক্তি থাকতে পারবে না।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আগে থেকেই জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এত বড় একটা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ সময় দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের।
এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে পুলিশ কমিউনিটি পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী। বিশাল পর্দায় প্রদর্শিত হতে থাকে বাঙালির ত্যাগের ইতিহাস। আয়োজন করা হয় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি। বিকেলে ছিল স্বাধীনতার সঙ্গীতানুষ্ঠান।
স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সিপিবি, জাতীয় পার্টি-জেপি, বিকল্পধারা, বাসদ, ন্যাপ, জাগপা, গণআজাদী লীগ, সাম্যবাদী দল, তরীকত ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্ক্সবাদী), এনপিপি, পিডিপি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবদল, শ্রমিক দল, ছাত্রদল, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়ন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউট, জাতীয় জাদুঘর, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, খেলাঘর, কচিকাঁচার মেলা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি, স্বাচিপ, বিএমএ, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট, মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, পরমাণু শক্তি কমিশন, সিআরপি, গণবিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল, রাজউক, অগ্রণী ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, টিইউসি, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় কমিটি, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বিসিএস কৃষি অ্যাসোসিয়েশন, সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্র, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, গণসংহতি আন্দোলন, সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন।
বঙ্গবন্ধু ভবনে জনতার ঢল :বিজয় দিবসে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের কর্মসূচিকে ঘিরে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণেও ছিল মানুষের ভিড়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। এর পর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে আরেকবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে বিভিন্ন দল ও সংগঠন নেতাদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনে জনারণ্য সৃষ্টি হয় সেখানে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিজয় শোভাযাত্রা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শপথ, পতাকা মিছিল, মিলাদ ও মোনাজাতসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করেছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিজয় উৎসব :মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আনন্দে মেতে উঠেছিল জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ। শীতের সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর বৈচিত্র্যময় করে তোলে এ আয়োজনকে। ক্লাব প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ উৎসবে সাংবাদিকরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অংশ নেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্যর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি হাসান হাফিজ, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর ফিরোজ, আবদুল হাই সিকদার, রফিক ভূঁইয়া, কামাল চৌধুরী, খোন্দকার মোজাম্মেল হক, বজলুর রায়হান, কমল চৌধুরী প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল।
ঢাবিতে নানা আয়োজন : সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচির সূচনা হয়। সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত হয়ে ৬টা ৩৫ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের উদ্দেশে যাত্রা করেন। এদিকে সকাল থেকেই ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) দিনব্যাপী স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- হলগুলোতে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ছায়ানটের যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় টিএসসি মিলনায়তনে হয় বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দিবসটি উপলক্ষে বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল, মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় ‘একটি মানচিত্রের জন্ম’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) করিডরে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
সিপিবির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান :বিজয় দিবসের তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার শেষ দিনে বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি (সিপিবি) গতকাল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তিভবনের সামনে এই অনুষ্ঠানে আবৃত্তি ও গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উদীচীর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রদীপ ঘোষ।