আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের আগে কথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ’কে প্রচারণার হাতিয়ার করলেও এবার ভারতের শাসক দল বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে কোনো বাংলাদেশি অবৈধ পন্থায় ভারতে প্রবেশ করেনি।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আসাম বিজেপির দুই মুখপাত্র বলেছেন, সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশিরা এখন ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশগুলোতে যাচ্ছে। ভারতের দি ইকোনমিক টাইমস এ খবর দিয়েছে।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচন এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে আসামে প্রচারণা চালাতে গিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ প্রশ্নকে বারবার সামনে এনেছিল বিজেপি। হুমকি দিয়েছিল অবৈধ বাংলাদেশিদের বিতাড়িত করার।
তবে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে রাজ্যের শাসক দল বিজেপির মুখপাত্র স্বপ্নীল বড়ুয়া বলেন, ‘এখন আর অনুপ্রবেশ হচ্ছে না। অবৈধভাবে প্রবেশের বিষয়টি অনেক আগের। আমরা বলতে পারি, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে কোনো অনুপ্রবেশ হয়নি।’
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কারণে বাংলাদেশিরা ভারতে অনুপ্রবেশ করছে না। তারা এখন ইউরোপীয়, উপসাগরীয় কিংবা অন্য উন্নত অঞ্চলগুলোতে যাচ্ছে। ইউরোপ কিংবা উপসাগরীয় দেশগুলোতে দৈনিক ন্যূনতম মজুরি প্রায় তিন হাজার রুপি। ভারতে তারা সর্বোচ্চ এক হাজার রুপি আয় করতে পারে।
প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে যাওয়া মুসলিমদের নাগরিকত্ব না দেওয়ার বিধান রেখে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল পাস হওয়ার একদিনের মাথায় অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে এমন বক্তব্য হাজির করা হলো।
১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর ভারতে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের নাগরিকত্বের সুযোগ ছিল না। তবে সংশোধিত বিলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশকারী অমুসলিমদের (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, শিখ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ভুক্ত) নাগরিকত্বের বিধান রাখা হয়েছে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কারণে অনুপ্রবেশ বাড়বে।
তবে বিজেপি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে, নাগরিকত্ব (সংশোধিত) বিলকে ব্যবহার করে নতুন করে কারও অনুপ্রবেশের সুযোগ নেই। মমিনুল আওয়াল নামে বিজেপির মুখপাত্র বলেন, নাগরিকত্ব বিল (সংশোধিত) পাস হলে নতুন করে কোনো হিন্দু বাংলাদেশি ভারতে অনুপ্রবেশ করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘নতুন করে আগত মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কোনো সুযোগ ও বিধি নেই। আগে থেকে বসবাসকারীদের ক্ষেত্রেই কেবল এই বিধান প্রযোজ্য। শুধু তারাই আবেদন করতে পারবে এবং সংশ্লিষ্টরা সেসব আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করবে।’