নাসরিন সুলতানাঃ
লিখতে চাইছিলাম না এটা নিয়ে আর কিছু।’তনু”তনু’ করে গলা শুকিয়ে এসে বুঝতে পেরেছিলাম যে, অপরাধীর বিচার তখনই হয়,যখন ভিক্টিম অপরাধীর চেয়ে বেশি প্রভাবশালী হয়। বরের হাতে খুন হওয়া “মাম্মী”হ হত্যার রায় খুব দ্রুততম সময়ে ঘোষণা এবং কার্যকর উভয়ই হয়েছিল। কারণ, মাম্মী ৫ এডভোকেট ভাই এর একমাত্র বোন,ধনী পরিবারের সন্তান আর তার বর ছিল সামান্য লজিং টীচার।
মূল কথায় আসি, সাম্প্রতিক সময়ে যে চার সন্তানের মায়ের ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে,এই ঘটনার পরে অনেকে আন্তরিক কষ্ট থেকেই বলছেন – এই মায়ের মরে যাওয়া উচিত,উনার সন্তানদেরও এই কষ্টে, অপমানে মরে যাওয়ার কথা।
প্লিজ, ডোন্ট ; প্লিজ,ডোন্ট সে লাইক দিস।
আমি তো বলি যে, ধর্ষণের শিকার হওয়া খুনের শিকার হওয়ার চেয়ে জঘন্য।আমি তো বলি যে, এই দেশে প্রতিটা মেয়ের লাইসেন্স করা রিভলভার থাকা দরকার,ধর্ষনের শিকার হওয়ার চেয়ে,প্রতিরোধ করতে গিয়ে খুনী হওয়া ভাল।এটি এমনই জঘন্য মাত্রার অপরাধ।কিন্তু,প্লিজ,তবু বলবেন না যে, ভিক্টিমের এই অপমানে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ভাল।বরং বলুন,ধর্ষণ অন্য খুন,ছিনতাই,ডাকাতির মত একটি জঘন্য অপরাধ বটে,কিন্তু এটার ফলে নারীর সম্মান যায় না,অপরাধীর সম্মান যায়।অপরাধীর ছবি,পরিচয় ভাইরাল করেন,সে নারীর মুখ এবং পরিচয় নয়। যেন সে অপরাধীর কাছে কেউ মেয়ে বিয়ে না দেয়,যেন সে অপরাধী বিবাহিত হলেও তার পরিবার লজ্জায়, অপমানে তাকে ত্যাগ করে।
কিন্তু, মেয়েটিকে বলুন যে, এটা শুধুই শারীরিক অত্যাচার, এটার ফলে আপনার পরিবার,সন্তান কিছু হারায়নি,তাদের কাছে আপনার সম্মান এতটুকুও কমেনি,বরং তারা আরো বেশি যত্ন নেবে আপনার।
ভিক্টিম অবিবাহিতা হলে বলুন, এটা আপনার সতীত্বহানি নয়, শুধুই শারীরিক অত্যাচার, আপনার পরিচয় শুধু আপনার কাজে,আপনার ব্যক্তিত্বে। চিকিৎসার জটিলতা কাটিয়ে অন্য সবার মতো আপনিও একজন সাধারণ মানুষ। মেয়েটির বিয়ের প্রস্তাবে তার উপরে হয়ে যাওয়া অপরাধের ট্যাবু বসাবেন না,তার দিকে ভিন্ন চোখে তাকাবেন না,তাকে সান্তনার নামে আরো ভারনারেবল ভাবতে উদ্ভুদ্ধ করবেন না।
প্লিজ, এমন কথা বলবেন না,যেটা তাকে হীনমন্যতা, লজ্জাবোধ, অপমানবোধ এবং পরিশেষে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়। তার আত্মহত্যাকে গ্লোরিফাই করার চেষ্টা করবেন না।
#say_no_to_rape_&_Rapist
#Be_with_victim_with_courage
লেখক: লেকচারার, আইন বিভাগ, সি.বি.আই.ইউ।