লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
যারা ‘ডেস্ক জব’ করেন তারাই জানেন সারাদিন বসে থাকার কষ্ট এবং ফলাফল। পিঠ ব্যথা, চোখে জ্বলুনি, ঘাড় ব্যথা ইত্যাদি নানান সমস্যার মুল হলো সারাদিন বসে থাকা। আর দীর্ঘদিন এই জীবনযাত্রা চালিয়ে যাওয়ার স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলো আছেই।
ঘাড় ব্যথা: কিভাবে সারাদিন বসে থাকার পর তার ক্ষতিকর প্রভাবগুলো প্রশমিত তা জানানো হলো স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্যানুসারে।
চেয়ারে বসে দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে দিনশেষে ঘাড় ব্যথা হতে পারে। এর কারণ হলো কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকার সময় ঘাড় ৩০ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে, ঘাড় সোজা রাখার জন্য যতোগুলো পেশি ব্যবহার হয় তার তুলনায় ৩০ ডিগ্রি কোণে ধরে রাখতে ব্যবহার হয় বেশিসংখ্যক পেশি।
এই সমস্যা এড়াতে কম্পিউটারের পর্দা এমন অবস্থানে রাখতে হবে যাতে ব্যবহারকারীর চিবুক কম্পিউটারের পর্দার মাঝ বরাবর থাকে। এই অবস্থানে থাকলে ঘাড় সোজা থাকবে, ব্যথাও হবে না।
মনোযোগের অভাব: এক জায়গার ঠায় বসে কাজ করা কারণে শরীরে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্থ হয়, ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌছায় কম। একারণে মাথায় ঘোলাটে অনুভুতি হতে পারে এবং মনোযোগ ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যায়।
এজন্য চেষ্টা করতে হবে যতোটা সম্ভব হাঁটাচলা করতে। এতে কাজের গতি বাড়বে, বাড়বে মনোযোগও। প্রতি ঘণ্টায় একবার হলেও উঠে হাঁটাহাঁটি করতে হবে। মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় হাঁটার অভ্যাস করা যেতে পারে।
হতাশা: ‘আমেরিকান জার্নাল অফ প্রিভেনটেটিভ মেডিসিন’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসকল মধ্যবয়সী নারী দিনে সাত ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় বসে কাটান, তাদের হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা অন্যান্যদের তুলনায় বেশি।
তাই প্রতিদিন কমপক্ষে আধা ঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে নারী-পুরুষ উভয়কেই। নেতিবাচক চিন্তা হতাশাগ্রস্থ হওয়া আশঙ্কা বাড়ায়। প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটালে নেতিবাচক চিন্তা ভর করবে কম।
পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা: যারা বসে কাজ করেন তাদের বেশিরভাগেরই এই সমস্যা আছে। বসার অবস্থান সঠিক না হওয়াও এমনটা হওয়ার আরেকটি কারণ।
তাই ‘পশ্চার’ বা বসার অবস্থান ঠিক করতে হবে। একারণে হওয়া পিঠ ব্যথা সারতে অনেক সময় লাগে। ল্যাপটপে কাজ করার সময় আলাদা কিবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন। এতে সামনে ঝুঁকে থাকার প্রবনতা দূর হবে।
পায়ে ব্যথা: পা অনেকক্ষন না নড়লে বা টানটান না করলে তা ব্যথা করতে শুরু করে। নড়াচড়ার অভাবজনীত এই ব্যথায় ভুগেছেন কমবেশি সবাই। এমতাবস্থায় পায়ের পেশি টানটান করলে কিংবা কুসুম গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখলে আরাম পাওয়া যাবে বলে মনে হয়।
তবে এই সমস্যা এড়াতে চেয়ার উচ্চতা পরিবর্তন করতে হবে যাতে পা সচ্ছন্দে থাকে। পায়ের পাতা মাটিতে সমানভাবে থাকতে হবে। চেয়ারের উচ্চতা এমন হওয়া চাই যাতে আপনার হাঁটু ও নিতম্ব একই সমান্তরালে থাকে।
চর্বি জমা: কর্মক্ষেত্রে সব ধকল যায় মস্তিষ্কের উপর দিয়ে, কিন্তু শারীরিক কসরত নেই বললেই চলে। কাজের চাপে কিংবা অভ্যাসের দোষে অনেকেই খাওয়ার পরও বসেই থাকেন। একারণে কোমরের চারপাশে চর্বি জমতে শুরু করে। আর অসাড় জীবনযাত্রা কমিয়ে দেয় চর্বি খরচকারী এনজাইম তৈরির মাত্রাও। তাই প্রতি দুই ঘণ্টা কাজ করার পর ১৫ মিনিটের ছোট্ট বিরতি নিতে হবে। খাওয়ার পর ১০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করতে হবে, সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু করা যাবেনা।
সূত্রঃ বিডিনিউজ