গিয়াস উদ্দিন ভুলু:
পবিত্র ঈদুল ফিতরের মাত্র আর ১৩ দিন বাকি অথচ টেকনাফ পৌর শহরের ব্যয় বহুল মাকের্ট ও শপিংমল গুলো এখনো ইদের বাজার জমে উঠেনি। সীমান্ত নগরী এই পৌর শহরে রয়েছে প্রায় ১৫-২০টি ব্যয় বহুল মাকের্ট। প্রতি বছর এই সময়ে পবিত্র ইদুল ফিতরকে সামনে রেখে জমে উঠে ইদের কেনা কাটার বাজার।
টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ইদের কেনা কাটা করতে ছুটে আসে শত শত যুবক-যুবতী, নারী পুরুষ, শিশু-কিশুর ও বৃদ্ধারা। এই সময়ে দোকানদারা বেচা কেনার জামেলাই অতিষ্ট হয়ে পড়ত। প্রতিটি মাকের্টে দেখা যেত ক্রেতাদের ভিড় বিক্রি হত লক্ষ লক্ষ টাকা। সেই উদ্দেশে এই বছরও ব্যবসায়ীরা প্রতিটি দোকানে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন রকমের ঈদের জামা কাপড় ক্রয় করে দোকান সাজিয়েছে। মাহে রমজানে ১৭টি রোজা পার হয়ে গেলেও তেমন কোন বেচা কেনা ও ক্রেতাদের আগমন না ঘটায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দোকানিরা পড়েছে বিপাকে।
২২ জুন, বুধবার টেকনাফ পৌরসভার বিভিন্ন মাকের্ট ও শপিংমল গুলো ঘুরে দেখা যায়, এইবারের ঈদের বাজার জমে না উঠায় ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। টেকনাফের উল্লেখযোগ্য মাকের্ট গুলো হচ্ছে, বার্মিজ মার্কেট, আলী উল্লাহ শপিং কমপ্লেক্স, আলী আহম্মদ মার্কেট, এজাহার কোম্পানি মার্কেট, বড় বাজার শপিং কমপ্লেক্স, ফরিদ মার্কেট, মদিনা সিটি , কালা মিয়া হাজী মার্কেট, হাই স্কুল মার্কেট, হাজী আবদুল গনি মাকের্ট, এই মাকের্ট গুলোতে এখনো ঈদ কেনা কাটার বাজার জমে উঠেনি। এবং দুর দুরান্ত থেকে ক্রেতাদের আগমনও ঘটেনি।
এদিকে বিভিন্ন সুত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের যৌথ অভিযানে অপরাধীদের ধর পাকড় শুরু হলে হঠাৎ করে পৌর শহরের বিভিন্ন মাকের্ট গুলোতে এক প্রকার শূণ্য অবস্থা বিরাজ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফের একজন বিশিষ্ট্ ব্যবসায়ী আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, সীমান্ত নগরী টেকনাফ উপজেলার বেশিরভাগ যুব সমাজ বিভিন্ন প্রকার অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অপরাধ হচ্ছে মাদক ব্যবসা। এই ব্যবসায়ীরা সারা বছর এলাকায় না থাকলেও পবিত্র রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে এলাকায় অবস্থান করে থাকে। প্রতি বছর তাদের আগমনে জমে উঠে ঈদের বাজার। দোকানদারাও তাদের কাছে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা।
কিন্তু এই বছর রমাজানের শুরুতে পুলিশ, বিজিবির সাঁড়াশি অভিযানের ধর পাকড়ের ভয়ে অপরাধীদের পাশাপাশি নিরাপরাধ অনেকে আজ এলাকা ছাড়া হওয়ায় টেকনাফের মাকের্ট ও শপিংমল গুলো এই কেনা কাটার ভরা মৌসুমেও ক্রেতাহীন মার্কেটে পরিণত হয়েছে।
এদিকে কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিমত প্রকাশ করে আমাদের রামু ডটকমকে বলেন, আমরা দোকানিরা এইভারের ঈদে হরেক রকমে নতুন নতুন ডিজাইনের ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন প্রকার জামা কাপড় এনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভরপুর করে সাজিয়েছি। ১৭ রমজান পার হয়ে গেছে অথচ এখনো আমাদের ব্যবসার সফলতা পায়নি। আসা করি ২০-২৫ রমজানের পর ক্রেতাদের আগমনে মাকের্ট গুলো জমে উঠবে। আমাদের ব্যবসাও ভাল হবে।
টেকনাফ ফরিদ মার্কেটের বিশিষ্ট্য কাপড় ব্যবসায়ী জাহেদ হোসেন দু:খ প্রকাশ করে বলেন , ঈদের বাকি রয়েছে আর মাত্র ১৩ দিন অথচ এখনো তেমন কোন ক্রেতাদের দেখা মিলছেনা। বেচা কেনা খুবই কম। বেশি টাকা মুনাফার আশায় লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে নিত্য নতুন কাপড় দিয়ে দোকান সাজিয়েছি। গত বছর এই সময়ে আমরা অনেক টাকা ব্যবসা করেছি কিন্তু এই বছর দেখা যাচ্ছে অন্য চিত্র। ক্রেতাদের তেমন কোন আগমন না হওয়ায় মাকের্ট ও দোকান গুলো ফাঁকা হয়ে রয়েছে।