পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে বুধবার চারদিনের সফরে মিয়ানমার যাচ্ছেন খবর বিডিনিউজের।
সব ভুল বোঝাবুঝি ও ভুল ধারনাকে পাশ কাটিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে নতুন সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা একটি চিঠি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব।
পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ মিয়ানমার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা ইয়াঙ্গুনের সঙ্গে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।’
মিয়ানমারে স্টেট কাউন্সেলর পদটি সুচির জন্য তৈরি করা হয়েছে যাতে করে তিনি সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা, অ্যাসোসিয়েশন এবং যে কোনও ব্যক্তির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ এবং সংসদে জবাবদিহি করতে পারেন।
পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক অং সান সুচির সঙ্গে দেখা করে চিঠিটি হস্তান্তর করবেন। এছাড়া, তিনি আর্মি প্রধান মিন অং লায়েং এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী প্রতিনিধি ইউ অং লেইল এর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘ পাঁচ দশক পরে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে এবং এর ফলে তার কাছে সবার প্রত্যাশা অনেক বেশি। ‘আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তরিক এবং প্রতিশ্রুতিশীল সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।’
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে এটি কোনও গোপন বিষয় নয় এবং স্পর্শকাতর বিষয় যেমন-রোহিঙ্গা নিয়ে এখন আলোচনা না করলে সম্পর্কের উন্নতি হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে কিছু পদক্ষেপের ফলে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা সম্পর্ক উন্নয়ন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দু’জন অপহৃত সদস্যকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উদ্ধার করা হয় এবং দ্রুত ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। মিয়ানমারের বন্যার সময় বাংলাদেশ ত্রাণ সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করে ইয়াংগুন। এছাড়া, সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন কিছু পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার।
আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ,মিয়ানমার, চীন ও ভারত বিসিআইএম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং এর প্রাথমিক আলোচনার কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে।
ওই কর্মকর্তা বলেন,আমরা বিসিআইএমকে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য একটি সুযোগ হিসাবে দেখছি। বাণিজ্যিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পেলে অনেক স্পর্শকাতর বিষয়ের সুরাহা করার পথ সহজ হয়ে যায়।
মিয়ানমারের নতুন নেতৃত্ব তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে চায়। পঞ্চশীলার ওপর ভিত্তি করে মিয়ানমার তার সীমান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
পঞ্চশীলা বা পঞ্চশীলা চুক্তি হচ্ছে পাঁচটি নীতি যার মাধ্যমে দুই বা ততোধিক দেশ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারে।
মিয়ানমার সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রধান ও সচিব বো বো সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বলেন,নতুন সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সুম্পর্ক রাখতে চায় এবং আশা করে বাংলাদেশ সরকারও সম্পর্কোন্নয়নে বাধা অপসারনে পদক্ষেপ নেবে।