অনলাইন ডেস্কঃ
এবারের সংসদে বিগত দশম সংসদের সংরক্ষিত আসনের আওয়ামী লীগের এমপিদের মধ্যে তেমন কেউই থাকছেন না। জেলা কোটা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত এবং বিভিন্ন সেক্টরে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে— এমন নারীরা একাদশ সংসদের সংরক্ষিত আসনের জন্য বিবেচিত হবেন। পাশাপাশি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যেসব পরিবারের পুরুষ সদস্যরা লাভজনক পদে নেই, সেসব পরিবারের নারীরাও এ পদের জন্য বিবেচিত হবেন।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, যেসব জেলা থেকে দীর্ঘদিন সংরক্ষিত মহিলা আসনে কেউ এমপি ছিলেন না, সেসব জেলার মহিলা, যুব মহিলা বা সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের কারো কারো কপাল খুলতে পারে। কপাল খুলতে পারে অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র জগতের দুই-একজনেরও। আর সাবেক এমপি, কিন্তু পরবর্তীতে আর মনোনয়ন পাননি অথচ দলের জন্য অবদান আছে বা ভালো ইমেজ আছে, তাদের সংরক্ষিত আসনে এমপি বানানো হতে পারে। এ পদে আসতে পারে বিভিন্ন পেশাজীবী থেকেও দুই-একজন। তবে, যেখান থেকেই সংরক্ষিত আসনের এমপি হোন, দলের জন্য তাদের থাকতে হবে ত্যাগ, দুঃসময়ে দলের জন্য অবদান। পাশাপাশি তাদের হতে হবে জনঘনিষ্ঠ এবং হতে হবে ভালো ইমেজের।
ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি নির্বাচনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার আলোচনা আছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি প্রথম অধিবেশন শুরুর ৭ দিনের মধ্যেই সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মনোনয়ন ফরম জমা থেকে শুরু করে নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত ১০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে এ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হতে পারে।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে, দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানা সূত্রে এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানা যায়।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পূর্বে যেসব জেলা সংরক্ষিত এমপি থেকে বঞ্চিত হয়েছে, সেসব জেলা থেকে সংরক্ষিত আসনে এমপি মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলেই আমরা দল মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করবো।’
প্রসঙ্গত, প্রতি ৬টি আসনের বিপরীতে একটি সংরক্ষিত নারী এমপি করার বিধান রয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের মোট আসন ২৮৭টি। এর মধ্যে একক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৬টি আসন। জোটগত হিসাবে ক্ষমতাসীনদের ৫০টি সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের মধ্যে প্রাপ্ত আসন দাঁড়ায় ৪৮টি, আর দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ পায় ৪৩টি। আবার মহাজোটে জাতীয় পার্টিকে ২২টি আসনের বিপরীতে ৪টি দিয়ে ১৪ দলের শরিকদের নিয়ে আওয়ামী লীগের হাতে থাকে ৪৪টি আসন। মহাজোটের অন্য দলগুলোর কোনওটিই এককভাবে ৬টি আসন না পাওয়ায় তারা কেউ সংরক্ষিত আসনে মহিলা এমপির মনোনয়ন দিতে পারবে না।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২ জন নারী সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ১৯ জনই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে। জাতীয় পার্টি থেকে দুজন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে একজন নির্বাচিত হয়েছেন। গত দশম জাতীয় সংসদে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত নারী এমপি ছিলেন ২৩ জন।