অনলাইন ডেস্কঃ
• বেলা ১১টায় শপথ
• ঐক্যফ্রন্টের সাংসদদের শপথ অনিশ্চিত
• সংসদ নেতা ঠিক করতে আজ আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা
• শপথ অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে সংসদ সচিবালয়
• জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি।
• ১০ জানুয়ারির আগেই নতুন মন্ত্রিসভা, তবে শনি বা রোববারও হতে পারে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যরা আজ বৃহস্পতিবার শপথ নেবেন। বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে এই অনুষ্ঠান হবে। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত বিএনপি ও গণফোরামের সাত সাংসদ আজ শপথ নেবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকেও বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়নি।
নির্বাচিত সাংসদদের শপথের পর আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে মন্ত্রীদের শপথ ও নতুন সরকার গঠন করা হতে পারে। এর আগে আজ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সংসদ নেতা ঠিক করা হবে। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই থাকছেন এবং তিনিই হবেন নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী, এটা নিশ্চিত।
এখন সবার আগ্রহ নতুন মন্ত্রিসভায় সদস্য হিসেবে কারা থাকছেন এবং বর্তমান মন্ত্রিসভার কারা বাদ পড়ছেন তা নিয়ে। দুই দিন ধরেই প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এ নিয়ে আলোচনা করতে দেখা গেছে। এমনকি বর্তমান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যেও এ নিয়ে আলোচনা আছে। তবে বিষয়টি একেবারে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার হওয়ায় এ বিষয়ে কেউ পরিষ্কার করে বলতেও পারছেন না। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতারাও ধারণা করে কথা বলছেন।
সরকারি ও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রের ধারণা, নতুন মন্ত্রিসভায় বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যদের আধিক্য থাকছে। তবে কয়েকজন মন্ত্রী বাদ পড়তে পারেন।
সরকারি সূত্রমতে, আগামী শনি বা রোববার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা আছে। অবশ্য এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন এবং কলেবর সম্পর্কে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি প্রয়োজন মনে করলে হয়তো কারও সঙ্গে আলাপ করতে পারেন। ঐকমত্যের সরকার গঠন করা হবে কি না—এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ১০ জানুয়ারির আগেই সব হয়ে যাবে।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়। এর মধ্যে ফলাফল স্থগিত হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন বাদে গত মঙ্গলবার রাতে ২৯৮টি আসনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর ইসি সচিবালয় শপথের বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে গতকাল জাতীয় সংসদ সচিবালয়কে চিঠি দিয়েছে।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, শপথ অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। নবনির্বাচিত সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিদায়ী স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নবনির্বাচিত সাংসদদের শপথ পড়াবেন। স্পিকার নিজেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ জন্য জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী, নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ পড়ানোর আগে তিনি নিজে শপথ নেবেন।
রেওয়াজ অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সদস্যরা প্রথমে শপথ নেবেন। এরপর ক্রমানুসারে অন্য দলের সাংসদেরা শপথ নেবেন। শপথ শেষে নতুন সংসদ সদস্যরা সংসদ সচিবালয়ের স্বাক্ষর খাতায় সই করবেন। সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট হওয়ার তিন দিনের মধ্যে শপথ করাতে হয় এবং ৩০ দিনের মধ্যে সংসদ অধিবেশন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, শপথ অনুষ্ঠান শেষে আজ দুপুর ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের সরকারি দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় সংসদ নেতা নির্বাচন করা হবে, যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন।
৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নেতৃত্বাধীন মহাজোট পেয়েছে ২৮৮টি আসন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ একাই জিতেছে ২৫৭টি আসনে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় দলটি টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে ৭টি আসন। এর মধ্যে বিএনপি এককভাবে পেয়েছে ৫টি ও গণফোরাম ২ টি। নির্বাচনে এককভাবে ২২টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হয়েছে জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সূত্রমতে, একাদশ সংসদে জাতীয় পার্টিই বিরোধী দল হতে যাচ্ছে। তবে বর্তমান মন্ত্রিসভার মতো সরকারেও তারা থাকছে। যদিও জাতীয় পার্টি এ বিষয়ে গতকাল পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানায়নি। আজ বৃহস্পতিবার দলটির সিদ্ধান্ত জানানোর কথা।
সূত্রঃ প্রথম আলো