নিউজ ডেস্কঃ
ছড়াখালের পাশের সড়কের ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল এক শিশু। হঠাৎ পা পিছলে খালের ‘চোরাবালি’তে পড়ে যায় সে। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে আরেক শিশু। সেও আটকে যায় বালিতে। এভাবে আস্তে আস্তে নরম বালিতে তলিয়ে গিয়ে দুই শিশুরই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
রোববার পহেলা বৈশাখের দিন বিকেলে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহল এলাকার বগাইছড়ি খালে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, চকরিয়া ও লামার ওপর দিয়ে চলমান বগাইছড়ি খালে শ্যালো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল প্রভাবশালীরা। এ কারণে খালের বিভিন্ন স্থানে চোরাবালি বা বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রভাবশালীদের লোভের ওই চোরাবালির গর্তে পড়েই শিশু দুটির মৃত্যু হলো।
নিহত দুই শিশু হলো ডুলাহাজারা ইউনিয়নের উত্তর রংমহল গ্রামের ছরওয়ার আলম ড্রাইভারের মেয়ে সাজিয়া জান্নাত (১০) ও একই এলাকার নেজাম উদ্দিন ড্রাইভারের মেয়ে আসমাউল হোসনা (৯)।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, বগাইছড়ি খালে সৃষ্ট গর্তের পানিতে ডুবে পর পর দুই শিশুকন্যা মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
স্থানীয়রা জানান, বাড়ির মালপত্র অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় সড়ক থেকে পা পিছলে পড়ে যায় শিশু সাজিয়া। এ সময় তাকে উদ্ধার করতে নামে আসমাউল। কিছুক্ষণ পর দু’জনই তলিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা দু’জনকে উদ্ধার করে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অবৈধভাবে শ্যালোমেশিন বসিয়ে প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন ধরে বগাইছড়ি খাল থেকে বালু উত্তোলন করছিল। এ কারণে এই রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হলেও তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এ খাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের জোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।
চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ছড়াখালের গর্তে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।