পাহাড়বার্তা ডেস্কঃ
বর্ণিল পোশাকে তরুণ-তরুণী আর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নানা বয়সী হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে।
বৃহস্পতিবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে। সকালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
রঙিন উৎসবে অংশ নিতে দিনের শুরুতে সব ব্যস্ততাকে পেছনে ফেলে সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জড়ো হন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ মাঠে। মুহূর্তের মধ্যে জনস্রোতে পরিণত হয় সম্প্রীতির মিছিলে।
বৃহস্পতিবার সকালে এমন দৃশ্য দেখা যায় খাগড়াছড়ি শহরে। উদ্বোধনের পরপরই পুরো শহরজুড়ে বৈসাবি উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে। সবাই মিশে যান আনন্দের মিছিলে।
এতে উপস্থিত ছিলেন- খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরজ্জামান, জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া র্যালি জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী গড়িয়া নৃত্যসহ মারমা সম্প্রদায়ের পাখা নৃত্য, জলোৎসব ও সাওতাল নৃত্য।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ের প্রধান সামাজিক উৎসব শুরু হওয়ার কথা থাকলেও একদিন আগেই খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র্যালির মধ্য দিয়ে এ উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) চাকমা সম্প্রদায়ের মূল বিঝু আর পয়লা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা। ওইদিন ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন। সেই সঙ্গে সব বয়সী মানুষ নদী-খাল অথবা ঝর্ণায় গঙ্গাদেবীর পূজা আরাধনা করবেন। ১৪ এপ্রিল (রোববার) পালিত হবে মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব এবং বাংলা নববর্ষের র্যালি।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালন করে আসছে। সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের কাছে ‘বৈসাবি’ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।