অনলাইন ডেস্কঃ
বাঙালির মুক্তি আন্দোলনের দিনগুলোতে ভিন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে থেকে লড়েছেন অভিন্ন লক্ষ্যে পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে, বহু দিন পর সেই সময়ের ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী নাজমা শামসকে পেয়ে তাই উচ্ছ্বসিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে বুধবার বিকেলে গণভবনে আসেন বাংলাদেশ স্কাউটসের গার্লস ইন স্কাউটিং বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নাজমা।
১৯৬৬-৬৭ সালে ছাত্রলীগ থেকে ইডেন কলেজের ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ওই নির্বাচনেই নাজমা শামস সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ছাত্র ইউনিয়ন থেকে। রাজনৈতিক মতভিন্নতা থাকলেও পরেও দুজনের সম্পর্ক এগিয়ে চলেছে বন্ধুত্বের হাত ধরে।
তাই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ এলেও শেখ হাসিনার বিশেষ দৃষ্টি যায় নাজমা শামসের দিকে। পুরনো দিনের বন্ধুকে আলিঙ্গনে নেন শেখ হাসিনা, যিনি চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন।
দুই বন্ধুর সাক্ষাতে প্রণোচ্ছ্বল শেখ হাসিনার সামনে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন নাজমা শামসও। দুজনে একসঙ্গে ছবি তোলেন, গল্পে মেতে ওঠেন, ফিরে যান ৫০ বছর আগের স্মৃতিতে।
তাদের এই আনন্দঘন সাক্ষাৎ নিয়ে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।
তিনি লিখেছেন, “উত্তাল দিনগুলোতে রাজপথে ছিলেন একসাথে। রাজনীতির আদর্শের মতভিন্নতা ছিল। দেশের প্রশ্নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথ কাঁপিয়েছেন। সেই সম্পর্ক এখনো অটুট আছে। শত ব্যস্ততার মাঝেও দেখা হলেই স্মৃতিচারণে মেতে উঠেন। কৈশোরের সেই দিনগুলোতে বারবার ফিরে যান। কী রকম ছিল সেই আন্দোলনের দিনগুলি, সেই সময়ের ছাত্র রাজনীতিসহ নানা খুনসুটি।
“এরই একজন বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হ্যাট্রিক জয়ে দেশের চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শিগগিরই শপথ নিবেন। এই শেখ হাসিনা এখন শুধু আর বঙ্গবন্ধুকন্যা, দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতি কিংবা দেশের প্রধানমন্ত্রীই নন। তিনি এখন পুরা বিশ্বের বিস্ময়। যিনি গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তৃতীয় বিশ্বের ভঙ্গুর অর্থনীতির একটি দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নতির শিখরে। বিশ্ব মোড়লরা এখন বাংলাদেশের দিকে অবাক হয়ে তাকায়। বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখে, সমীহ করে চলে। তা সম্ভব হয়েছে শুধু শেখ হাসিনার ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বের কারণেই।
“আরেকজন… প্রফেসর নাজমা শামস। বর্তমানে বাংলাদেশ স্কাউট গার্লস ইন স্কাউটিং ফোরাম জাতীয় কমিটির সভাপতি। আজ গণভবনে এসেছিলেন ছাত্রজীবনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্ধীকে অভিনন্দন জানাতে। দেখেই একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেন। তাদের মধ্যে সম্পর্কের এই উষ্ণতা দেখে অভিনন্দন জানাতে আসা সকলের উৎসুক দৃষ্টি তখন সেদিকে। একে একে ক্যামেরাগুলোর ফ্লাশলাইট ঝলসে উঠল।”
খোকন লিখেছেন, “তখন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই মুখ খুললেন। জানালেন, তিনি যখন ইডেন কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন তখন প্রফেসর নাজমা শামস ছিলেন জিএস। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন ছাত্রলীগ থেকে, আর নাজমা শামস ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন থেকে। কিন্তু সম্পর্কটা ছিল খুবই আন্তরিকতায় ভরপুর। সেই সম্পর্ক এখনো আছে।”