অনলাইন ডেস্কঃ
বেতনভাতা ও অন্যান্য সুবিধা আইন দ্বারা নির্ধারিত
প্রধানমন্ত্রীর মাসিক বেতন ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা
একজন মন্ত্রীর মাসিক বেতন ১ লাখ ৫ হাজার টাকা
একজন প্রতিমন্ত্রীর বেতন মাসে ৯২ হাজার টাকা
একজন উপমন্ত্রীর বেতন ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা
দেশের প্রধানমন্ত্রীর মাসিক বেতন ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। মন্ত্রীরা পান ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, প্রতিমন্ত্রীরা ৯২ হাজার টাকা এবং উপমন্ত্রীরা ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা করে বেতন পান। বেতনের বাইরেও তাঁরা নানা ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের বেতনভাতা ও অন্যান্য সুবিধা আইন দ্বারা নির্ধারিত।
দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর মাসিক বেতন ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। প্রধানমন্ত্রীর জন্য সরকারি বাসভবন (গণভবন) রয়েছে। সে ভবনের আসবাব এবং রক্ষণাবেক্ষণ সব হবে সরকারি খরচে। যদি প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবনে থাকতে না চান, তিনি নিজের বাসা বা ভাড়া বাসায়ও থাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তিনি বাসা ভাড়া বাবদ মাসে ১ লাখ টাকা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী সারা বছরের বিনোদনে খরচ হওয়া ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে পাবেন। প্রধানমন্ত্রী নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের ভ্রমণভাতা এবং দেশে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসুবিধা পান। প্রধানমন্ত্রী ভ্রমণে থাকা অবস্থায় দৈনিক ৩ হাজার টাকা করে ভাতা পান।
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের বেতনভাতা
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীরা কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তা নির্ধারণ করা আছে ‘দ্য মিনিস্টার্স, মিনিস্টার অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টার্স (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) অ্যাক্ট’-এ। একজন মন্ত্রীর মাসিক বেতন ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। প্রতিমন্ত্রীর বেতন মাসে ৯২ হাজার টাকা এবং উপমন্ত্রীর বেতন ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা। তাঁদের বেতনের টাকা করমুক্ত। এ ছাড়া একজন মন্ত্রী মাসিক ১০ হাজার টাকা, প্রতিমন্ত্রী ৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং উপমন্ত্রী ৫ হাজার টাকা ভাতা পাবেন।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীরা সরকারি খরচে একটি করে গাড়ি পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া একটি জিপও পেয়ে থাকেন অফিশিয়াল কাজে বিশেষত ঢাকার বাইরে ব্যবহারের জন্য। এই গাড়ি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিভাগ, অধিদপ্তর সরবরাহ করে থাকে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীরা সরকারি বাসভবন পান। মন্ত্রীরা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকার আসবাব, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ৪ লাখ টাকার আসবাব পেয়ে থাকেন।
তবে সরকারি বাসভবনে না থাকলে একজন মন্ত্রী মাসে ৮০ হাজার টাকা এবং প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী ৭০ হাজার টাকা করে মাসিক বাসাভাড়া পাবেন। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, টেলিফোনসহ বিভিন্ন পরিষেবা বিলও সরকার পরিশোধ করবে। আবার যদি এমন বাসায় থাকেন যেখানে গৃহ নিরাপত্তারক্ষীদের থাকার ব্যবস্থা নেই, সেখানে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে সাময়িকভাবে ছাউনি বা শেড করে দেবে সরকার।
দেশের ভেতরে প্লেন, ট্রেন ও লঞ্চে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীরা বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিমানে ভ্রমণের জন্য তাঁরা পান বার্ষিক ৮ লাখ টাকার বিমা সুবিধা। দেশের বাইরে অফিশিয়াল ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকার নিয়ম অনুযায়ী ব্যয় বহন করবে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে সদর দপ্তরের বাইরে অবস্থান করলে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করে এবং উপমন্ত্রী দেড় হাজার টাকা করে ভাতা পেয়ে থাকেন।
একজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তাঁর নিজের পছন্দ অনুযায়ী উপসচিব পদমর্যাদার একজন একান্ত সচিব, সহকারী সচিব বা জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পদমর্যাদার একজন সহকারী একান্ত সচিব এবং সরকারি কর্মকর্তার বাইরে নিজের পছন্দের একজন সহকারী একান্ত সচিব পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া দুজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, একজন জমাদার, একজন আর্দালি, দুজন এমএলএসএস ও একজন পাচক পেয়ে থাকেন।
একজন উপমন্ত্রী পেয়ে থাকেন একজন একান্ত সচিব, একজন ব্যক্তিগত সহকারী, একজন জমাদার, একজন আর্দালি ও একজন এমএলএসএস।
একজন মন্ত্রীর বাসভবনে সরকারি খরচে একটি করে টেলিফোন থাকবে। এ ছাড়া মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা অফিস ও সরকারি বাসভবনে ইন্টারনেট সুবিধা ও মোবাইল ফোন পেয়ে থাকেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা যে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পান, তা খুব বেশি না। আবার আর্থসামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় খুব কমও না। তবে সরকারি অর্থের যাতে অপচয় না হয়, সেটা দেখা সবার দায়িত্ব। এ বিষয়ে মন্ত্রীরা যত্নবান হবেন—এটাই প্রত্যাশা।