অনলাইন ডেস্কঃ
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুুড়িয়ে মারা নুসরাত জাহান রাফির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ার কারণেই তার (নুসরাত) মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে নুসরাতের মরদেহের ময়নাতদন্ত শুরু হয়। নুসরাতের মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক প্রদীপ বিশ্বাস।
এছাড়া ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করা হয়। প্রভাষক প্রদীপ বিশ্বাস ছাড়াও বোর্ডের অন্য সদস্য হলেন একই বিভাগের প্রভাষক ডা. বাবলি।
ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, নুসরাতের শরীর এতই পুড়েছে যে, আমরা তাকে রক্ষা করতে পারেনি। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে কিন্তু আমরা তার বায়োলজিক্যাল টেস্টের জন্য কিছু আলামত সংগ্রহ করেছি। এছাড়া তার ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নুসরাতের কাছ থেকে সংগৃহীত আলামতের পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে কিছুদিন সময় লাগবে। রিপোর্ট পেলে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারবো।
ঢামেক পরিচালক বলেন, আমরা তাকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর কথা বলেছিলেন, কিন্তু নুসরাতের অবস্থা ভালো না থাকায় আমরা সিঙ্গাপুরে নিতে পারিনি।
উল্লেখ্য, নিজ কক্ষে নিয়ে নুসরাতকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় গেলে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
আগুনে পুড়ে চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গতকাল বুধবার (১০ এপ্রিল) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।