লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
গরমে ঘাম হয়। আর সেই ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় পানি। ডাক্তারি ভাষায় যাকে বলা হয় ডিহাইড্রইশন বা পানিশূন্যতা।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান এই বিষয়ে বলেন, “ডায়রিয়া, কলেরা ইত্যাদি রোগ থেকে পানিশূন্যতা হতে পারে। তবে গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যাওয়ার কারণেও পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হওয়া সম্ভব।”
এই চিকিৎসক জানান, পানিশূন্যতাকে মাইল্ড বা হালকা, মডেস্ট বা মাঝারি এবং সেভিয়ার বা মারাত্মক— এই তিনভাগে ভাগ করা হয়।
তিনি বলেন, “পাতলা পায়খানা ও বমি হলে পানিশূন্যতা হতে পারে। আর ত্বক, জিহ্বা ইত্যাদি শুকনা হয়ে থাকলে বুঝতে হবে শরীর পানিশূন্যতায় ভুগছে। রোগীর অবস্থা বোঝার জন্য তার ত্বকে চিমটি দিয়ে ধরে ছেড়ে দিয়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা মাপা হয়। ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে যত বেশি সময় লাগবে, বুঝতে হবে রোগীর পানিশূন্যতা ততই বেশি।”
“পানিশূন্যতার কারণে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম কমে যায়। বিশেষত, পাতলা পায়খানার কারণে পানিশূন্যতা হলে সোডিয়াম কমে আর বমির কারণে হলে পটাশিয়াম কমে। অবস্থা মারাত্বক হলে কিডনি ফেইলিয়র বা বৃক্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ডাক্তারি ভাষায় যাকে বলা ‘অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি’। এঅবস্থায় রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।”
পানিশূন্যতা থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
ডা. হাসান বলেন, “একজন ৬০ কেজি ওজনের মানুষের দৈনিক আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করা আবশ্যক।”
তিনি আরও বলেন, “ওজন বেশি হলে আরও বেশি পানি পান করতে হবে। প্রয়োজনে গরমে বাইরে থেকে এসে স্যালাইন খেতে হবে। এছাড়াও তরমুজ, কমলা, পেঁপে, আনারস ইত্যাদি ফল আস্ত কিংবা জুস করে খেলেও উপকার হবে।”
লেবুর সরবতও বেশ উপকারী।
তবে রাস্তা বা ফুটপাথে বিক্রির সরবত খাওয়া বিষয়ে ডা. হাসান বলেন, “পানিশূন্যতায় লেবুর সরবত অবশ্যই উপকারী। তবে এসব সরবত বিক্রেতাদের ব্যবহার করা পানি এবং অন্যান্য উপকরণগুলো কতটা স্বাস্থ্যসম্মত তা নিয়ে সন্দেহ আছে। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে সরবত তৈরি করে, এরকম কোনো বিক্রেতা জানা থাকলে খাওয়া যায়।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ