নিউজ ডেস্কঃ
অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষকদের হুমকি ও বিদ্যালয়ে তালা ঝুলানোর অভিযোগে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন কক্সবাজার সদরের উপকূলীয় চৌফলদন্ডী সাগরমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুচ্ছবিহসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল রাতে থানায় দায়ের করা অভিযোগে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীসহ আটজনকে সাক্ষী করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. খায়রুজ্জামান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য একজন উপ-পরিদর্শককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে নোটিশও দেয়া হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আইনজীবী মো. নুরুচ্ছবিহ সাগরমনি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। তার কমিটির মেয়াদ চলতি মাসের ৬ তারিখ শেষ হয়েছে। নিয়মানুসারে মেয়াদ শেষ হবার আগেই নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের কথা থাকলেও স্কুল ফান্ডের টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম থাকায় তিনি নির্বাচন না দিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে পুনরায় সভাপতি হওয়ার চেষ্টা চালান। এতে কমিটির সম্পাদক হিসেবে প্রধান শিক্ষক সম্মতি না দেয়ায় মেয়াদ শেষ হবার আগের দিন ৫ এপ্রিল স্কুলের সব কক্ষে নতুন তালা লাগিয়ে দেন সভাপতির লোকজন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, নুরুচ্ছবিহের লেলিয়ে দেয়া দুর্বৃত্তরা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ অন্যরা স্কুলে এলে হামলা ও প্রয়োজনে খুন করবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দেন। ফলে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তালা ভেঙে স্কুল খোলা রাখা হলেও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি কমে গেছে।
প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে জানান, ইতোপূর্বে বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ আত্মসাৎ করেন নুরুচ্ছবিহ। এসব বিষয়ে কথা বললে দুর্ব্যবহার করতেন তিনি। এসব কথা উল্লেখ করে গত ১৯ মার্চ থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
গত ৫ এপ্রিল স্কুলে তালা দেয়ার বিষয়ে ইউএনও, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের মুঠোফোনে জানানো হলে তারা থানায় অভিযোগ দিতে বলায় লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় প্রাক্তন ও বর্তমান কয়েকজন ছাত্রকে বিভিন্ন মামলায় আসামি করার হুমকি দেন অভিযুক্ত সভাপতি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সভাপতির লালিত বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই বিদ্যালয়ের আশপাশ ও শ্রেণীকক্ষে অবস্থান করে। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত ও বিব্রত অবস্থায় থাকে। ঘটনার পরদিন থেকে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা ভয়ে স্কুলে আসছেন না। এতে পাঠদানে বিঘ্ন হচ্ছে।
তিনি অভিভাবকদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অন্যথায় প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ বিনষ্টসহ ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মো. নুরুচ্ছবিহের মুঠোফোনে কয়েকবার কল দেয়া হয়। কিন্তু ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সূত্রঃ জাগোনিউজ