অনলাইন ডেস্কঃ
ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার সময় আসামি জোবায়ের আহমেদ যে বোরকাটি পরেছিল সেটি উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শনিবার দুপুরে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জোবায়ের আহমেদকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পিবিআইয়ের তদন্ত দল। রাফি হত্যা মামলার আসামি জোবায়েরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে বোরকাটি উদ্ধার করা হয়। শনিবার সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অদূরে কাশমির বাজার সংলগ্ন ডাঙ্গিখাল থেকে বোরকাটি উদ্ধার করা হয়।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, আসামির পরিহিত বোরকাটি এ হত্যা মামলার অন্যতম আলামত। বোরকাটি উদ্ধার হওয়ায় এটি মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখবে।
এর আগে হত্যা মামলায় গ্রেফতার নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানা যায়, বোরকা পরে পাঁচজন এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল। তার একটি হচ্ছে এই বোরকা।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম আরও বলেন, রাফি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত জোবায়ের আহমেদকে নিয়ে পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবালের নেতৃত্বে একটি দল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সোনাগাজী সরকারি কলেজ সংলগ্ন ডাঙ্গি খাল থেকে একটি বোরকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া তাকে নিয়ে বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালায় পিবিআই।
গ্রেফতার জোবায়ের আহমেদ আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার ৫নং আসামি। সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতলি গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে জোবায়ের।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকায় দায় স্বীকার করে এখন পর্যন্ত পাঁচজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মূলত পাঁচজন কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয় বলে স্বীকারোক্তি দেন জোবায়ের।
এর আগে ১৪ এপ্রিল রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম।
১৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে আবদুর রহিম ও শরীফ, ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় একই আদালতে হাফেজ আবদুল কাদের ও ১৯ এপ্রিল অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আলোচিত এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ওই মাদরাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিন।
টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সূত্রঃ জাগোনিউজ