লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
গোলগাল নিরীহ দেখতে একটি ফল। কাঁচা থাকতে সবুজ আর পাকলে হলদেটে। শক্ত খোসার এই ফলটি উপকারী ফল হিসেবে বেশ পরিচিত। এই ফলের গাছের নিচে ন্যাড়া নাকি একবারই যায়! ঠিক ধরেছেন! বলছি বেলের কথা। বেলে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান ছাড়াও আছে আরও অনেক পুষ্টিগুণ। ১০০ গ্রাম বেলে রয়েছে পাবেন ১.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৩১.৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ০.৩ গ্রাম ফ্যাট, ৫৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ, ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৮৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
বেল মল পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। নিয়মিত রোজ টানা ৩ মাস যদি আপনি বেলের শরবত খেতে পারেন তাহলে আপনার মল আর কঠিন থাকবে না। কোষ্ঠকাঠিন্য আর হবে না। পাকা বেলের শাঁস বের করে চিনি আর পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে খান।
ডায়েরিয়া কমায়
কাঁচা বেল ডায়েরিয়ার জন্য অব্যর্থ ওষুধ। যদি অনেক দিন ধরে আপনি এই সমস্যায় ভোগেন তাহলে বেল খান। কাঁচা বেল স্লাইস করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর তা গুঁড়া করে নিন আর এই গুঁড়া ১ চামচ নিয়ে ব্রাউন সুগার আর গরম পানিতে মিশিয়ে খান। দিনে দুই বার খেতে হবে এই পানি। আর ফল পেতে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।
পেপটিক আলসারের ওষুধ
পাকা বেলের শাঁসে সেই ফাইবার আছে যা আলসার উপশমে সাহায্য করে। সপ্তাহে তিন দিন বেলের শরবত করে খান আলসার কমাতে। এছাড়া বেলের পাতা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সেই পানি খেলেও কিন্তু অনেক কমে যায় আলসার।
ডায়াবেটিস কমায়
পাকা বেলে আছে মেথানল নামের একটি উপাদান যা ব্লাড সুগার কমাতে কাজ করে। তবে ভালো ফল পেতে পাকা বেল শরবত করে নয়, এমনিই খেতে হবে।
যক্ষ্মা কমায়
পাকা বেলে আছে অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল উপাদান, যা যক্ষ্মা কমাতে সাহায্য করে। তবে ভালো ফল পেতে আপনাকে ব্রাউন সুগারের সঙ্গে বা মধু দিয়ে বেলের শরবত করে রাতে খেতে হবে শুতে যাওয়ার আগে। এটি টানা চল্লিশ দিন খান। উপকার পাবেন।
ক্যান্সার দূরে রাখে
বেলে আছে অ্যান্টি প্রলেফিরেটিভ ও অ্যান্টি মুটাজেন উপাদান। এই উপাদান টিউমার হতে দেয় না সহজে। আর যেহেতু এই ফলে হাই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান আছে তাই ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
ম্যালেরিয়া কমায়
ম্যালেরিয়া হলে কাঁচা বেল নিয়ে গুঁড়া করে নিন। এবার ১ চামচ এই বেল গুঁড়া নিয়ে তার সঙ্গে তুলসির রস নিন। সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন দিনে দুইবার। এটি কিন্তু অসাধারণ উপকার করে।
রক্ত শুদ্ধ করে
রক্তের মাধ্যমেই পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের সব অংশে পরিবাহিত হয়। তাই রক্তের শুদ্ধ থাকাটা খুব দরকার। বেল এই রক্ত শুদ্ধ করতে খুব ভালো কাজ দেয়। খানিকটা পাকা বেলের রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খেলে এটি রক্ত শুদ্ধ করে। ট্যান দূর করে। শুধু রক্ত নয়, কিডনি ও লিভারের কাজও ঠিক করে।
লিভারের যত্ন
বেল বিটা ক্যারোটিনের সমৃদ্ধ উৎস। আর বিটা ক্যারোটিন হল লিভার ভালো রাখার অন্যতম মূল চাবিকাঠি। বেলে আছে থিয়ামিন আর রাইবোফ্লেভিন। এই দুই উপাদানই লিভারের শক্তি বাড়ায় খুব ভালোভাবে।
ব্লাড প্রেসার কমায়
বেল আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখবে। সাধারণ যেমন বেলের শরবত খান সেভাবে খেলেই হবে। মিষ্টি এই শরবত কিন্তু আপনার এই চাপ থেকে আপনাকে অনেক দূরে রাখবে।
আমাশয় কমায়
আমাশয় হলে কচি বেল টুকরো করে কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। সেই পানি পরের দিন ছেঁকে নিয়ে খান। দেখবেন এতে খুব ভালো ফল পাবেন।